নুরুদ্দীন তাসলিম।।
ভারি বৃষ্টি ও ভারতের মেঘালয়-আসাম থেকে নেমে আসা উজানের ঢলে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়েছেন সুনামগঞ্জবাসী। মাত্র ৪৮ ঘণ্টার ব্যবধানে ভারী বর্ষণ ও উজানের ঢলে সদর, ছাতক, দোয়ারাবাজার, তাহিরপুর, বিশ্বম্ভপুর হাজার হাজার বসত ঘরে বানের পানি ডুকে পড়েছে।
ভয়াবহ এই দুযোর্গ থেকে রক্ষা পেতে কওমি মাদরাসাগুলোতে দোয়ার আবেদন জানিয়েছেন সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার এক মা। তিনি তার ছেলেকে বলেছেন, ‘বাবা! এই বিপদ থেকে রক্ষা পেতে কওমি মাদরাসাগুলোতে দোয়া করতে বলো। আল্লাহ তায়ালা হয়তো আমাদের রক্ষা করবেন।’
কওমি মাদরাসাগুলোতে দোয়া চাওয়া এই মায়ের সন্তান মাওলানা শাহরিয়ার হাসান আওয়ার ইসলামকে জানিয়েছেন, সবার কাছে আবেদন থাকবে তারা যেন নিজ নিজ জায়গাগুলো থেকে দোয়া করেন। এবং আপনারা সম্মিলিত দোয়ার ব্যবস্থা করুন।’
এর আগে সিলেটের বন্যাদুর্গতদের সহযোগিতায় এগিয়ে এসেছিলো ‘আসসুন্নাহ ফাউন্ডেশন, হাফেজ্জী সেবা ফাউন্ডেশন, পিপলস ইমপ্রুভমেন্ট সোসাইটি অফ বাংলাদেশ (পিসব)-সহ ( প্রতিবেদনে নাম উল্লেখ না করা আরো অনেক) দেশের আলেমদের একাধিক স্বোচ্ছাসেবী সংগঠন।
তখন সিলেটের বন্যা-কবলিত এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত মাদরাসাগুলোর পাশে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছিলেন ময়মনসিংহের চরখরিচার জামিয়া মাহমুদিয়া আরাবিয়ার মুহতামিম মাওলানা মাসরুর হাসান।
তিনি জানিয়েছিলেন, ‘সিলেটের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ মাদরাসার আসাতিযায়ে কেরাম ও ছাত্রদের পাশে থাকার একটা ছোট্ট প্রয়াস’।
‘আপনারা চাইলে আমাদের জামিয়া মাহমুদিয়া আরাবিয়া চরখরিচা মোমেনশাহীতে মেহমান হয়ে দরসের কাজ চালিয়ে যেতে পারেন।ইনশাআল্লাহ! আমরা সর্বাত্মক সহযোগিতা করব’।
এদিকে (১৭ জুন) শুক্রবার সকাল পর্যন্ত খবরে জানা গেছে, পুরো সুনামগঞ্জ শহরের ৯০ ভাগ বসত ঘরে বানের পানি ডুকে পড়েছে। ছাতক শহরের শতভাগ এলাকা বন্যার পানিতে নিমজ্জিত হয়ে আছে। সুনামগঞ্জ ও ছাতক পৌর এলাকার প্রধান সড়কে হাঁটু পানি থেকে কোমর পানিতে ডুবে আছে।। শহরের প্রধান সড়ক গুলোতে অনায়াসে নৌকা চলাচল করছে। ৬৮ কিলোমিটার দীর্ঘ সিলেট সুনামগঞ্জ সড়কে ৫ স্থানে কোমর পানিতে ডুবে থাকায় সুনামগঞ্জের সংগে সারা দেশের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে পড়েছে।
জেলা সদর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে ছাতক,তাহিরপুর দোয়ারাবাজার, বিশ্বম্ভপুর উপজেলা। এসব এলাকার প্রধান সড়কে এখন সাতার পানিতে নিমজ্জিত। নৌকা ছাড়া এসব উপজেলায় যাওয়ার বিকল্প কোন বাহন নেই। সুনামগঞ্জ শহরের তেঘরিয়া,সাহেব বাড়িরঘাট, উকিলপাড়া, নুতনপাড়া,শান্তিবাগ হাছননগর, পাঠানবাড়ি জেলরোড, মধ্যবাজার,পশ্চিমবাজার, বড়পাড়া, আরপিনগর,মল্লিকপুর ওয়েজখালী, হাজীপাড়া, নবীনগর সহ ৯ টি ওয়ার্ডের পাঁচশতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বানের পানি ডুকে পড়েছে। এতে বিপাকে পড়েছেন হাজার হাজার ব্যবসায়ী।
এনটি