মুযযাম্মিল হক উমায়ের
হযরত কারী সিদ্দীক আহমাদ বান্দাবী রাহিমাহুল্লাহু তাআলা বান্দাবাসী মন্নু ভাইয়ের আলোচনা প্রসঙ্গে বলেন, আল্লাহ তাআলা তাঁকে অনেক অর্থ-সম্পদ দান করেছিলেন। শুরু থেকেই তিনি আমাকে মান্য করতেন। শ্রদ্ধা করতেন। আমার প্রতি অনেক লক্ষ্য রাখতেন। আল্লাহ তাআলা তাঁর মধ্যে এমন কিছু গুণাবলী দান করেছিলেন, যেগুলো আমি বান্দাবাসী কারো মধ্যে দেখিনি।
বান্দার জামে মসজিদের সকল ব্যবস্থাপনা তিনি করতেন। বান্দা এলাকয় যতো ঈদগাহ আছে, সবগুলোই তাঁর অবদানের ফসল। তারপও তার মধ্যে যে ত্রুটি ছিলো না এমন নয়। ত্রুটি তো সকলের মধ্যেই কম-বেশি আছে। তার মধ্যে যেটি ছিলো, সেটি হলো, শরাব পান করতো আর জুয়া খেলতো। কিন্তু পরবর্তীতে তার অবস্থা আশাতীত পরিবর্তন হয়েছিলো। একেবারে সম্পূর্ণভাবে তিনি নিজেকে পরিবর্তন করে নিয়েছিলেন। পরবর্তীতে তিনি একজন পাক্কা দীনদার মানুষ হয়ে গিয়েছিলেন। হাতে তাসবীহ রাখতেন। পাঁচ ওয়াক্ত নামায জামাতের সাথে গুরুত্বের সাথে আদায় করতেন। মসজিদ ঝাঁড়ু দেয়ার কাজ তিনি নিজ হাতে আগ্রহের সাথে করতেন। সমস্ত গুনাহ সমূহ থেকে খাঁটি অন্তরে তাওবা করেছিলেন। হজ্জ করেছেন। মোটকথা, তাঁর অবস্থা বিলকুল দীনদারীতে পরিবর্তন হয়ে গিয়েছিলো।
আর এইসব পরিবর্তনের পিছনে সবচেয়ে বেশি অবদান ছিলো, তাঁর স্ত্রীর। তাঁর স্ত্রী অনেক দীনদার ছিলেন। মন্নু ভাই দীনদার হওয়ার পিছনে তাঁর স্ত্রীর যতেষ্ট অবদান রয়েছে। তাঁর স্ত্রী আমাকে অধিকাংশ সময় দাওয়াত করে নিতেন এবং আমার দ্বারা তাঁর স্বামীকে দীনের কথা শুনাতেন। আমার উপরও তাঁদের অনেক অবদান আছে। তাঁদের কাছে বেশি পরিমানে আসা-যাওয়া করার কারণে লোকজন থেকে আমার অনেক বিরোপ মন্তব্য শুনতে হয়েছে। লোকেরা বলাবলি করতো, তাঁদের টাকা-পয়সা আছে বিধায় আমি তাঁদের কাছে বেশি যাই।
আমি মনে মনে বলতাম, ঠিক আছে। যা বলার বলতে থাকুক। আমার আল্লাহ তাআলা তো জানেন, আমি কী জন্যে তাঁদের কাছে আসা-যাওয়া করি। মানুষের কথাতে আমার কিছু যায়-আসে না। মানুষ তো কতো কিছুই বলে থাকে, যেগুলোর কোন ভিত্তি নেই।
তাঁর স্ত্রী আমাকে দাওয়াত করে নিয়ে বলতেন, মাওলানা সাহেব! আপনি তাঁকে দীনের কথা বুঝান। তিনি একমাত্র তাঁর স্বামীকে দীনি কথাবার্তা বুঝানো ও নসিহত করার জন্যেই আমাকে ডাকতেন। এই কারণে আমাকে যেতে হতো। আলহামদুলিল্লাহি তাআলা, আমার নিয়ত সহীহ থাকার কারণে মন্নু ভাইয়ের ভিতর সেগুলো আছর করেছে। তিনি এক সময় খাঁটি দীনদার মানুষ হয়ে যান। পরবর্তীতে তাঁর দ্বারা দীনেরও অনেক কাজ আল্লাহ তাআলা নিয়েছেন। ছুম্মা আলহামদুলিল্লাহি তাআলা। সূত্র: মাজালিসে সিদ্দীক
-এটি