আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের ঘোষণা দেন। সেই সময়ের রপর থেকেই এখন পর্যন্ত টানা ১৬৩ দিনের মতো চলছে দুই দেশের সংঘাত। যার ফলে দুই দেশের বহু হতাহতের খবর পাওয়া যাচ্ছে। তবে যুদ্ধে ইউক্রেনের পক্ষ হয়ে রাশিয়ার বিপক্ষে লড়ছেন দেশটি মুসলিমরা।
৩০ বছর বয়সী খাদজালি নামে একজনকে খারকিভে নিজ শহরে বিধ্বস্ত স্থাপনার মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। যেখানে শহরটি ইউক্রেন রাশিয়া সীমান্তের ৫০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।
ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা শুরুর পর থেকে ছয়জন স্বেচ্ছাসেবক নিয়ে খাদজালি মানবিক কার্যক্রম চালু করছেন। যা যুদ্ধাক্রান্ত বাসিন্দাদের মানবিক সাহায্য প্রদান করেছেন। এছাড়া তীব্র হামলায় লণ্ডভণ্ড হওয়া স্থানগুলো থেকে বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে পৌঁছাতে সাহায্য করেছেন তারা।
খাদজালি একজন উষ্ণ মনের মানুষ। মাথায় টুপি ও গায়ে হুডির সাথে কার্গো প্যান্ট পরিধান করেন তিনি। মধ্য মে মাস থেকে দিনের কার্যক্রম থেকে বিরতি নেন এই যুবক।
ইতোমধ্যে রুশ বাহিনী তার শহর থেকে পিছু হটেছে। তবে অতিরিক্ত গোলাবর্ষণে উত্তরাঞ্চলের মফস্বল এলাকা ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে। ধ্বংসপ্রাপ্ত এলাকার একটি খেলার মাঠ রঙিন সরঞ্জামসহ পুরোপুরি অক্ষত রয়েছে।
ইউক্রেনের দ্বিতীয় বড় শহর খারকিভে খাদজালির জন্ম হয়। তার মা একজন ইউক্রেনীয় ও বাবা একজন সিরিয়ান নাগরিক। ২০১১ সালে যুদ্ধের পূর্বে নিয়মিত সিরিয়ায় যাতায়াত করতেন তিনি। খাদজালি বলেন, তার দুটি স্বদেশেই আক্রমণ চালায় রাশিয়া।
২০১৫ সালে খাদজালি একজন ধর্মগুরু হোন। তিনি একজন ইমাম যে কিনা সামরিক উপায়ে আধ্যাত্মিক পরিষেবা প্রদান করেন। ইসলামিক ভাইদের দ্বারা নতুন ভূমিকায় কাজ করতে উদ্বুদ্ধ হোন তিনি। নিজ দেশের জন্য কিভাবে কাজ করা যায় এই নিয়ে ভাবতেন খাদজালি।
উপলদ্ধি করেন ডনবাসে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ছোট মুসলিম বাহিনীদের সাহায্য করাই তার জন্য উপযুক্ত। তিনি আরও বলেন, যুদ্ধে নিজ দেশের সেনাবাহিনীর হয়ে কাজ করার চেয়ে ভালো আর কি হতে পারে।
খাদজালি বর্তমানে আরও উচ্চ পর্যায়ে কাজ করছেন। তিনি প্রায়শই যুদ্ধের বিপদসংকুল সম্মুখসারিতে যোদ্ধাদের সাহায্য করেন।
খাদজালির মতো ইউক্রেনের অধিকাংশ মুসলিমই রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে যোগ দিয়েছেন। তারা নিজ দেশকে বাঁচাতে নিজের জীবন বাজি রেখে লড়াই করছেন। রুশদের বিরুদ্ধে মুসলিমদের ওপর অন্যায় অত্যাচারের ইতিহাস বেশ পুরনো।
-এসআর