বেলায়েত হুসাইন।।
হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহুর শাসন আমলে দারুল খিলাফাহ কুফায় সরিয়ে আনেন। সে সময় একটি ঘটনা ঘটে। একবার তার একটি পাত্র হারিয়ে যায়। কয়েকদিন পর দেখা গেলো একজন ইহুদির হাতে সেই পাত্র। ইহুদিকে বলা হল পাত্র ফেরত দিতে। কিন্তু সে দাবি করে এই পাত্রের মালিক সে নিজে।
বাধ্য হয়ে হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু আদালতে মামলা করেন। আদালতে ইহুদী ও হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু উপস্থিত হন। কাযী শুরাইহ ইহুদীকে জিজ্ঞেস করেন, এই পাত্র কার? আমার ইহুদী জবাব দেয়।
কাযী বলেন, প্রমাণ দাও। ইহুদী বলল, এটি আমার আমার মালিকানায় আছে। এটিই প্রমাণ করে আমি এর মালিক।
এবার হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু বললেন আপনার কাছে কি প্রমাণ আছে যে, এটি আপনার?
হযরত আলী বললেন, আমার ছেলে হাসান জানে এটি আমার। আমার একজন দাসও এর ব্যাপারে জানে।
কাযী বললেন, আপনার দাসের সাক্ষ্য গ্রহণযোগ্য, তবে আপনার ছেলে হাসানের সাক্ষ্য নেয়া হবে না।
হযরত আলী বললেন আপনি কি হাদিস শোনেননি, নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, হাসান ও হুসাইন জান্নাতের সরদার!
কাযী শুরাইহ বললেন, হাদীসটি জানি,। তবে আপনার জন্য আপনার পুত্রের সাক্ষ্য গ্রহণযোগ্য হবে না।
সাক্ষ্য প্রমাণের জন্য দুইজন সাক্ষী দরকার, কিন্তু হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু নিজের দাস ছাড়া আর কারও সাক্ষী জোগাড় করতে পারলেন না। কাযী ইহুদীর পক্ষে রায় দিলেন।
রায় শুনে ইহুদি অত্যন্ত অবাক হলো। সে বলল, আসলে এই পাত্রের মালিক হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু। আমি পথে কুড়িয়ে পেয়েছি। তবে আপনাদের বিচার দেখে আমি অবাক হয়েছি। যে ধর্মে একজন শাসকের বিরুদ্ধে রায় দেওয়া হয় এবং একজন বিধর্মীর পক্ষে রায় দেওয়া হয় ইনসাফ প্রতিষ্ঠার স্বার্থে। সেই ধর্মই সত্য ধর্ম।
এ কথা বলে সে তখনই কালিমা পড়ে ইসলাম গ্রহণ করে। হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু খুশি হয়ে তাকে সেই পাত্রটি উপহার দেন।
তথ্যসূত্র: মাওলানা ইমরান রাইহান রচিত ‘সালাফের জীবন থেকে’ গ্রন্থ অবলম্বনে।
-এটি