আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: লোদ শহরে ইসরায়েলি পৌরসভার অর্থনৈতিক শাখা সম্প্রতি ফিলিস্তিনিদের দাহমাশ মসজিদের একটি অংশ দখল করেছে। এটা এ শহরের পাঁচটি ঐতিহাসিক মসজিদের মধ্যে একটি। সম্প্রতি মসজিদটিকে ইহুদিকরণ ও বাজেয়াপ্ত করার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। শুক্রবার আরব-৪৮ ডটকম তাদের প্রতিবেদনে এমন তথ্য প্রকাশ করেছে।
১৯৪৮ সালের ১৩ জুলাই ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জর্ডানি সেনাবাহিনীর ইউনিফর্ম পরে এ লোদ শহরে হামলা চালায়। ওই সময় ইসরায়েলি সামরিক অভিযানে দাহমাশ মসজিদের ভিতরে লুকিয়ে থাকা ১৭৬ জনসহ মোট ৪২৬ ফিলিস্তিনি নিহত হন। এ হত্যাকাণ্ডকে পরবর্তীতে ‘দাহমাশ মসজিদ হত্যাকাণ্ড’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
২০০২ সাল পর্যন্ত এ মসজিদটি অব্যবহৃত ছিল। এরপর লোদ শহরের ফিলিস্তিনি আরব নাগরিকরা এ মসজিদটির কিছু অংশ সংস্কার করে এবং নামাজের জন্য পুনরায় এটাকে খুলে দেয়। এ শহরের পাঁচটি মসজিদের মধ্যে এটা ছিল একটি। ওই শহরাঞ্চলে প্রায় ৩৫ হাজার ফিলিস্তিনি রয়েছেন।
২০০২ সালের পর মুসলিম আরবরা মসজিদের কিছু অংশ কেনার চেষ্টা করে। ওই অংশটা ইসরায়েলিরা কসাইখানা হিসেবে ব্যবহার করছিল। ফিলিস্তিনি আরবরা চাচ্ছিল তাদের বর্তমান প্রার্থনা কক্ষের সাথে বাড়তি একটা অংশ যোগ করতে। ইসরায়েলি কসাইরা তাদের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছিল এবং আরবদের প্রস্তাবিত মূল্যের তুলনায় অনেক কম দামে লোদ শহরের পৌরসভার কাছে ওই অংশটি বিক্রি করেছিল।
ইসরায়েলি পৌরসভা পরে ওই অংশ সংস্কার করার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু, আরবরা তাদের ওই কাজ বন্ধ করার জন্য প্রতিবাদ করেছিল।
আরব-৪৮ ডটকমকে লোদ পৌরসভার একজন আরব সদস্য মোহাম্মদ শ্রেকি বলেছেন, ‘ ওই প্রতিবাদের সময় অসংখ্য যুবক জড়ো হয়েছিল এবং জনগণের চাপে পৌরসভা তার কাজ বন্ধ করে। এরপর তারা এলাকাটি খালি করে।’
তিনি বলেন, এখানকার আরব নাগরিকরা লোদ পৌরসভার আরব সদস্য ও অর্থনৈতিক শাখার পরিচালকের সাথে দেখা করেছেন এবং পৌরসভা প্রকল্পের জন্য শহরে অন্য জায়গা খুঁজে পাওয়ার বিনিময়ে আরবদের কাছে এলাকাটি বিক্রি করতে সম্মত করেছেন।
তবে আরব মুসলিমদের ওপর ইসরায়েলি চাপ আছে। এ কারণে আরবদের ওপর ইসরায়েলি এ পৌরসভা বিভিন্ন বিধি-নিষেধ আরোপ করেছে। এরপরেও আরবরা ওই শহরে অবস্থানের জন্য জোর দিয়েছিল।
বর্তমানে ওই শহরে আরবদের সংখ্যা বাড়ছে। এ বিষয়ে মোহাম্মদ শ্রেকি বলেন, শহরে মুসলিমদের সংখ্যা বাড়ার কারণে এখানকার পৌরসভা চাচ্ছে মসজিদটি সম্প্রসারণ হোক। যাতে করে অসংখ্য মুসল্লি এ মসজিদে নামাজ পড়তে পারে।
এরপরেও এ মসজিদটিকে নিয়ে বিভিন্ন ষড়যন্ত্র চলছে এবং এটাকে ইহুদিকরণ ও বাজেয়াপ্ত করার শঙ্কা আছে।
সূত্র : মিডল ইস্ট মনিটর
এনটি