আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: রাজধানীতে ২০২২ সালে বায়ুদূষণে মাত্রা বেড়েছে ১০ শতাংশ। গত ছয় বছরের তুলনায় চলতি বছরের জানুয়ারিতেই গড়মাত্রা ১৫ ভাগ বেশি। বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্রের গবেষণায়- সমন্বয়হীন ও অপরিকল্পিত নির্মাণকাজ, ইটভাটা ও ফিটনেসবিহীন গাড়ির ধোঁয়া দেশের ইতিহাসের ভয়াবহ বায়ুদূষণের কারণ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।
এদিকে নির্দেশনার পরও কেন বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না, জানতে ঢাকা ও আশপাশের ৫ জন জেলা প্রশাসককে তলব করেছেন আদালত।
সব রেকর্ড ভেঙে ঢাকা শহরে সবচেয়ে বেশি বায়ুদূষণ ঘটেছে ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসে। এই এক মাসে কেবল অস্বাস্থ্যকর বায়ু নয়, দুর্যোগপূর্ণ বায়ু সেবনও করেছে নগরবাসী। উন্নত বিশ্ব যা জরুরি অবস্থার শামিল। গবেষকরা বলছেন, সময়মতো পদক্ষেপ না নেওয়ায় ধীরে ধীরে ঢাকার বায়ু এই দুরবস্থায় পৌঁছেছে।
বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্রের গবেষণা অনুযায়ী, ২০২০ সালের তুলনায় '২২ সালে বায়ুদূষণে মাত্রা বেড়েছে ১০ ভাগ। আর এ বছর জানুয়ারি মাসে বায়ুদূষণের মাত্রা পূর্ববর্তী ছয় বছরের গড় দূষণের তুলনায় ১৫ ভাগ বেশি।
বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্রের পরিচালক অধ্যাপক আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, প্রতি বছরই পূর্ববর্তী গড়ে ৮ থেকে ১০ ভাগ দূষণ বেড়েছে। কিন্তু এর জন্য কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
মহানগরীতে সবচেয়ে বেশি ৩১ ভাগ বায়ুদূষণ ঘটে অপরিকল্পিতভাবে নির্মাণকাজের কারণে। ফলে কোনো নির্দিষ্ট এলাকাকে বায়ুদূষণের হটস্পট হিসেবে চিহ্নিত করা যায় না।
তিনি আরও বলেন, যে এলাকায় বড় উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ হয়। সেখানে বায়ুদূষণ সবচেয়ে বেশি দেখা যায়।
কিছুদিন আগে বায়ুদূষণের কারণে দিল্লিতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়। ঢাকার বায়ুদূষণ তাকেও ছাপিয়ে বিশ্বের শীর্ষ দূষিত শহর হিসেবে উঠে এসেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি আন্তর্জাতিক গবেষণায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক আবদুস সালাম বলেন, বায়ু দূষণের কারণে আমাদের হার্টের ক্ষতি হয়। ব্রেনের ক্ষতি হয়। সেই সঙ্গে ফুসফুসেরও সমস্যা হয়।
এদিকে বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে ঢাকাসহ আশপাশের ৫ জেলার অবৈধ ইটভাটার তালিকাসহ ডিসিদের উপস্থিত হতে মঙ্গলবার আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
২০১৯ সালে হিউম্যান রাইটস ফর পিস অ্যান্ড বাংলাদেশের রিটের প্রেক্ষিতে বায়ুদূষণ কমাতে আদালত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দিলেও যথাযথভাবে তা পালন হয়নি।
-এএ