মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪ ।। ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
সৌদির সেবা কোম্পানির সঙ্গে হজ এজেন্সির চুক্তির নির্দেশনা মহেশখালী থানার বিশেষ অভিযানে পরোয়ানাভুক্ত ১১ জন আসামি গ্রেফতার বৃষ্টির সময় কাবা প্রাঙ্গণে নামাজ আদায় ওমরা পালনকারীদের নিউ বসুন্ধরা রিয়েল এস্টেট গ্রাহকদের মূলধন ফেরত পাওয়ার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন মাওলানা আতহার আলীকে বাদ দিয়ে জাতীয় ইতিহাস রচিত হতে পারে না: ধর্ম উপদেষ্টা জরুরি সভা ডাকল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কক্সবাজারে উৎসবমুখর পরিবেশে রোপা আমন ধান কাটা শুরু চাঁদপুর হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতায় জামিয়া ইসলামিয়া দারুস সুন্নাহর সাফল্য বগুড়ায় আন্দোলনে নিহত রিপনের মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন কুমিল্লায় আন্তর্জাতিক ইসলামী মহাসম্মেলন অনুষ্ঠিত

সরকার ও জাতিসংঘের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আনন্দ মিছিল

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফে ৩৪ টি রোহিঙ্গা শিবির রয়েছে। এখানে বসবাস করছে সাড়ে ১১ লাখের অধিক রোহিঙ্গার বসতি। দীর্ঘদিন পর হলে ও জাতিসংঘ নোয়াখালীর ভাসানচরকে মেনে নিয়ে মানবিক সহায়তার সব দায়িত্ব নেয়ার তাদের এখন সেখানে বসবাসে কোনো অসুবিধা নেই।

ভাসানচরের রোহিঙ্গাদের জন্য কাজ করতে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর এর চুক্তি সই হওয়ায় আনন্দ মিছিল ও মিষ্টি বিতরণ করেছেন কক্সবাজারের উখিয়ার বিভিন্ন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বসবাসরত সাধারণ রোহিঙ্গারা।

মঙ্গলবার সকালে উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প ২ /ইস্ট ও ক্যাম্প ১৭ তে স্থানীয় রোহিঙ্গা, মাঝি ও কমিউনিটি লিডার ফোকাল নেতৃত্বে আয়োজিত আনন্দ মিছিলে হাজারো সাধারণ রোহিঙ্গা অংশ নেন।

এ সময় বাংলাদেশ সরকার ও জাতিসংঘের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করে স্লোগান দেন তাঁরা। মিছিলে রোহিঙ্গাদের হাতে ছিল `স্বাগত জাতিসংঘ’, `ধন্যবাদ বাংলাদেশ’ লেখা বিভিন্ন প্ল্যাকার্ডসহ ব্যানার, ফেস্টুন। মিছিল শেষে উচ্ছ্বসিত রোহিঙ্গারা নিজেদের মাঝে মিষ্টি বিতরণও করেন।

মিছিলে অংশ নেওয়া ২/ইস্ট ক্যাম্পের রোহিঙ্গা মোহাম্মদ আমিন (৩৬) বলেন, ‘ভাসানচরে জাতিসংঘ কাজ করবে শুনে আমরা আনন্দিত, আশা করছি এখন আগের তুলনায় অধিক রোহিঙ্গা ভাসানচরে যেতে আগ্রহী হবে।’

এ দিকে রোববার একইদিনে ভাসানচরে একসঙ্গে কাজ করার জন্য বাংলাদেশ-জাতিসংঘ স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারককে স্বাগত জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে রোহিঙ্গাদের একটি যুব সংগঠন।

রোহিঙ্গা ইয়ুথ অ্যাসোসিয়েশন নামে সংগঠনটির বিবৃতিতে বাংলাদেশ ও জাতিসংঘ কে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপনের পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা, শিক্ষা সহ বিভিন্ন অধিকার নিশ্চিত করার সুপারিশ জানানো হয়।

বিবৃতি প্রসঙ্গে সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা কিন মং বলেন, ‘আমরা চুক্তিটিকে স্বাগত জানাচ্ছি, পাশাপাশি আমরা বাংলাদেশ সরকার ও জাতিসংঘের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছি দ্বীপটিতে যেন রোহিঙ্গাদের সার্বিক নিরাপত্তা, শিক্ষা, দক্ষতা উন্নয়ন ও প্রশিক্ষণ, জীবিকার সুযোগ, স্বাস্থ্যসেবা সহ বিভিন্ন অধিকার সুনিশ্চিত করা হয়।’

এ ছাড়াও বিবৃতিতে ভাসানচর থেকে রোহিঙ্গারা যেন কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যাতায়াতের সুযোগ পায় সে দাবিও উপস্থাপন করা হয়েছে বলে জানান কিন মং।

শনিবার ভাসানচরের রোহিঙ্গাদের জন্য কাজ শুরু করতে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সাক্ষর করে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাই কমিশন। সচিবালয়ে সরকারের পক্ষে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোহসীন এবং ইউএনএইচসিআরের পক্ষে বাংলাদেশের প্রতিনিধি উহানেন্স ভন ডার ক্লাও সমঝোতা স্মারকে সাক্ষর করেন।

এ সমঝোতা বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকার ও ইউএনএইচসিআর যৌথভাবে ভাসানচরে রোহিঙ্গা নাগরিকদের খাদ্য ও পুষ্টি, সুপেয় পানি, পয়োনিষ্কাশন, চিকিৎসা, দক্ষতা প্রশিক্ষণ, মিয়ানমারের ভাষায় পাঠক্রম ও অনানুষ্ঠানিক শিক্ষা এবং জীবিকায়নের ব্যবস্থা করবে।

কক্সবাজারে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশন কার্যালয়ের কর্মকর্তারা জানান, ইতিমধ্যে ভাসানচরে ১৮ হাজার রোহিঙ্গাকে কক্সবাজার থেকে স্থানান্তর করা হয়েছে। করোনা পরিস্থিতিতে লকডাউন এবং বর্ষা মৌসুমের কারণে এত দিন ভাসানচরে স্থানান্তর সাময়িক বন্ধ ছিল। আগামী মাসের মধ্যে ভাসান চরে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তর প্রক্রিয়া শুরু হবে।

কুতুপালং শরণার্থী ক্যাম্পের ইনচার্জ (উপসচিব) মোহাম্মদ রাশেদুল ইসলাম বলেন, শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কার্যালয়ের মাধ্যমে স্বেচ্ছায় ভাসানচরে যেতে ইচ্ছুক রোহিঙ্গাদের তালিকা প্রণয়ন করা হচ্ছে। সরকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআরের চুক্তির পর ভাসানচরে ১ লাখ রোহিঙ্গার মানবিক সহায়তা কার্যক্রমে যুক্ত থাকবে সংস্থাটি। রোহিঙ্গারা এতে খুশি। তাই তারা ক্যাম্পের বিভিন্ন জায়গায় আনন্দ মিছিল ও মিষ্টি বিতরণ করেছে। ক্যাম্পের পরিস্থিতি এখন অনেক শান্ত।

সরকার কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের ওপর থেকে চাপ কমাতে এক লাখ রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে এ পর্যন্ত ছয় দফায় ১৮ হাজার ৫২১ জন রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে নেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে শিশু ৮ হাজার ৭৯০ জন। নারীর সংখ্যা ৫ হাজার ৩১৯ জন ও পুরুষের সংখ্যা ৪ হাজার ৪০৯ জন।

-এটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ