আ.স.ম আল আমীন।।
হিংসা মানুষকে ধ্বংস করে, ঈর্ষা ও হিংসা প্রায় একই রকম আবেগ, তবে হিংসাকে বলা হয় ঈর্ষার চরম বহিঃপ্রকাশ। ঈর্ষাকাতরতা হিংসার পর্যায়ে চলে গেলে আক্রোশবশত মানুষ হত্যাকাণ্ড পর্যন্ত ঘটিয়ে ফেলতে পারে। হিংসুক ব্যক্তি অন্যের ভালো কিছু সহ্য করতে পারে না, কাউকে কোনো উন্নতি বা ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত দেখলে অন্তরে জ্বালা অনুভব করে।
এই জন্য আল্লাহ তায়া’লা তার প্রিয় হাবীব কে হিংসা থেকে পানা চাইতে বলেছেন। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে , এবং হিংসুকের অনিষ্ট থেকে যখন সে হিংসা করে"। (সূরা ফালাক : ৫) বর্তমান প্রেক্ষাপট তেমনি হয়ে দাড়িয়েছে , রাজনৈতিক প্রতিহিংসা বা সম্মানের প্রতিহিংসা যেন আজ সমাজে মহামারী আকার ধারণ করেছে।
আমরা সকলেই হযরত ইউসুফ আঃ এর ঘটনা সম্পর্কে অবগত আছি, এই ঘটনা অন্বেষণ কারীদের জন্য অনেক নিদর্শন রয়েছে, পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ইউসুফ ও তার ভাইদের কাহিনীতে জিজ্ঞাসুদের জন্য অবশ্যই অনেক নিদর্শন রয়েছে, ( সুরা ইউসুফ - ৭) হযরত ইউসুফ আঃ কে তিনার বাবা অনেক মহব্বত করতেন, এতে তার সৎ ভাইদের হিংসা জেগে ওঠে।
হিংসা তাদেরকে নিজ ভাই হযরত ইউসুফ আঃ কে হত্যা করার সংকল্প পর্যন্ত নিয়ে যায়, তারা ভেবে ছিল যদি হযরত ইউসুফ আঃ কে তারা হত্যা করতে পারে, তাহলে তারা নিজ বাবার কাছে সৎ ব্যক্তি হিসেবে রুপান্তরিত হবে। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে,তোমরা ইউসুফকে হত্যা কর অথবা তাকে কোন যমীনে ফেলে আস, তাহলে তোমাদের পিতার আনুকূল্য কেবল তোমাদের জন্য থাকবে এবং তোমরা সৎ লোক হয়ে যাবে’। ( সুরা ইউসুফ - ৯)
বর্তমান প্রেক্ষাপটে অনেক মানুষ রাজনৈতিক ও সম্মানের প্রতিহিংসার কারনে কাউকে হত্যা বা গুম করার সিদ্ধান্ত গ্রহন করেন। তৎকালীন সময়ে হযরত ইউসুফ আঃ কে হত্যা করতে না পেরে তাদের একজন তাকে কূপে নিক্ষেপ করার পরামর্শ দেন। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, তাদের মধ্য থেকে একজন বলল, ‘তোমরা ইউসুফকে হত্যা করো না, আর যদি কিছু করই, তাহলে তাকে কোন কূপের গভীরে ফেলে দাও, যাত্রীদলের কেউ তাকে তুলে নিয়ে যাবে’। (সুরা ইউসুফ - ১০)
এধরনের গুম করে খালি হয় কত মায়ের কোল শুনা যায় কত মানুষের আহাজারির কথা। তখন হযরত ইউসুফ আঃ এর আহাজারি দেখে তারা একটি নাটক সাজিয়ে নিয়ে আসে, পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, আর তারা তার জামায় মিথ্যা রক্ত লাগিয়ে নিয়ে এসেছিল। সে বলল, ‘বরং তোমাদের নফস তোমাদের জন্য একটি গল্প সাজিয়েছে। সুতরাং (আমার করণীয় হচ্ছে) সুন্দর ধৈর্য। আর তোমরা যা বর্ণনা করছ সে বিষয়ে আল্লাহই সাহায্যস্থল’। (সুরা ইউসুফ -১৮)
এটি তাদের বাবাকে বুঝ দেওয়ার জন্য নাটক সাজিয়ে নিয়ে আসা। এটি যে নাটক তাদের বাবা অনুভব করতে সক্ষম হয়েছে, আমাদের সমাজে যখন জালেমদের হাতে হত্যা ও গুমের ঘটনা ঘটে তখন তারা এধরণের নাটক সাজিয়ে নিয়ে আসে। তা বর্তমান মানুষ অনুভব করতে সক্ষম হয়, আর হযরত ইউসুফ আঃ এর ভাইয়েরা তাদের এই হিংসাত্মক কাজের জন্য সারাটি জীবন লজ্জিত হতে হয়েছে, বর্তমানে হিংসাত্মকভাবে যারা মানুষকে হত্যা ও ঘুম খুন করে যাচ্ছে। ইনশাআল্লাহ তারা ও দুনিয়া ও আখেরাতে প্রতি ক্বদমে ক্বদমে লজ্জিত হবে।
লেখক: শিক্ষার্থী, মা'হাদুল ইকতিসাদ ওয়াল ফিকহীল ইসলামী ঢাকা
-এটি