মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ।। ১ আশ্বিন ১৪৩১ ।। ১৪ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
ঢাকার যানজট নিরসনের উপায় খুঁজতে বিশেষজ্ঞ ও ডিএমপিকে নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার রাষ্ট্র ব্যবস্থার কাঙ্খিত সংস্কারে আলেম সমাজকেও এগিয়ে আসতে হবে: জমিয়ত নেতৃবৃন্দ ধর্ম উপদেষ্টার সঙ্গে সিলেট আলেম প্রতিনিধির সাক্ষাৎ, আলোচনায় ইসলামিক ফাউন্ডেশন হুব্বে রাসূল ﷺ ফাউন্ডেশনের সংবর্ধনা, সিরাত কনফারেন্স ও প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত ‘আদর্শ নাগরিক গঠনে ভূমিকা রাখছে উলামায়ে কেরাম’ মহানবী (সা.) এর পুরো জীবনটাই আমাদের জন্য আদর্শ: ধর্ম উপদেষ্টা খেলাফত ব্যবস্থায় রাষ্ট্র ও সমাজ শীর্ষক সীরাতুন্নবী সা. সেমিনার অনুষ্ঠিত আসাদুজ্জামান নূর ও মাহবুব আলী কারাগারে তেজগাঁও কলেজের ইতিহাসে প্রথম সর্ববৃহৎ ইসলামী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত রাসুল (স.) এর আদর্শ পৃথিবীকে শত শত বছর নেতৃত্ব দিয়েছে: চবি অধ্যাপক

হেফাজতের ৭ দাবি আর ৩ কর্মসূচি ঘোষণা


নিউজ ডেস্ক

নিউজ ডেস্ক
শেয়ার
আজকের ছবি

গ্রেপ্তার সব নেতাকর্মীদের মুক্তি ও সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করার জন্য সাত দাবি ও তিন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। বুধবার (২৫ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এক সম্মেলনে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।

হেফাজতে ইসলামের নেতা মাওলানা মামুনুল হক, মাওলানা মুনির হুসাইন কাসেমিসহ হেফাজতের কারাবন্দি সব নেতাকর্মীদের মুক্তি, ২০১৩ সাল থেকে এখন পর্যন্ত হেফাজত নেতাকর্মীদের নামে দায়ের হওয়া সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং হেফাজতের ১৩ দফা দাবি বাস্তবায়নের দাবিতে এই ওলামা মাশায়েখ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরীর সভাপতিত্বে ওলামা মাশায়েখ সম্মেলনের ঘোষণা পত্র পাঠ করেন হেফাজতের মহাসচিব মাওলানা সাজিদুর রহমান।

ঘোষণা পত্রে ফিলিস্তিনে ইহুদীবাদী ইসরাইলের হামলা ও নির্বিচারে নিরীহ নারী-শিশু ও পুরুষদের হত্যার তীব্র নিন্দা জানানো হয়। সেই সঙ্গে ইসরাইলের সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিন্ন করার কথা বলা হয়। আগামী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে গ্রেপ্তার সব নেতাকর্মীদের মুক্তি দেওয়ার কথা বলা হয়।

হেফাজতের ৭ দাবি, ৩ কর্মসূচি ঘোষণা

আমিরের লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান আল্লামা আজিজুল হক ইসলামাবাদী। অন্যদের মধ্যে আরও বক্তব্য দেন সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি খলিল আহমদ কাসেমী, কেন্দ্রীয় নেতা  মাওলানা আব্দুল হামিদ (পীর সাহেব মধুপুর)  মাওলানা মাহফুজুল হক, মাওলানা সালাহ উদ্দিন (পীর সাহেব নানুপুর) মাওলানা উবায়দুল্লাহ ফারুক,  মাওলানা ইসমাইল নূরপুরী, মাওলানা আবদুর রব ইউসুফী, মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফিন্দী, মুফতি মুবারক উল্লাহ, মিজানুর রহমান সাঈদ, মাওলানা  জুনায়েদ আল হাবিব, মাওলানা  খুরশিদ আলম কাসেমি,   মাওলানা মুসতাক ইসমাইল আহমদ, মাওলানা নাজমুল হক হাক্কানি, মাওলানা মুহিউদ্দীন রাব্বানী, মাওলানা   সাব্বির আহমদ রশিদ, মাওলানা আনোয়ারুল করিম, মুফতি সাখাওয়াত হোসাইন রাজি, মাওলানা  আব্দুল কাইয়ুম সুবহানি,  মুফতি বশিরুল্লাহ, মাওলানা  জহুরুল ইসলাম,  মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী,  মাওলানা নাজমুল হোসাইন কাসেমী, মাওলানা  জালাল উদ্দিন আহমদ,  মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস কাসেমী, নায়েবে আমির মাওলানা আইনুল বাবুনগরী, মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী, মাওলানা এয়াকুব ওসমান, মীর ইদ্রিস প্রমুখ।

জাতীয় ওলামা মাশায়েখ সম্মেলন পরিচালনা করেন কেন্দ্রীয় সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা জুনায়েদ আলহাবিব, যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী, সহকারী মহাসচিব মাওলানা আতাউল্লাহ আমীন, কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক মুফতি কিফায়েতুল্লাহ আযহারি।

সম্মেলনে বক্তারা বলেন, আমাদের দাবিগুলো সরকার যত দ্রুত মেনে নিবে ততই তাদের জন্য মঙ্গল।  একইসঙ্গে কাদিয়ানিদের অপতৎপরতা বন্ধ, অমুসলিম ঘোষণা ও নিষিদ্ধ করতে হবে। তা না হলে হেফাজতের কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা।  নির্বাচনের আগে আলেমদের মুক্তি না দিলে নির্বাচনে তার জবাব দেওয়া হবে। আলেমদরেক ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।

৭ দাবিসমূহ হলো

১. ইহুদীবাদী অবৈধ সন্ত্রাসী রাষ্ট্র ইসরাইল ফিলিস্তিনি মুসলমানদের ওপর নির্বিচারে হামলা, ধারাবাহিক নিপীড়ন ও হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে নৃশংসতার চূড়ান্ত সীমা অতিক্রম করেছে। এই হানাদার দখলদার বাহিনী গাজায় হাজারও শিশু, নারী এবং বেসামরিক নাগরিককে হত্যা করে ক্রমাগত মানবাধিকার লঙ্ঘন করেই চলছে। তাই আজকের সম্মেলন নিরীহ ফিলিস্তিনিদের ওপর অবিলম্বে ইসরায়েলী হামলা বন্ধ ও ইসরায়েলের সঙ্গে সব পর্যায়ের কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করা, তাদের সব পণ্য বর্জন করা ও বাণিজ্যিকভাবে তাদের বয়কট করার জন্য বাংলাদেশসহ বিশ্বের সব রাষ্ট্রের প্রতি জোরালো আহ্বান জানাচ্ছে।

২. প্রায় তিন বছর ধরে মিথ্যা ও বানোয়াট মামলায় কারাগারে বন্দি আছেন হেফাজতের যুগ্মমহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক, অর্থ সম্পাদক মুফতি মুনীর হোসাইন কাসেমী, মুফতি ফখরুল ইসলাম ও মাওলানা রফিকুল ইসলাম মাদানীসহ আরও অনেক আলেম। মিথ্যা ও সাজানো মামলায় তাদেরকে এত দীর্ঘ সময় সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে সরকার বন্দি করে রেখেছে। আজকের সম্মেলন কারাবন্দি সব হেফাজত নেতাকর্মীদের আগামী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে মুক্তি দেয়ার জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছে।

৩. ২০১৩ সাল থেকে অদ্যাবধি হেফাজতে ইসলামের নেতা কর্মীদের নামে দায়ের করা সব মিথ্যা মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে।

৪.ইসলামবিরোধী সব অপশক্তি প্রতিরোধ, দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষা ও মজলুম মানবতার অধিকার প্রতিষ্ঠায় সর্বস্তরের আলেম ও তৌহিদী জনতাকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছে।

৫. আল্লাহ, রাসুল সা. ও ইসলাম ধর্মের অবমাননা এবং মুসলমানদের বিরুদ্ধে কুৎসা রোধে সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান রেখে জাতীয় সংসদে আইন পাস করতে হবে।

৬. সরকারিভাবে কাদিয়ানিদের অমুসলিম ঘোষণা এবং তাদের প্রচারণা ও ষড়যন্ত্রমূলক সব অপতৎপরতা বন্ধ করতে হবে।

৭. ঐতিহ্যবাহী দারুল উলুম দেওবন্দের ফতোয়া অনুযায়ী ভারতের মাওলানা সাআদ সাহেবের বিভিন্ন বয়ান শরীয়তের সঙ্গে সাংঘর্ষিক এবং চরম বিতর্কিত ও তার মনগড়া চিন্তার ওপর প্রতিষ্ঠিত। তাই বাংলাদেশে মাওলানা সাদ সাহেবের আগমন স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধ করতে হবে। শুরায়ী নেজামের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমার সার্বিক ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে ওলামায়ে কেরামকে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে সহযোগিতা করতে হবে। এক্ষেত্রে নতুন কোনো পরিস্থিতি তৈরি করতে দেওয়া যাবে না। সরকার এ বিষয়ে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে আজকের সম্মেলন জোর দাবি জানাচ্ছে।

যেসব কর্মসূচি দেওয়া হয়েছে

১. আগামী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে কারাবন্দী হেফাজতের সব নেতাকর্মীর মুক্তি ও হেফাজত নেতাকর্মীদের নামে দায়ের করা সব মিথ্যা মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে। অন্যথায় কঠোর কর্মসূচী ঘোষণা করা হবে।

২. আগামী ৩ মাসের মধ্যে সারা দেশে হেফাজতে ইসলামের জেলা, উপজেলা ও মহানগর কমিটি গঠন করা হবে।

৩. আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে চট্টগ্রাম, সিলেট, বি-বাড়িয়া, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুরে শানে রেসালাত সম্মেলন করা হবে। পর্যায়ক্রমে অন্য সকল জেলাতেও অনুষ্ঠিত হবে।

এনএ/


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ