আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: আফগানিস্তানে ভূমিকম্পে প্রায় ২ হাজার ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়েছে। এ ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত মারা গেছে ১ হাজারের বেশি মানুষ এবং আহত হয়েছেন কমপক্ষে দেড় হাজার। প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের অভাব ধ্বংসস্তুপ থেকে জীবিতদের উদ্ধারকাজ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
বুধবার (২২ জুন) জাতিসংঘের এক দূতের বরাত দিয়ে বার্তাসংস্থা এএফপি এ তথ্য জানিয়েছে।
আফগানিস্তানের বাড়িগুলো মাটির ইট মাটি দিয়ে গাঁথা। সেগুলো উইয়ের ঢিপির মতো ভেঙে ধুলো হয়ে গেছে। ছাদ এসে মাটিতে মিশেছে। এক একটি গ্রামে সেই ধ্বংসস্তূপের পাশে হতভম্ভ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে মানুষকে।
জাতিসংঘের মানবিক সহযোগিতা বিষয়ক সমন্বয়ক রমিজ আলাকবারভ বলেন, 'আমাদের ধারণা, সেখানে প্রায় ২ হাজার ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়েছে। বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা অনেক বেশি হবে। একটি আফগান পরিবারের সদস্য সংখ্যা গড়ে ৭-৮ জন।
আলাকবারভ বলেন, আফগানিস্তানের ডি-ফ্যাক্টো কর্তৃপক্ষ পাকতিকা প্রদেশে ৫০টির বেশি অ্যাম্বুলেন্স ও ৪-৫টি হেলিকপ্টার মোতায়েন করেছে। সেই সঙ্গে নিহতদের পরিবারকে নগদ অর্থ সহায়তা দিয়েছে। তবে প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের অভাবে ধ্বংসস্তূপে উদ্ধার কার্যক্রম চালাতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।
তিনি বলেন, ধ্বংসস্তূপের ভেতরে উদ্ধার কার্যক্রম চালানোর মতো প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম আমাদের নেই। এর জন্য আমাদের এখানকার "ডি ফ্যাক্টো কর্তৃপক্ষের" প্রচেষ্টার ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে, যা এই ক্ষেত্রে একটি সীমাবদ্ধতা তৈরি করছে।
এদিকে বিবিসি জানিয়েছে, ভূমিকম্পে গায়ানের একটি গ্রাম পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। পাকতিকা প্রদেশের এক সাংবাদিক জানিয়েছেন, যে রাস্তায়ই আপনি যাবেন, শুনতে পাবেন কান্নার শব্দ, স্বজনরা তার প্রিয়জনের জন্য আহাজারি করছেন।
আফগানিস্তান, পাকিস্তান আর ভারতের ৫০০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে এই ভূকম্পন অনুভূত হয়েছে। পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদে রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৬.১। তবে পাকিস্তানে কোনও ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।
গত কয়েক দশক ধরে বার বার প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে আফগানিস্তান। গত ১০ বছরে আফগানিস্তানে ভূমিকম্পে সাত হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। জাতিসংঘ সম্প্রতি একটি রিপোর্টে জানায়, প্রতি বছর আফগানিস্তানে ভূমিকম্পে ৫৬০ জনের মৃত্যু হয়।
তালিবান ক্ষমতা দখলের পর থেকে চরম আর্থিক সঙ্কটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে আফগানিস্তান। বেশ কয়েকটি দেশ আফগানিস্তানের সম্পত্তির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। আফগানিস্তানের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এই পরিস্থিতি ভয়াবহ ভূমিকম্প মোকাবিলা করা আফগানিস্তান সরকারের জন্য কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। এরফলে দেশটির অর্থনৈতিক পরিকাঠামো আরও ভেঙে পড়বে।
-এটি