আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: পাকিস্তান তেহেরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ নেতা জাহাঙ্গীর খান তারিন তার দলের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোটে সমর্থনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
গতকাল রোববার (১৩ মার্চ) দ্য নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পিটিআইয়ের প্রধান নেতা ও প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব জমা দিয়েছে বিরোধী দলগুলো।
খোদ ইমরানের দল থেকে সংসদ সদস্যদের একাংশ তার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে বলে দাবি করেছেন প্রধান বিরোধী দল পাকিস্তান মুসলিম লিগ-এন (পিএমএল-এন) নেতা রানা ইহসান আফজাল খান।
অনাস্থা ভোটের পক্ষে রয়েছেন জাহাঙ্গীর তারিনও। তিনি একসময় ইমরানের প্রধান রাজনৈতিক সহযোগী ছিলেন। এর আগে তিনি পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী উসমান বাজদারের বিরুদ্ধেও অনাস্থার পদক্ষেপ নিয়েছিলেন।
দ্য নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যদি পিএমএল-কিউ সমর্থন দেয় তাহলে পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে চৌধুরী পারভেজ ইলাহিকে পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চান ইমরান বিরোধীরা। এছাড়া মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে পিটিআইয়ের আরেক মন্ত্রী আব্দুল আলিমের নামও শোনা যাচ্ছে। তবে তারিন গ্রুপ আলিমকে সমর্থন করছে না।
ইমরান সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থার বিষয় সমর্থন করার খবর প্রথমে নিশ্চিত করেছিলেন রাজা রিয়াজ নামে তারিন গ্রুপের এক সদস্য। পরে তিনি জানান, অনাস্থা পক্ষে ভোট দেওয়া হবে কি না সে ব্যাপারে এখনও কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। জাহাঙ্গীর তারিন দেশে ফিরলে তখন এ বিষয়ে স্পষ্ট জানা যাবে। এছাড়া পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী পারভেজ ইলাহি নাকি আব্দুল আলিম হবেন সে বিষয়েও চূড়ান্ত চুক্তি হয়নি।
ইমরান খানের ক্ষমতার বৈধ মেয়াদ আছে প্রায় ১৭ মাস। ক্ষমতায় আসার পর তারিনের সঙ্গে ইমরানের ঘনিষ্ঠতা কমতে থাকে। সরকারের প্রায় তিন বছরের মাথায় তিনি দলের ভেতর নিজ অনুসারীদের নিয়ে আলাদা একটা দল গঠন করেন। সেই দলটির চাপেই এখন পড়েছেন ইমরান।
এদিকে ইমরানকে সরানোর ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী বিরোধীদলগুলো দাবি করেছে, পিটিআইয়ের ২৮ আইনপ্রণেতা এবং সরকারি জোটের আরও কয়েকজন নেতার সঙ্গে তাদের সমর্থন আছে। সব মিলে ২০২ জন সংসদ সদস্যের সমর্থন থাকার দাবি করেছে তারা।
দেশটির সংবিধান অনুযায়ী, অনাস্থা প্রস্তাব জমা দেওয়ার পর আর প্রধানমন্ত্রী সংসদ ভেঙে দিতে পারেন না।
বিরোধীদলের এক নেতা সংবাদমাধ্যম ডনকে বলেছেন, ইমরান খান যদি নিজেকে লজ্জার হাত থেকে বাঁচাতে চান, তবে তার উচিত প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পদত্যাগ করা। তবে পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ রশিদ আহমেদের বিশ্বাস, ইমরান খান অনাস্থা ভোটে টিকে যাবেন। উল্টো বিরোধীদের অনাস্থা ভোট ব্যর্থ হবে।
গত মঙ্গলবার (৮ মার্চ) পিটিআই নেতা ইমরান খানের বিরুদ্ধে পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ জাতীয় পরিষদে অনাস্থা প্রস্তাব জমা দিয়েছে বিরোধী দলগুলো। এ প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা ও ভোটে জন্য অধিবেশন ডাকতে স্পিকারের প্রতি লিখিত আবেদনও জানিয়েছেন তারা। পাকিস্তানের সংবিধান অনুযায়ী, ৩৪২ সদস্যবিশিষ্ট নিম্নকক্ষে উত্থাপিত অনাস্থা প্রস্তাব পাসের জন্য প্রয়োজন ১৭২ ভোট।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ রশিদ আহমেদ জানান, আগামী ২২ মার্চ ইসলামাবাদে ইসলামি সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) বৈঠকের পর অনাস্থা প্রস্তাবে ভোটাভুটি হতে পারে।
এর আগে ২০২১ সালের মার্চে সিনেট নির্বাচন নিয়ে হতাশা তৈরি হলে সংসদে স্বেচ্ছা অনাস্থা ভোটের আয়োজন করা হয়েছিল। ওই ভোটে মাত্র ছয় ভোট বেশি পেয়ে টিকে যান ইমরান খান। তিনি তখন ১৭৮ ভোট পেয়েছিলেন।
-এটি