এম. মিজানুর রহমান
লামা (বান্দরবান) প্রতিনিধি>
বান্দরবানের লামা-চকরিয়া সড়কের মিরিঞ্জা পাহাড়ের মাদানিনগর এলাকায় বাস ও কার্গো সার্ভিসের মুখোমুখি সংঘর্ষে বাসের ড্রাইভার মো. আনোয়ার হোসেন মারা গেছেন।
বুধবার (৬ অক্টোবর) সকাল ১০টায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। এসময় আহত হয়েছেন ৩৪ জন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে লামা থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) মুহা. আলমগীর বলেন, খবর পাওয়া মাত্র আমি পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হই। ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ ও স্থানীয়দের সহায়তায় আহতদের চিকিৎসার জন্য দ্রুত লামাসহ বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠায়। তবে বাসের চালক মো. আনোয়ার হোসেনকে লামা থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে তার মৃত্যু হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী জানায়, লামাগামী ট্রাক (মেট্রো ট-১১-৪৬৫৫) নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে চকরিয়া মুখী যাত্রীবাহী বাস (চট্রমেট্রো জ-২২৮৫) এর সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। বাসে ৪৯ জন যাত্রী ছিল। তবে বাসের চালকসহ মোট ৩৫ জন যাত্রী গুরুতর আহত হয়। দুর্ঘটনার পরপরই কার্গোর ড্রাইভার হেলপার পালিয়ে যায়।
বাসের যাত্রী মো. জিহান বলেন, আমাদের বাসটি ধীরে ধীরে চলছিলো। কিন্তু বিপরীত দিক থেকে আসা মালবাহী কার্গো ট্রাকটি নিয়ন্ত্রন হারিয়ে আমাদের বাসকে চাপা দেয়। গাড়ির একজন যাত্রীও ভালো নেই। সবাই কমবেশি আহত হয়েছে। আমার মাথা ও হাত কেটে গেছে। আমার মা, ছোট ভাই আহত।
লামা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগের দায়িত্বরত ডাক্তার রায়হান জান্নাত বিলকিচ সুলতানা বলেন, হাসপাতালে মোট ১৯জন আহত রোগী আসে। তারমধ্যে আশংকাজনক ও গুরুতর হওয়ায় আমরা ১০ জনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল হাসপাতালে রেফার করি, ৩ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে ও বাকী ৬ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বাড়ী পাঠানো হয়েছে। বাকি ১৬জন আহত যাত্রীকে অন্য বাস-জীপে করে চিকিৎসার জন্য চকরিয়া প্রেরণ করা হয়েছে।
এদিকে দুর্ঘটনা কবলিত বাস ও কার্গো গাড়ি দুইটি রাস্তার উপরে উপড়ে পড়লে লামা-চকরিয়ার যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যাওয়ার প্রায় ৩ঘন্টা পরে ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয়দের সহযোগিতায় গাড়ি দুইটি সামান্য অপসারণ করে লামা চকরিয়া সড়কের যোগাযোগ সচল করা হয়।
এ বিষয়ে লামা চকরিয়া রোডের বাস চালক নুর মোহাম্মদ বলেন, লামা পাহাড়ি এলাকা ও রাস্তা উঁচু-নিচু। যার কারণে বাহিরের ড্রাইভাররা পাহাড়ি এলাকায় গাড়ি চালাতে দক্ষ না। বাহিরের গাড়ি লামায় ঢুকলে চকরিয়া থেকে স্থানীয় ড্রাইভার দিয়ে গাড়ি চালানো নিয়ম রয়েছে। কিন্তু ইদানিং এই নিয়ম মানা হচ্ছে না। যার কারণে অহরহ দুর্ঘটনা ঘটছে।
লামা হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়া আহতরা হলেন- জোৎস্না দে (২০), শুভশ্রী (১০), রূপম চাকমা (২), জহর লাল (৫৫), নুর মোহাম্মদ (২৮), মোঃ সোহেল (৩২), রাজশ্রী দে (২), আনোয়ার হোসেন (৫০), নুরুল আলম (৩০), হাসনা বালা (৬০), মনু আলম (৩৫), তপন (৩৮), সরওয়ার (২৫), মোঃ রফিক (৩০), সরওয়ার আলম (৫৫), মোঃ সাহেদ (৬৫), শিব সংকর (৩৭), জেসি মার্মা (২২), আবুল হোসেন (৫৫)। চকরিয়া নিয়ে যাওয়া আরো আহতরা হলেন, বাসের হেলপার মোঃ বেলাল (২৪), মেরি আক্তার (৪৫), মোহছেনা বেগম (৪০), আকিব (১০), ইমু (৬), জিহান (১৮), জাহানারা বেগম (৪৮), পাখি বালা (৭০) সহ ১৬ জন।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন, লামা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মোস্তফা জামাল, পৌর মেয়র মু. জহিরুল ইসলাম প্রমুখ।
-এএ