মুফতি খন্দকার আজিজুল হক ইয়াকুবী।। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন প্রিয় নবি মুহাম্মদ সা. কে যেদিন এই পৃথিবীতে প্রেরণ করেন সেদিন পৃথিবীর সব মূর্তি মাটিতে পড়ে গিয়েছিল। রাজা-বাদশাহদের সিংহাসন উল্টে গিয়েছিল।
এক সমূদ্রের মাছ অন্য মাছদের মোবারকবাদ জানিয়েছিল। তারা আনন্দে আত্মহারা হয়ে পরস্পরকে বলছিল যে, সকল মানুষের নেতা ও পৃথিবীর সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব আজ জন্ম গ্রহণ করেছন।
৩১৬৫ বছর মেয়াদী কিসরার প্রাসাদে দীর্ঘ এক হাজার বছর যাবত প্রজ্বলিত আগুন হঠাৎ নিভে গিয়েছিল। রাসূল সাঃ এর আবির্ভাবের সময় কিসরার নাম ছিল নওশেরওয়াঁ। ন্যায়পরায়ণ শাসক হিসেবে তিনি প্রসিদ্ধ ছিলেন। এই বাদশাহ শ্বেতপাথরের একটি প্রাসাদ নির্মাণ করেছিলেন। সে প্রাসাদের চৌদ্দটি গম্বুজ ছিল।
রাসূল সা. এর আবির্ভাবের সময়ে সে গম্বুজ ভেঙ্গে মাটিতে পড়ে গিয়েছিল। এই ঘটনায় সমগ্র বিশ্বজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছিল। মক্কায় এসে একজন ইহুদী জানতে চাইল যে, আজ কি কুরাইশ বংশে কোন শিশু জন্মগ্রহণ করেছে? তাকে জানানো হল যে, হ্যা! একটি শিশু জন্মগ্রহণ করেছে।
ইহুদি জানতে চাইল, সে শিশুর পিতা কি জীবিত আছে? তাকে জানানো হলো, হ্যা পিতা জীবিত আছে। ইহুদী বলল, এমন একটি শিশু জন্মগ্রহণ করেছে কিনা যার পিতা জীবিত নেই? ইহুদীকে জানানো হল, হ্যা এরকম একটি শিশুও আজ মক্কায় জন্মগ্রহণ করেছে। সে শিশুর প্রয়াত পিতার নাম ছিল আব্দুল্লাহ।
দাদার নাম আব্দুল মুত্তালিব। একথা শুনে ইহুদী শিশুটিকে দেখার ইচ্ছা প্রকাশ করল। ইহুদী হায় হায় করে বলল, হায় বনি ইসরাইল নবুয়তের গৌরব তোমাদের হাতছাড়া হয়ে গেছে। বাদশাহ নওশেরওয়াঁ অস্থির হয়ে পড়ল। সে যুগের খৃস্টান পাদ্রী আব্দুল মসিহকে ডাকা হল। নওশেরওয়াঁ পাদ্রীর কাছে এসব বিস্ময়কর ঘটনার কারণ জানতে চাইল।
পাদ্রী বলল, জাঁহাপনা আমি কিছুই বুঝতে পারছি না। আমার এক মামা তাওরাত, ইঞ্জিলের বড় পণ্ডিত। তিনি সিরিয়ায় আছেন। আমি তার কাছে গিয়ে এই ঘটনার তাৎপর্য জানতে চাই। বাদশাহ পাদ্রীকে সিরিয়ায় যাওয়ার অনুমতি দিলেন। সিরিয়ায় পাদ্রী আব্দুল মসিহের মামা সেসময় মৃত্যু শয্যায় ছিল। মাঝে মাঝে অচেতন হয়ে যায়। হুশ ফিরে আসলে মামা পণ্ডিত তার ভাগ্নেকে বলল, ইরানের এক হাজার বছরের অগ্নিকুণ্ড নিভে যাওয়ার কারণ এবং রাজপ্রাসাদের ১৪টি গম্বুজ ভেঙ্গে পড়ার কারণ জানার জন্যই কি বাদশাহ তোমাকে আমার কাছে পাঠিয়েছে? ভাগ্নে আব্দুল মসিহ বলল, হ্যা মামা ঠিক তাই। এ উদ্দেশ্যেই আমি এসেছি।
সিরিয়ার পাদ্রী বলল, বাদশাহ কে গিয়ে বলবে- যে মহান ব্যক্তির আবির্ভাব ঘটেছে তিনি কুরআন নিয়ে আসবেন। তাঁর উপর অবতীর্ণ কুরআন মানুষ পাঠ করবে আর ব্যাপকভাবে প্রচার লাভ করবে।সিরিয়া সে মহান পুরুষের অধিনস্থ হবে এমনকি তাঁর অনুসারীদের হাতে ইরানের রাজত্বও পৌছে যাবে। সে মহান পুরুষের নাম হচ্ছে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম।বাদশাহ নওশেরওয়াঁর ইরান আর তার হাতে থাকবে না। মুহাম্মাদের অনুসারীদের শাসনাধীনে চলে যাবে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস শেষ নবীর আবির্ভাব ঘটেছে। তাঁর আবির্ভাবে এসব অলৌকিক ঘটনা ঘটছে।
লেখক: খতীব, মাঝিনা নদীরপাড় পশ্চিমপাড়া জামে মসজিদ রূপগঞ্জ, না.গঞ্জ। মুহতামিম, কেরামত আলী মমতাজীয়া মাদরাসা দক্ষিনগাঁও, সবুজবাগ, ঢাকা। কেন্দ্রীয় সদস্য, রাবেতাতুল ওয়ায়েজীন বাংলাদেশ।
-এটি