আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় আব্দুল হালিমকে (৭২) নামের এক বীর মুক্তিযোদ্ধাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। হত্যা শেষে ঘর থাকা ২০ লাখ টাকা ও স্বর্ণালংকার লুটের অভিযোগ উঠেছে।
গত মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) রাত ১১টা থেকে ২টার মধ্যে এনায়েতনগর ইউনিয়নের ধর্মগঞ্জ মাওলা বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হালিম মাওলাবাজার এলাকার মৃত. মহব্বত আলীর ছেলে। আজ বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ৭টায় পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহরের ভিক্টোরিয়া হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেছে।
নিহতের ছেলে হাফেজ মো. মাসুদ বলেন, পরিবারের লোকজন মঙ্গলবার আত্মীয়র বাড়িতে বেড়াতে যায়। রাতে তার বাবা নিজ রুমে ও সে তার রুমে ঘুমিয়ে ছিলেন। রাত প্রায় ১১টার সময় ঘুমন্ত অবস্থায় ৩ জন লোক তার হাত পা ও চোখ বেধে মারধর করে। তার বাবার রুমে কয়জন ছিলো তার জানা নেই। তবে দুর্বৃত্তরা রাত ২টার দিকে যাওয়ার সময় জমি বিক্রির ২০ লাখ টাকা ও স্বর্ণালংকার নিয়ে যায়। দুবৃর্ত্তরা কিভাবে রুমে প্রবেশ করেছে তা বলতে পারেন না মাসুদ।
ফতুল্লা মডেল থানার এসআই হুমায়ুন কবির জানান, ময়নাতদন্ত রিপোর্টে বুঝা যাবে মৃত্যুর কারণ। তবে যে ঘরে ঘটনা ঘটেছে সে ঘরে বাহির থেকে ভিতরে প্রবেশ করার কোন আলামত পাওয়া যায়নি। ঘরটিতে চারটি সিসিটিভি ক্যামেরা রয়েছে। তবে ক্যামেরার মেশিন থেকে হার্ড ডিক্স খুলে নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা।
নিহতের ছোট মেয়ে নুরুননেছা বলেন, রাত আড়াইটার দিকে তাদের ভাড়াটিয়ার মেয়ে তাকে ফোন করে জানায় যে বাসায় ডাকাতি হয়েছে। তার ভাইকে হাত-পা বেধে, মারধর করে টাকা-স্বর্ণালংকার নিয়ে গেছে। এবং তার বাবা কোন কথা বলছেনা। সংবাদ পাওয়ার পরপর সে ধর্মগঞ্জস্থ বাসায় ছুটে আসে।
পাশের ফ্ল্যাটের ভাড়াটিয়া মাহিনুর বেগম জানায়, তার স্বামী কাঁচামাল ব্যবসায়ী। প্রতিরাতে দুইটার দিকে সে কাঁচামাল সংগ্রহে বাসা থেকে বের হয়। রাত দুইটার দিকে তার ঘুম ভাঙলে সে বাড়িওয়ালার ঘরের দরজা ঠাস ঠাস শব্দ শুনতে পান এবং গোঙানির শব্দ শুনতে পেয়ে তার স্বামীকে ঘুম থেকে ডেকে তুলেন। তখন সে দরজা খুলে দেখতে পান বাড়িওয়ালার ফ্ল্যাটের প্রধান ফটক খোলা। তিনি ভিতরে প্রবেশ করে দেখতে পান বাইরে রুমের ভিতর প্রবেশ করার দুটি দরজা বাইরে থেকে আটকানো। তখন সে বাইরের সিটকিনি খুলে দেখতে পান গামছা দিয়ে বাড়িওয়ালার ছেলে হাফেজ মাসুদের হাত-পা বাঁধা। তখন সে তার হাত-পা মুখের বাঁধন খুলে দেন। পাশের রুমে গিয়ে দেখতে পান বিছানার ওপর পরে রয়েছে নিহতের মরদেহ।
ফতুল্লা মডেল থানার ওসি শেখ রিজাউল হক দিপু বলেন, নিহতের এক ছেলে দুই মেয়ে। মেয়েরা স্বামীর বাড়ি থাকেন। ছেলের পরিবারের সাথে মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হালিম নিজ বাড়িতে থাকেন। ঘটনার সময় ছেলে ও আব্দুল হালিম ছাড়া কেউ বাড়িতে ছিলেন না। ঘটনাটি রহস্যজনক। গুরুত্ব সহকারে তদন্ত চলছে। পরে বিস্তারিত জানানো হবে।
-টিএ