।।কাউসার লাবীব।।
দিন দিন মানুষের মাঝে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে নগদ ইসলামিক। দেশের প্রথম সুদমুক্ত এই মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবস্থার কারণে যেভাবে ধর্মপ্রাণ মানুষ নগদকে আপন করে নিচ্ছেন, পাশাপাশি দেশের সর্বনিম্ন ক্যাশ আউট চার্জ, অ্যাপ থেকে ফ্রি সেন্ড মানি সিস্টেম, বিভিন্ন ইসলামি সেবা সংস্থাকে ইচ্ছে মতো দান করার সুযোগ, সহজ ও নিরাপদ লেনদেন ব্যবস্থার কারণে সবধরণের মানুষ নগদে টাকা আদান-প্রদানে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছেন। এসব কারণে নগদ উদ্যোক্তারাও এখন ব্যবসা করছেন মন খুলে। যেমন আমাদের সুমন ভাই। ঢাকার একটি প্রাচীন ইসলামী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাশে তার দোকান।
জানতে চেয়েছিলাম নগদ উদ্যোক্তা হয়ে কাজ করছেন কতদিন ধরে? ‘আমি আগে অন্যদুটি ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। কিন্তু ওইগুলোতে তেমন প্রফিট না পাওয়ায় শুরু করি নগদ উদ্যোক্তা জীবন। দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে আমি নগদ উদ্যোক্তা। প্রথম প্রথম পরিচিত হতে কিছুটা সময় লেগেছিল। কিন্তু এখন নগদ অন্য সবাইকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে। ‘নগদ’ একটি লাভজনক জায়গা বলা যায়। উদ্যোক্তাদের প্রথম পছন্দের তালিকায়ও উঠে আসছে নগদ। আমার পাশের উদ্যোক্তাদের সঙ্গে কথা বলে তেমনটিই বুঝতে পারছি’- বলেন, নগদ উদ্যোক্তা সুমন ভাই।
নিজের অভিজ্ঞতার থেকে তিনি জানান, আমাদের দেশের সিংহভাগ মানুষ হল ইসলাম প্রিয়। সে জায়গা থেকে দেশের প্রথম ডিজিটাল সুদ মুক্ত লেনদেন সিস্টেম নিয়ে এসেছে নগদ। ধর্মপ্রাণ মানুষের চাহিদা অনুযায়ী এই সেবাটি নিয়ে আসায় নগদ এর প্রতি আমার আমার কাস্টমাররা প্রায় সময়ই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে।
সুমন ভাইয়ের ভাষায়, ‘প্রথমে আমি একজন মুসলমান হিসাবে আমার কাছে ‘নগদ ইসলামিক’ সেবাটি খুবই ভালো লেগেছে। তাছাড়া আমার দোকানটি যেহেতু রাজধানীর ঐতিহ্যবাহী কওমি প্রতিষ্ঠান চৌধুরীপাড়া মাদরাসার পাশে, তাই আমি দেখতে পাই মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষকরাও নগদের এ সেবা পেয়ে অনেক খুশি। নগদ ইসলামিক লেনদেন সিস্টেম ব্যবহার করে ছাত্ররা মাদরাসার মাসিক খরচ ইত্যাদি আদান প্রদান করছেন। তাছাড়া এখানের শিক্ষকরাও আস্থার সঙ্গে তাদের পরিবারের কাছে নগদে টাকা পাঠাতে পারছেন। সুদমুক্ত এই ডিজিটাল লেনদেন সেবাটি ছিল তাদের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা।
‘নগদের প্রফিট থেকে ঢাকায় পরিবার নিয়ে থাকা-খাওয়া করেও আলহামদুলিল্লাহ ইতোমধ্যে অনেক টাকা জমিয়েছি। আমার অনেক দিনের স্বপ্ন আমার গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়ায় মনের মাধুরী মিশিয়ে একটি বাড়ি তৈরি করব। অল্প কিছুদিনের ব্যবধানে আশা করছি সেই স্বপ্নের বাড়িটি নগদের প্রফিট দিয়ে নির্মিত হবে। ‘নগদ’-এর প্রতি কৃতজ্ঞতা আমার মত উদ্যোক্তাদেরকে নিরাপদ ও লাভজনক একটি সিস্টেমের সঙ্গে পরিচিত করে দেয়ার জন্য’- আবেগ আপ্লুত হয়ে বলেন সুমন।
যারা নতুন করে নগদ উদ্যোক্তা হয়ে কাজ করতে চায় তাদের উদ্দেশ্যে নিজের অভিজ্ঞতা থেকে তিনি বলেন, নগদ হলো বাংলাদেশ ডাক বিভাগের ডিজিটাল লেনদেন পদ্ধতি। সরকার যেহেতু এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট আছে তাই অবশ্যই এটি অন্যান্য যেকোনো মোবাইল ব্যাংকিং থেকে নিরাপদ। তাই উদ্যোক্তাদের জন্য এটি একটি মসৃণ এবং নিরাপদ মাধ্যম। নগদ অন্যান্য বেশকিছু মোবাইল ব্যাংকিং থেকে প্রফিট বেশি দেয়। গ্রাহকরাও নগদে লেনদেন করতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। কেননা নগদে খরচ কম আবার নগদ ইসলামিক সুদ মুক্ত লেনদেন ব্যবস্থা নিয়ে এসেছে। সবমিলিয়ে আমি আশা করছি নগদ কয়েক বছরের ব্যবধানে দেশের শতভাগ মানুষকে তাদের আওতায় নিয়ে আসতে পারবে।
তার মতে, ধর্মপ্রাণ মানুষ দিন দিন নগদে ঝুঁকছে এর কারণ সুদ মুক্ত লেনদেন ব্যবস্থা। আরো একটি বড় কারণ হলো নগদ অল্প লাভ করে মানুষকে বেশি সেবা দিয়ে থাকে। নগদ-এর ক্যাশ আউট চার্জ সবচেয়ে কম। সেন্ড মানি (অ্যাপ থেকে) একেবারেই ফ্রি। নগদ অ্যাপ থেকে বিভিন্ন ইসলামী সেবা সংস্থাকে দান (ডোনেশন) করা যাচ্ছে মনের ইচ্ছে মত। আর অসহায়কে গোপনে দান করতে পারাটা কিন্তু হৃদয়ের একটা প্রশান্তির বিষয়। হৃদয়ে যখন প্রশান্তি চলে আসে তখন জীবনকে অনেকটা স্বচ্ছন্দ মনে হয়। তাছাড়া নগদ লেনদেন পুরোপুরি নিরাপদ। এতগুলো সুবিধা রেখে মানুষ তো আর অন্য কোথাও যাবে না। এটাই স্বাভাবিক।