আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন ও সহিংসতা নিয়ে কনটেন্ট পোস্ট করা যেসব অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, সেগুলোর রেকর্ড প্রকাশ করতে ফেসবুককে নির্দেশ দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের একটি ফেডারেল আদালত।
ওয়াশিংটন ডিসির আদালতের একজন বিচারক গতকাল এ সংক্রান্ত একটি রুল দিয়েছেন বলে আজ বৃহস্পতিবার বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
রুলের অনুলিপি অনুযায়ী, মুসলিম সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতনের মতো আন্তর্জাতিক অপরাধের জন্য মিয়ানমারকে বিচারের মুখোমুখি করতে তদন্তকারীদের তথ্য দিতে ব্যর্থ হওয়ায় ফেসবুকের সমালোচনা করেছেন বিচারক।
এর আগে, ব্যবহারকারীর তথ্য প্রকাশ করাকে মার্কিন আইন লঙ্ঘন উল্লেখ করে ফেসবুক সেসব অ্যাকাউন্টের তথ্য সরবরাহ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল।
তবে ফেডারেল আদালতের বিচারক বলেন, মুছে ফেলা পোস্টগুলো প্রকাশ করা আইনের লঙ্ঘন হবে না এবং ওই কনটেন্টগুলো শেয়ার না করা হলে 'রোহিঙ্গাদের উপর ঘটে যাওয়া ট্র্যাজেডিকে আরও ঘনীভূত করবে।'
এটা বিস্ময়কর যে ফেসবুক গোপনীয়তার অধিকারের কথা বলছে। অথচ, পত্রিকায় ফেসবুকের গোপনীয়তা বিষয়ক কেলেঙ্কারির ভয়াবহ ইতিহাস নিয়ে আলাদা বিভাগ আছে, রুলে বলা হয়।
তবে ফেসবুকের একজন মুখপাত্র বলেন, ‘প্রতিষ্ঠানটি এর আগেই এ বিষয়ে একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং সে অনুযায়ী ইতিমধ্যে মিয়ানমারের বিষয়ে জাতিসংঘের আরেকটি স্বাধীন তদন্ত সংস্থার কাছে ‘স্বেচ্ছায় ও আইনি প্রক্রিয়ায় তথ্য প্রকাশ’ করেছে।’
২০১৭ সালের আগস্টে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে অন্তত ৭ লাখ ৩০ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। সে সময়ে নিরীহ রোহিঙ্গাদের ওপর হত্যা ও নির্যাতন এবং গ্রামগুলোতে অগ্নিসংযোগের ঘটনার রেকর্ড বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থার কাছে আছে।
গাম্বিয়া মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গণহত্যা সংঘটনের অভিযোগ এনেছে এবং হেগের আন্তর্জাতিক আদালতে (আইসিজে) মিয়ানমারের বিরুদ্ধে বিচারকাজ পরিচালনা করতে তথ্য চেয়েছে।
২০১৮ সালে জাতিসংঘের মানবাধিকার অনুসন্ধানকারী দলের একজন সদস্য জানান, ওই ঘটনায় ফেসবুক বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্য ছড়িয়ে দিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে যা সহিংসতাকে উস্কে দিয়েছে।
গতকালের রায়ে মার্কিন বিচারপতি জিয়া এম ফারুকী বলেন, ফেসবুক ‘গণহত্যার প্ররোচনা’ দেয় এমন কনটেন্ট সরিয়ে ফেলে প্রথম পদক্ষেপ নিয়েছে, কিন্তু সেগুলো শেয়ার না করে ‘ভুল’ করেছে।’
তিনি বলেন, ‘সার্জন একটি টিউমার অপসারণ করে তা ফেলে দেন না, রোগ শনাক্তের জন্য সেটির প্যাথলজিকাল রিপোর্ট চান।’
জানতে চাওয়া কনটেন্টগুলো সম্পর্কে তথ্য না প্রকাশ করলে কীভাবে গুজব রটিয়ে রোহিঙ্গা গণহত্যার সৃষ্টি হলো তা অজানা থেকে যাবে এবং আইসিজেতে হিসাব বোঝার সুযোগ নষ্ট হয়ে যাবে, বিচারক বলেন।
-এটি