আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: বাংলাদেশে আটকে পড়া বিহারিদের ঢাকার পাশে নতুন এলাকায় স্থানান্তর করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাদের জীবন মান উন্নয়নে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।
রবিবার (৬ মার্চ) দুপুরে ঢাকা উত্তর সিটিতে যুক্ত হওয়া ১৮টি ওয়ার্ডের উন্নয়ন কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
হাসিনা বলেন, ‘‘বিহারিরা একসময় পাকিস্তানে ফিরে যাবেন বলে মত দিয়েছিলেন। কিন্তু পাকিস্তান কোনোদিন তাদের গ্রহণ করেনি। তাদের নাম করে অনেক প্রতিষ্ঠান, অনেকেই অনেক টাকা-পয়সা তুলেছে, কিন্তু তাদের আর ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। এখন তাদের ছেলে-মেয়ে হয়েছে, নাতি-পুতি হয়ে গেছে; তাদের বংশ পরম্পরা বেড়েছে। কিন্তু তাদের সেই জেনেভা ক্যাম্পের ছোট্ট জায়গাতেই মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে।’’
বিহারিদের কর্মদক্ষতার প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘তারা কিন্তু খুব কর্মঠ, বিভিন্ন কাজ তারা খুব দক্ষতার সঙ্গে করেন। যে কারণে আমি তাদের জন্য ভালো একটা বাসস্থানের ব্যবস্থা করে দিতে চাচ্ছি। সেখানে যারা যে কাজে পারদর্শী, তারা সেই কাজেই যেন নিজেদের সম্পৃক্ত করতে পারেন, জীবন-জীবিকা করতে পারে; সে ব্যবস্থাও আমাদের করতে হবে। ঢাকা শহরের ভেতরে অল্প জায়গার মধ্যে হয়ত তা সম্ভব হবে না। ভালো এলাকা; যেখানে ইন্ডস্ট্রি আছে, কাজের সুযোগ আছে- সেখানে তাদের জন্য ব্যবস্থা করতে হবে।’’
রবিবার ঢাকা উত্তর সিটিতে যুক্ত হওয়া ১৮টি ওয়ার্ডের উন্নয়ন কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফোকাস বাংলা
তিনি আরও বলেন, ‘‘আমি মানুষকে মানুষ হিসেবে দেখতে চাই। তারা হয়তো এখানে থাকতে চায়নি, কিন্তু এখন যাবে কোথায়? আর তাদের পরের প্রজন্মগুলোতো এ দেশেই জন্মগ্রহণ করেছে। সেই ব্যবস্থাটাও আমাদের করতে হবে।’’
এ সময় গুলশানের নুতন একটি খেলার মাঠসহ ঢাকা সিটি করপোরেশনের নানা উন্নয়ন কর্মসূচির কথা জানান তিনি। নতুন এ ওয়ার্ডগুলোর সড়ক অবকাঠামো, খাল খনন, ড্রেনেজ ব্যবস্থা নির্মাণসহ বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।
রাজধানীর মোহাম্মদপুর, মিরপুরসহ আরও কিছু এলাকায় ছড়িয়ে আছে অবাঙালি বিহারিদের কলোনি। দীর্ঘদিন ধরেই তাদের এ আবাসন ব্যবস্থা নিয়ে চলছে নানা বিতর্ক। একদিকে যেমন বিহারি ক্যাম্পগুলোকে নানা অপরাধের ঘাঁটি কিংবা আশপাশের এলাকার পরিবেশ নষ্টের কারণ বলে ধরা হয়, অন্যদিকে তাদের মানবেতর জীবনযাপন নিয়েও আছে সাধারণ মানুষের মধ্যে মমত্ববোধ।
ঢাকার ৪৫টি বিহারি ক্যাম্পে প্রায় ৬ লাখ লোক বসবাস করে।
এনটি