আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: পানিবদ্ধতার কারণে মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়তে পারছিলেন না সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর ইউনিয়নের মুসল্লিরা। মসজিদে নামাজের ধারা অব্যাহত রাখতে নিয়মিত সাঁতার কেটে মসজিদে যেতেন ইমাম হাফেজ মইনুর রহমান।
ইমাম-মুসল্লিদের মনঃকষ্ট দূর করতে এগিয়ে এসেছে চট্টগ্রামের সেবামূলক সংগঠন আলহাজ শামসুল হক ফাউন্ডেশন। গত সোমবার (৫ অক্টোবর) জোহরের নামাজ আদায় করে ভাসমান এই মসজিদ উদ্বোধন করেন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী নাছির উদ্দিন। দাবি করা হচ্ছে, এটা দেশের প্রথম ভাসমান মসজিদ।
জানা যায়, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের কারণে মসজিদটি মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। আর নদীর পানি বৃদ্ধির ফলে মসজিদটি প্রায় অর্ধেক ডুবে আছে পানিতে। পানিতে নিমজ্জিত হাওলাদার বাড়ি জামে মসজিদের পাশেই রাখা হয়েছে ভাসমান ওই মসজিদ। পাঁচ লাখ টাকা বাজেটে তৈরি ভাসমান মসজিদে ৭০ জন মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারবেন।
৫০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১৬ ফুট প্রস্থের এ মসজিদে একসঙ্গে চারজন অজু করতে পারবেন। এ ছাড়া রয়েছে পানির ট্যাংক, ট্যাব ও স্যানিটেশন ব্যবস্থা। কয়েক সেট পবিত্র কোরআন শরিফ রাখা হয়েছে। ভাসমান মসজিদ স্থির রাখতে নৌকার দুই ধারে বাঁধা রয়েছে ২৫০ লিটারের ৮টি ড্রাম।
ভাসমান মসজিদের প্রধান উদ্যোক্তা প্রকৌশলী নাছির উদ্দিন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘প্রতাপনগরে ইমামের সাঁতরিয়ে মসজিদে যাওয়ার ভিডিও আমাদের সবার মনে প্রভাব ফেলে। আমরা সরেজমিনে গিয়ে পানির মধ্যে কিভাবে স্থানীয়রা সারা দিনের সব কাজ করে তা দেখি। সারা দিনের সব কাজ নৌকার সাহায্যে করলেও তাঁরা একসঙ্গে নামাজ পড়তে পারেন না, জুমার নামাজ পড়তে পারেন না।
এরপর তাদের এ কষ্ট লাঘবে আমরা ভাসমান মসজিদ তৈরির পরিকল্পনা নিই। ২৪ সেপ্টেম্বর ভাসমান মসজিদের পরিকল্পনার ঘোষণা করি। এরপর মাত্র ১২ দিনেই বাংলাদেশের প্রথম ভাসমান মসজিদ তৈরি হয়। নাম দেওয়া হয়েছে ‘আলহাজ শামসুল হক ফাউন্ডেশন মসজিদে নুহ (আ.)’।
পানি শুকিয়ে গেলে এবং হাওলাদার বাড়ির জামে মসজিদটি ব্যবহার উপযোগী হলে ভাসমান মসজিদটি পার্শ্ববর্তী বন্যার্ত এলাকার পানিবদ্ধ কোনো মসজিদের পাশে নেওয়া হবে। এ ধরনের মসজিদ না থাকলে তা শিক্ষাকেন্দ্র কিংবা স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হবে। অন্যদিকে বন্যার্ত এলাকায় নামাজের বিকল্প স্থান হিসেবে ভাসমান মসজিদ তৈরি হওয়ায় এবং দীর্ঘদিন পর শুকনো স্থানে একসঙ্গে নামাজ পড়তে পেরে স্থানীয়দের মধ্যে বিরাজ করছে আনন্দ ও উচ্ছ্বাস। উল্লেখ্য, বিজ্ঞ আলেমরা বিনা প্রয়োজনে ভাসমান নৌযানে নামাজ আদায়ে নিরুৎসাহ করে থাকেন।
-এটি