আন্তর্জাতিক ডেস্ক: আর্থিক লেনদেনের বার্তা আদান-প্রদানকারী আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান ‘সুইফট পেমেন্ট নেটওয়ার্ক’ থেকে রাশিয়াকে বের করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পশ্চিমাবিশ্ব। প্রাথমিকভাবে নির্দিষ্ট কিছু ব্যাংককে এ নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা হবে। ধীরে ধীরে তা বাড়ানো হবে।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ), ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, যুক্তরাজ্য, কানাডা এবং যুক্তরাষ্ট্র এ সংক্রান্ত একটি যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করেছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘রুশ সেনা বাহিনী ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ এবং দেশটির অন্যান্য শহরগুলোতে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। রাশিয়াকে আন্তর্জাতিক আর্থিক ব্যবস্থা এবং বৈশ্বিক অর্থনীতি থেকে আরও বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এটা নিশ্চিত করা হবে যে, নির্দিষ্ট ওই ব্যাংকগুলো আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা থেকে বিচ্ছিন্ন হবে এবং বিশ্বব্যাপী তাদের কার্যক্রম চালানোর ক্ষতির মুখোমুখি হবে।
রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংককে পঙ্গু করে দেওয়ার জন্য এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেন।
তিনি বলেন, ‘এ পদক্ষেপের ফলে রাশিয়ার ব্যাংকগুলো বিশ্বব্যাপী তাদের বেশির ভাগ আর্থিক লেনদেন পরিচালনা করতে পারবে না। রাশিয়ার রপ্তানি-আমদানি কার্যত বন্ধ হয়ে যাবে। দ্বিতীয়ত, আমরা পুতিনকে তার যুদ্ধের তহবিল ব্যবহার করা থেকে বিরত রাখব। রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সম্পদ পঙ্গু করে দেওয়া হবে। এতে ব্যাংকের লেনদেন স্থবির হয়ে পড়বে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষে তার সম্পদকে তারল্যে রূপান্তর করা অসম্ভব করে তুলবে এ পদক্ষেপ। পুতিনের যুদ্ধে বিনিয়োগ করা কঠিন করে তুলবে এসব পদক্ষেপ।’
সুইফট থেকে রাশিয়ান ব্যাংকগুলোকে বের করে দেওয়া দেশটির বিরুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ প্রথম পদক্ষেপ বলে জানিয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন।
জনসন জানান, এসব পদক্ষেপ খুব শিগগির বাস্তবায়ন করা হবে। পদক্ষেপগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘সুইফট ম্যাসেজিং সিস্টেম থেকে নির্দিষ্ট রাশিয়ান ব্যাংকগুলোর নাম বাতিল করা’।
সুইফট থেকে নাম বাতিলের পদক্ষেপের ফলে রাশিয়ার ব্যাংক আন্তর্জাতিক আর্থিক ব্যবস্থা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে এবং বিশ্বব্যাপী তাদের কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষমতা কমে যাবে।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর পর রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন দেশ। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনও নিষেধাজ্ঞার তালিকা থেকে বাদ যাননি। তবে সুইফটের বিষয়ে একমত হতে পারেননি পশ্চিমা নেতারা।
কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, ইউক্রেনে অভিযানের পর মস্কোর ওপর আরও নিষেধাজ্ঞা আরোপের অংশ হিসেবে এ পদক্ষেপকে বিবেচনা করা হচ্ছে।
-এএ