আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: মাত্র কয়েক মাসে পবিত্র কুরআন হিফজ সম্পন্ন সম্পন্ন করেছে আমাতুল্লাহ ওয়ারদা নামে সাত বছর বয়সী এক কন্যা শিশু। করোনার সময়ে বাসায় নিজ মায়ের কাছে হিফজ শুরু করে ৭ বছর ৫ মাস বয়সী ওয়ারদা। মায়ের তত্ত্বাবধায়নে অল্প কয়েক মাসের চেষ্টাতেই পুরো কুরআন হিফজ করার গৌরব অর্জন করে ওয়ারদা।
ওয়ারদার জন্ম পবিত্র মদিনায়। পড়ালেখার হাতেখড়িও মদিনায়।
ওয়ারদার মা রাজধানীর মিরপুর-১ এ অবস্থিত মানাহিল মডেল মাদরাসার বালিকা শাখার হিফজ বিভাগের প্রধান শিক্ষিকার দায়িত্বে রয়েছেন। আমাতুল্লাহ ওয়ারদার বাবা-মা এবং বড়বোন সবাই কুরআনের হাফেজ ও আলেম।
এর আগে আমাতুল্লাহর বোন যাহ্রা-ই-বেহেশতী পবিত্র মদিনাতুল মুনাওয়ারায় আট বছর বয়সে ৮ মাসের কম সময়ে হিফজ সম্পন্ন করেছিল। সে পবিত্র মসজিদে নববীর শিক্ষার্থী। এ ছাড়া সে মদিনা বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল এন্ড কলেজ থেকে ২০১৮ সালের পিএসসি পরিক্ষায় বাংলাদেশ সরকারের ট্যালেন্টপুল বৃত্তি পেয়েছিল। সে ২০১৮ তে বহির্বিশ্ব কোটায় ট্যালেন্টপুল বৃত্তি পাওয়া ৭ জনের অন্যতম একজন।
ওয়ারদা ও যাহ্রার মা আল্লাহর রাসূল (সা.)-এর শহর মদিনা মুনাওয়ারায় মাত্র ৪ মাসে কোরআনুল কারিম হিফজ করেন। পরে তিনি সেখানে মানাহিল ইন্টারন্যাশনাল গার্লস মাদরাসার প্রধান শিক্ষিকা হিসেবেও কর্মরত ছিলেন।
ওয়ারদার বাবা বিশিষ্ট আলেম ও গবেষক মুফতি যাকারিয়্যা মাহমূদ মাদানী। তিনি রাজধানীর মিরপুরে অবস্থিত মানাহিল মডেল মাদরাসা ও মাদরাসাতুল মাদীনাহ লিল বানাত-মদিনা গার্লস মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা প্রিন্সিপ্যাল। তিনি মদিনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইসলামী আইন, বিচার ব্যবস্থা ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানে বি. এ. অনার্স, এম. এ, এমফিল ডিগ্রি অর্জন করেন।
ওয়ারদার কোরআন হিফজে আপ্লুত এই বাবা বলেন, আল্লাহ তাআলা আমার ওপর এত বেশি অনুগ্রহ করেছেন যে, তা গুণে শেষ করতে পারব না। তিনি অত্যন্ত করুণা করে আমার ছোট মেয়ে ৭ বছর ৫ মাসের আমাতুল্লাহ ওয়ারদা-কে কোরআনুল কারিম অন্তরে ধারণ করার তাওফিক দিয়েছেন, আলহামদুলিল্লাহ। আজ সে হিফজুল কোরআনের শেষ সবক শুনিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এ এক এমন প্রাপ্তি যার তুলনা হয় না। এমন এক অনুভূতি যা প্রকাশ করা যায় না। এমন প্রশান্তি যা বলে বুঝানো যায় না। আবেগাপ্লুত চোখের পানি ধরে রাখতে পারিনি! যেমন পারিনি আমার বড় মেয়ে ও তার মায়ের হিফজের পরও।
জীবনের যেকোনো প্রাপ্তি ও সফলতার চেয়ে কোরআনের এ প্রাপ্তি আমার কাছে অনেক বড়, অনেক সুখের এবং অনেক সম্মানের।
তিনি বলেন, ওয়ারদা আমার কাছেও মাঝেমাঝে সবক শুনিয়েছে তবে এখানে মেয়েদের আম্মুর কথা না বললেই নয়, সে মেয়েদের পেছনে আঠার মতো লেগেছিল। সব অবদানই তার। মূলত সেই মেয়েদের শিক্ষিকা। আল্লাহ তাকে দুনিয়া ও আখিরাতে উত্তম বিনিময় দিন।
সবার কাছে দোয়া কামনা করি, আমার স্ত্রী এবং মেয়েদের সম্মান ও সাফল্যের ধারা যেন আজীবন অব্যাহত থাকে। তারা যেন ইলম-আমল ও আখলাকের আঁকর হয়। সর্বোপরি মহান আল্লাহ যেন তাদের দ্বীনের সেবক হিসেবে কবুল করেন।
এনটি