আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: হিজাব-নিকাব পরিধানের পূর্নাঙ্গ স্বাধীনতা নিশ্চিত করা এবং এ সংক্রান্ত নীতিমালা বিশ্ববিদ্যালয় বিধিতে ধারা যুক্ত করাসহ পাঁচদফা দাবিতে মানববন্ধন করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) একদল শিক্ষার্থী।
সোমবার (২৬ ডিসেম্বর) সকাল ১১ টায় দিকে ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের নারী শিক্ষার্থীবৃন্দের’ ব্যানারে অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে তারা মানববন্ধন করেন। এতে বিভিন্ন বিভাগের নারী শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন।
মানববন্ধনে তারা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা ও ক্লাসে বিভিন্ন সময় তারা হিজাব ও নিকাব পরার কারণে শিক্ষক, সহপাঠীদের হেনস্তার শিকার হন। এমনকি হিজাব না খোলায় ভাইভাতে অনুপস্থিত দেখানো হয়েছে অনেককে। এটি ধর্মীয় স্বাধীনতার আঘাত। এর মাধ্যমে ধর্মীয় স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন করা হয়েছে। বাংলাদেশ একটি ধর্ম নিরপেক্ষ দেশ। সেখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্মের স্বাধীনতা লঙ্ঘন করা হচ্ছে।
তারা আরও বলেন, এটি হিজাব বিদ্বেষী সিদ্ধান্ত ছাড়া কিছু নয়। এর কারণে মুসলিম নারীরা ঝরে পড়বে। কারণ, একজন প্রকৃত মুসলিম নারীরা কখনো তাদের চেহারা কাউকে দেখায় না। তাই আমরা অবিলম্বে এ সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি জানাচ্ছি।
প্রসঙ্গত, গত ১১ ডিসেম্বর বাংলা বিভাগের এক নোটিশে ‘বিভাগের সকল প্রেজেন্টেশন, টিউটোরিয়াল, মিডটার্ম পরীক্ষা, চূড়ান্ত পরীক্ষা এবং ভাইভাতে কানসহ মুখমণ্ডল দৃশ্যমান রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়। না হলে তাদের বিরুদ্ধে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে উল্লেখ করা হয়। এটি বাতিলের দাবিতে তারা মানববন্ধন করেছেন।
> বাংলা বিভাগ কর্তৃক পরীক্ষা চলাকালীন কানসহ মুখমণ্ডল দৃশ্যমান রাখা সংক্রান্ত নোটিশ বাতিল করতে হবে।
> পরিচয় শনাক্তকরণে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। অন্যথায় পরীক্ষার পূর্বেই নারী কর্মচারী কিংবা নারী শিক্ষিকার মাধ্যমে আলাদা রুমে হিজাব ও নিকাব পরিহিতাদের পরিচয় শনাক্ত করার ব্যবস্থা চালু করতে হবে।
> দ্রুততম সময়ে সকল অনুষদের সকল বিভাগে হিজাব-নিকাব পরিধানকারী শিক্ষার্থীদেরকে হেনস্থা করা বন্ধে নোটিশ প্রদান করতে হবে।
> বিভিন্ন সময়ে ক্লাসরুমে, ভাইভা বোর্ডে অথবা পরীক্ষার হলে নিকাব খুলতে বাধ্য করা অথবা কটূক্তির মাধ্যমে নারী শিক্ষার্থীদের শ্লীলতাহানি করার মতো ঘটনাগুলো তদন্তপূর্বক বিচারের ব্যবস্থা করতে হবে।
> হিজাব বা নিকাব পরিধানে পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় বিধিতে ধারা যুক্ত করতে হবে এবং ইতোমধ্যে এ সংক্রান্ত ঘটনায় ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের পুনরায় ফিরিয়ে এনে অথবা ভিন্ন উপায়ে ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করতে হবে।
মানববন্ধন থেকে জানানো হয়, পাঁচ দফা দাবি সম্বলিত একটি স্মারকলিপি ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বরাবর প্রদান করা হবে।