ওমায়ের আহমদ।।
বর্তমান সময়ে এক মহামারির নাম পরকীয়া। বিবাহবহির্ভূত এমন অবৈধ সম্পর্কের কারণে সংসারে অশান্তি-ভাঙন সৃষ্টি হচ্ছে। এমনকি জঘন্য হত্যাকাণ্ডও সংঘটিত হচ্ছে। পুরুষ-নারী উভয়কেই পরকীয়ায় জড়িত থাকতে দেখা যাচ্ছে।
ইসলামের দৃষ্টিতে নারী-পুরুষ সবার জন্য পরকীয়া ও যেনা-ব্যভিচার অত্যন্ত জঘন্য গোনাহের কাজ। এটি কবিরা গোনাহ, মারাত্মক দণ্ডনীয় অপরাধ এবং ঘৃণিত কাজ। ইসলামে দণ্ডনীয় যত শাস্তি আছে, এরমধ্যে যেনা-ব্যভিচার তথা পরকীয়ার শাস্তিই সবচেয়ে কঠিন ও মারাত্মক।
সাক্ষ্যপ্রমাণ সাপেক্ষে এ অপরাধের দুটি শাস্তি। একটি হলো- অবিবাহিত অপরাধীর জন্য সর্বশক্তি প্রয়োগে ১০০ বেত্রাঘাত ও এক বছরের জন্য নির্বাসন তথা জেল। আর বিবাহিত অপরাধীর জন্য পাথর নিক্ষেপে মৃত্যু নিশ্চিত করা।
সুতরাং পুরুষ-নারী যেই পরকীয়ায় লিপ্ত হবে সে গোনাহগার হওয়ার পাশাপাশি শাস্তিযোগ্য অপরাধে অপরাধী বলে গণ্য হবে।
পরকীয়া থেকে বিরত রাখতে ১০ দিকনির্দেশনা
শরিয়তের দৃষ্টিকোণ ও আলেমদের মতামতের ভিত্তিতে মারাত্মক অপরাধ পরকীয়া, যেনা-ব্যভিচার থেকে নিজেদের রক্ষা করতে রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা।
স্বামীর সঙ্গে থাকা
স্ত্রী যদি প্রবল আশঙ্কা করে যে, স্বামীর অনুপস্থিতিতে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হবে না বা যেনা-ব্যভিচার ও পাপাচারে জড়িয়ে পড়বে; তাহলে শরিয়তের দৃষ্টিতে স্বামীর কাছে তার এ দাবি করার অধিকার আছে যে, হয় সে (স্বামী) তাকে (স্ত্রীকে) সঙ্গে করে বিদেশে নিয়ে যাবে। অথবা স্বামী তাকে রেখে একাকী বিদেশ বা দূরের সফর থেকে বিরত থাকবে।
কারণ বিয়ের অন্যতম উদ্দেশ্য হলো নিজের ইজ্জত-সম্ভ্রম হেফাজত করা এবং গোনাহের কাজ থেকে নিজেকে রক্ষা করা।
স্বামীর সঙ্গে যোগাযোগ রাখা
নিয়মিত স্বামীর সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে একে অপরের প্রতি সুসম্পর্ক ও ভালোবাসা অটুট রাখার সর্বোচ্চ চেষ্টা অব্যাহত রাখা।
অশ্লীল বিনোদন পরিহার করা
নাটক, সিনেমা, গান-বাজনা, অশ্লীলতা ও অসৎসঙ্গ তথা যৌন উত্তেজক সব মাধ্যম থেকে নিজেকে দূরে রাখা। কারণ যৌন উত্তেজক এসব বিষয়গুলো মানুষের মনে কু-প্রবৃত্তি ও কামনা-বাসনার আকাঙ্ক্ষাকে বাড়িয়ে দেয়। সুতরাং তা থেকে বিরত থাকা খুবই জরুরি।
গায়রে মাহরাম থেকে দূরে থাকা
মাহরাম নয়, এমন পরপুরুষের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ ও যোগাযোগ না রাখা। কেননা চারিত্রিক নির্মলতা ও মানসিক পবিত্রতা রক্ষায় এটি খুবই জরুরি।
আল্লাহকে ভয় করা
সর্বোপরি মহান আল্লাহকে বেশি বেশি ভয় করা। যেনা-ব্যভিচার, পাপাচার ও পরকীয়ার জন্য দুনিয়ার শাস্তির পাশাপাশি পরকালের জাহান্নামের শাস্তির কথা অন্তরে জাগ্রত রাখা। স্ত্রী অথবা স্বামীর আবেগ ও ভালোবাসাপূর্ণ কথাগুলো বেশি বেশি স্মরণ করা এবং প্রিয় মানুষটি ও নিজের জন্য আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করা।
বিবাহিত ও অবিবাহিত সব মুমিন-মুমিনা পুরুষ-নারীদের উচিত কুরআন সুন্নাহ নির্দেশিত শৃঙ্খলিত জীবন যাপন করা। আল্লাহর সাহায্য কামনা করা।
এনটি