মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪ ।। ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
সৌদির সেবা কোম্পানির সঙ্গে হজ এজেন্সির চুক্তির নির্দেশনা মহেশখালী থানার বিশেষ অভিযানে পরোয়ানাভুক্ত ১১ জন আসামি গ্রেফতার বৃষ্টির সময় কাবা প্রাঙ্গণে নামাজ আদায় ওমরা পালনকারীদের নিউ বসুন্ধরা রিয়েল এস্টেট গ্রাহকদের মূলধন ফেরত পাওয়ার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন মাওলানা আতহার আলীকে বাদ দিয়ে জাতীয় ইতিহাস রচিত হতে পারে না: ধর্ম উপদেষ্টা জরুরি সভা ডাকল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কক্সবাজারে উৎসবমুখর পরিবেশে রোপা আমন ধান কাটা শুরু চাঁদপুর হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতায় জামিয়া ইসলামিয়া দারুস সুন্নাহর সাফল্য বগুড়ায় আন্দোলনে নিহত রিপনের মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন কুমিল্লায় আন্তর্জাতিক ইসলামী মহাসম্মেলন অনুষ্ঠিত

সোয়াম্প ফরেস্ট রাতারগুলে চাঁদাবাজি রোধে সংবাদ সম্মেলন

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

সৈয়দ হেলাল আহমদ বাদশা
গোয়াইনঘাট সিলেট থেকে>

সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলায় অবস্থিত জনপ্রিয় সোয়াম্প ফরেস্ট ‘রাতাগুল’ স্হানীয় ফখর মেম্বার বাহিনীর কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয় রাতারগুল গ্রামের বাসিন্দারা। রোববার (৪ অক্টোবর) সিলেটে প্রেসক্লাব ও সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে ফতেহপুর ইউনিয়নের রাতারগুল গ্রামের বাসিন্দারা এ অভিযোগ করেন।

তারা বলেন, আমরা এখানে যারা উপস্থিত হয়েছি আমরা গোয়াইনঘাট উপজেলার ফতেহপুর ইউনিয়নের বিখ্যাত রাতারগুল গ্রামের অধিবাসী। আমরা রাতারগুল ঘাটে নৌকা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করি। সম্প্রতি পর্যটকদের গাড়ির উপর হামলাকারী ফতেহপুর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের মেম্বার চাঁদাবাজ ফখর উদ্দিনের লোকজন হিসাবে পরিচিত। কয়েকজন মিলে সিলেটে আয়োজিত সংবাদ মিথ্যাচার চালিয়ে আমাদের মানসম্মানে আঘাত এনেছেন। তাদের এই মিথ্যা বক্তব্যের জবাব দিতে আজকের এই সংবাদ সম্মেলন করে রাতাগুল গ্রামবাসী।

মিনহাজ উদ্দিন বলেন,গতকাল শনিবার সিলেটে আয়োজিত দুটি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে আমাদের হেয় প্রতিপন্ন করে বক্তব্য রেখেছেন বাগবাড়ী গ্রামের আব্দুর রশিদ তিনি রাতাগুল ঘাটের কোন মাঝি নন। তার বক্তব্য সম্পূর্ণ মিথ্যা বানোয়াট এবং উদ্দেশ্য প্রনোদিত। তিনি এলাকার কুখ্যাত চাঁদাবাজ ফখর উদ্দিনের মেম্বারের ডান হাত। সম্প্রতি ফখর মেম্বার রাতারগুল ঘাটে পর্যটকবাহী নৌকা থেকে প্রতি সপ্তাহে ৪ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করলে আমরা যারা নৌকার মাঝি তারা তা দিতে অপরাগতা প্রকাশ করি।

এতে ফখর মেম্বার ক্ষিপ্ত হয়ে তার গ্রামের রাস্তায় তার মনোনীত লোকজন দিয়ে রাতারগুলগামী পর্যটকবাহী গাড়ি আটকে চাঁদা দাবি করে। পর্যটকবাহী গাড়ি চাঁদা না দিলে পর্যটকদের দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র দিয়ে তার লোকজন ভয়ভীতি প্রদর্শন করে যাহা বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত আছে। এই চাঁদাবাজ, সন্ত্রাশীরা হলেন ফখর উদ্দিন মেম্বার, আব্দুর রশিদ, আরমান আলী, মনশাদ উদ্দিন, আব্দুল আহাদ, কামরুল ইসলাম, আব্দুল্লাহ মিয়া, আব্দুল ওয়াহিদ, আইযুব আলী, আব্দুল মতিন, আব্দুল মালিক, কয়ছর আহমদ উরফে বুতু, শরিফ উদ্দিন ও নজমুল হক। এ ঘটনায় আমরা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তাদের আসামী করে মামলা দায়ের করেছি। এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে সংবাদ সম্মেলনে মিথ্যা বক্তব্য রেখে আমাদের চরিত্রে কালিমা লেপন করেছে।

তিনি আরো বলেন, আমাদের রাতারগুল বাসী প্রায় এক হাজার বিঘা ফসলী ভূমি বন বিভাগ তাদের দখলে নিয়ে রবনায়ন করিলে আমার সাধারণ কৃষকেরা বেকার হয়ে পড়ি এতে বন বিভাগের সহযোগীতায় রাতারগুল ঘাট প্রতিষ্ঠা করে নৌকা চলিয়ে আমাদের জীবিকা নির্বাহের পথ তৈরী করি। এই ঘাটে আমরা ১৩২টি নৌকা নিয়ে প্রায় ৩০০ পরিবার লোকজন আমদের জীবিকা নির্বাহ করি। তদোপরী বিভিন্ন সময়ে অসময়ে আমাদের উপর চাঁদা দাবি করিলে, তাকে গরিবের কামাইয়ের টাকা দেয়ার প্রশ্নউ উঠেনা।

সংবাদ সম্মেলনে তারা বাগবাড়ি ও রামনগর গ্রামের যে ২৬টি নৌকা রাতারগুল ঘাটে নৌকা চালানোর দাবি তুলেছেন এই দাবিও সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। কারণ তারা চৌরুঙ্গি ঘাট বাগবাড়ী মৌজার ঘাট। বাগবাড়ী গ্রামের আব্দুর রশীদেরা নৌকা চালায় এবং ঘাট পরিচালনা করেন। এখানে তাদের কর্মসংস্থান আছে। অন্যদিকে চাাঁদাবাজ মেম্বার রাতারগুল ঘাটও তার বাহিনী দ্বারা পরিচালিত করার নিমিত্তে এই অপপ্রচার।

আমাদের রাতাগুল ঘাটে ১৩২টি নৌকা রাতারগুলের সুষ্ঠু ভাবে চলছে। যাহা উপজেলা প্রশাসনের দৃষ্টিগোচর আছে। এমনিতে পর্যটকও কম। তাই আয় রোজগারও নেই বললেই চলে। এ অবস্থায় তাদের বাগবাড়ী, রামনগর গ্রামের চৌরঙ্গীর ঘাট ছেড়ে তারা এখানে এসে নৌকা চালানোর অযৌক্তি দাবি তুলছে। অথচ তারা চৌরঙ্গির ঘাটে রাতারগুল গ্রামের কোন মাঝিকে নৌকা চালাতে দেয়না।

তিনি আরো বলেন, আমরা রাতারগুলবাসী সুখে দুঃখে উপজেলা যুবলীগ নেতা জুবায়ের আহমদকে আমাদের পাশে পাই। ঘাটের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে তিনি আমাদের সহযোগীতা প্রদান করেন। তাছাড়া তিনি আগামী নির্বাচনে ইউপি চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করবেন। আর তাই চাঁদাবাজ ফখর মেম্বার প্রতিহিংসা পরায়ন হয়ে তার বিরুদ্ধে বিষোদগার করেছেন। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে আপনাদের মাধ্যমে সবাইকে জানাতে চাই যে, জুবায়ের আহমদের কোন নৌকা ঘাটে সম্পর্ক নেই। তার নামে বা আমাদের কারও নামে চাঁদাবাজীর অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা বানোয়াট ও উদ্দেশ্য প্রনোদিত। তারা সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ তুলেছেন, প্রতি ট্রিপের ৭৫০ টাকা থেকে মাঝিদের মাত্র ২শ’ টাকা দেয়া হয়।

বাকী টাকা দিয়ে সাংবাদিক ও পুলিশ ম্যানেজ করার নামে আমরা আত্মসাত করি। এটিও সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমরা ঘাটে নৌকা চালাই। আমাদের ট্রিপের টাকা সাথে সাথেই আমরা পাই। অভিযোগের কোন বাস্তব ভিত্তি নেই। সরজমিনে ঘাটে গেলে এর প্রমাণ পাওয়া যাবে। এই বেপরোয়া ফখর মেম্বার চাঁদা না পেয়ে আজ আমাদের মানসম্মানের উপর আঘাত এনেছেন। তিনি তার সাঙ্গপাঙ্গদের দিয়ে গত ১৯ সেপ্টেম্বর ঘাটে আসা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে মতবিরোদ করেছেন। আর তার দোষ চাপিয়েছেন আমাদের উপর। এ ঘটনার জন্য সম্পূর্ণ দায়ী ফখর মেম্বার ও তার লোকজন। রাতারগুল গ্রামের কেউ এ ঘটনার সাথে মোটেও জড়িত নয়।

ফখর মেম্বারের চাঁদাবাজীর কারণে আমরা আজ অতিষ্ঠ। শুধু আমরাই নয়, পর্যটকবাহী গাড়ি আটকে দিয়ে তিনি ও তার লোকজন সিলেটের সম্মান ও ভাবমুর্তিতে আঘাত হেনেছেন। আমরা অবিলম্বে তাকে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানাই। পাশাপাশি আমাদের বিরুদ্ধে তার চালানো অপপ্রচারে কেউ বিভ্রান্ত না হওয়ারও আহবান জানান তারা।

-এটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ