বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫ ।। ২ বৈশাখ ১৪৩২ ।। ১৮ শাওয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :

ময়নাতদন্ত শেষে মাদরাসা ছাত্র জুলাই-শহীদ রাব্বির পুনঃদাফন

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে ঢাকায় পুলিশের গুলিতে নিহত মাদরাসা ছাত্র শহীদ রাব্বির (১২) মরদেহের ময়নাতদন্ত ও ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ শেষে ৯ মাস পর পুনঃদাফন করা হয়েছে।

সোমবার (১৪ এপ্রিল) পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার কলাগাছিয়া ইউনিয়নের বাঁশবাড়িয়ায় গ্রামের পারিবারিক গোরস্থানে পুনরায় দাফন করা হয়। 

এর আগে তার মরদেহ মিরপুরে দাফন করা হয়েছিল। আদালতের নির্দেশে ময়নাতদন্ত করা হয়। এ ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৩৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। 

শহীদ মো. রাব্বি মাতব্বর পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার কলাগাছিয়া ইউনিয়নের বাঁশবাড়িয়া গ্রামের জুয়েল মাতব্বরের ছেলে। সে ঢাকার মিরপুর এলাকার  নিজ বাসার কাছে  তালীমুল ইসলাম মাদরাসার হাফেজির ছাত্র ছিল। 

রাব্বির পিতা জুয়েল মাতব্বর জানান, ছেলে ১৯ জুলাই রাত আটটার দিকে নিজ মাদরাসার কাছাকাছি ঢাকা মডেল কলেজের সামনে ছাত্র জনতার মিছিল যাচ্ছিলো। এসময় রাব্বিসহ মাদরাসার কিছু ছাত্র সেখানে উপস্থিত হয়। এক পর্যায়ে  পুলিশ মিছিলকারীদরে উপর গুলি শুরু করে। এসময়  অন্য ছাত্রদের সাথে রাব্বিও  দৌড়ে পালিয়ে গিয়ে রাস্তার পাশে একটি ভ্যান গাড়ির নিচে আশ্রয় নেয়।  এসময়  পুলিশের একটি গুলি রাব্বির বুকে বিদ্ধ হয় এবং মাটিতে লুটিয়ে পড়ে । পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে রাব্বির লাশ  ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্ঠা করে। কিন্তু জনতার প্রতিবাদে সে চেষ্টা ব্যর্থ হয়। স্থানীয় জনগণ রাব্বির মৃতদেহ স্থানীয় আজমল হাসপাতালে  নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।

জুয়েল মাতব্বর আরও জানান, ওই দিন রাতেই তিনি তার ছেলের লাশ নিজ বাড়ি পটুয়াখালীর গলাচিপায় নিয়ে আসতে চাইলে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা বাধা দেয় এবং উল্টো তাকে হুমকি দেয়। ছেলে কেন মিছিলে গেল এ জন্য তার বিরুদ্ধে মামলা হবে বলে ভয়ভীতি দেখায়। পরে বাধ্য হয়ে তিনি তার ছেলের লাশ ঢাকায় মিরপুর গোরস্থানে দাফন করেন।

পাঁচ আগস্টের পটপরিবর্তনের পরে এঘটনায় মামলার পাশাপশি শহীদ রাব্বির মৃতদেহ নিজ জেলা পটুয়াখালীতে নেয়ার জন্য জুয়েল মাতব্বর আদালতে আবেদন করেন। 

আদালতের নির্দেশে নির্বাহী ম্যাজিষ্টেটের উপস্থিতিতে গত ১০ জুলাই শহীদ রাব্বির মৃতদেহ মিরপুর গোরস্তানের কবর থেকে উঠিয়ে শহীদ  সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হয়।

রোববার (১৩ এপ্রিল) হাসপাতালের হিমাগার থেকে রাব্বির মৃতদেহ মর্গে পোর্স্টমর্টেমসহ ডিএনএর নমুনা সংগ্রহ করা হয় এবং রাতে শহীদ রাব্বির মৃতদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। রাতেই রাব্বির মরদেহ নিয়ে স্বজনরা পটুয়াখালীর নিজ বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন।  

সোমবার ভোরে রাব্বির মরদেহ তার নিজবাড়ি পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার কলাগাছিয়া ইউনিয়নের বাঁশবাড়িয়ার আট নম্বর ওয়ার্ডের চৌরাস্তা এলাকায় এসে পৌঁছে। বেলা সাড়ে ১১ টায় বাড়ির সামনে মাঠে  নামাজে জানাজা শেষে পারিবারিক গোরস্তানে শহীদ রাব্বিকে দাফন সম্পন্ন হয়।

এমএইচ/


সম্পর্কিত খবর



সর্বশেষ সংবাদ