নাঈম উদ্দীন জামী।।
আমরা নেক আমল করতে চাই। কিন্তু পারি না। ফজরে নামাজ আদায়ের জন্য মোবাইলে এলার্ম দিয়েও উঠতে পারি না। যখন এলার্ম বেজে উঠে তখন কেটে আবার ঘুমিয়ে পড়ি। পরে যখন ঘুম ভাঙে তখন দেখি সকাল ৮/৯ টা বেজে গেছে।
যখন নামাজে দাঁড়াই তখন অলসতা চলে আসে, তাড়াহুড়া করে নামাজ শেষ করি। অথচ, যখন আমরা খোশগল্পে মত্ত হই তখন ঘন্টার পর ঘন্টা চলে যায় কিন্তু কোনো হুঁশ থাকে না।
আমাদের নফসে আম্মারা বা খারাপ নফস/ আত্মা আমাদের নেক আমল থেকে বাঁধা দেয়। এই নফস চায় সবসময় তার রাজত্ব চলবে। অন্য কারো কথা সে মানতে চায় না। আপনি যদি তার ধোঁকায় পরে নেক আমল থেকে বিরত থাকেন তবে আপনি তার কাছে হেরে গেলেন।
নফস তিন ভাগে বিভক্ত: ১. নফসে আম্মারা (প্রতারক আত্মা)
২. নফসে লাওয়ামাহ (অনুশোচনাকারী আত্মা)
৩. নফসে মুতামায়িন্নাহ (প্রশান্ত আত্মা)
ক. নফসে আম্মারা: যা মানুষকে মন্দ কাজে প্ররোচিত করে অর্থাৎ যে নফস মানুষকে কুপ্রবৃত্তি ও জৈবিক কামনার দিকে আকৃষ্ট করে।
খ. নফসে লাওয়ামাহ: যে নফস অন্যায় করার পর মানুষের হৃদয়ে অনুশোচনার উদ্রেক করে।
গ. নফসে মুতামায়িন্নাহ: যে নফস সকল কালিমা থেকে মুক্ত এবং যাবতীয় মহৎ ভাবনায় পরিতৃপ্ত।
নফসে আম্মারার ওপর বিজয়ের মূল হাতিয়ার: ইলমে দ্বীন হাসিলের মাধ্যমে অর্ন্তনিহিত অজ্ঞতাকে ভূলুন্ঠিত করে আমরা নফসের বিরুদ্ধে জিহাদ করতে পারি। কেননা, অজ্ঞতাই অন্যায় কাজ করার প্রতি উৎসাহ দেয়া ও তা সম্পাদন করার ক্ষেত্রে প্রধাব ভূমিকা পালন করে থাকে। আর উপকারী ইলমই নফসের বিরুদ্ধে জিহাদে অগ্রনী ভূমিকা রাখে।
নফসকে নিয়ন্ত্রণ করার আরো কিছু উপায় হলো: ১.অন্তরের অনুভূতি প্রবনতাকে আল্লাহর অস্তিত্ব ও অসীম কুদরতের মাধ্যমে জাগ্রত রাখা।
২.আল্লাহর সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ ও প্রহরার অনুভূতিকে অন্তরে জাগ্রত রাখা।
৩.অন্তরের মধ্যে সার্বক্ষণিক আল্লাহর ভয় ও তাকওয়ার অনুভূতিকে উজ্জীবিত রাখা।
৪.আল্লাহর ভালোবাসা ও সার্বক্ষণিক তাঁর সন্তুষ্টি লাভের অনুভূতিকে অন্তরে লালন করা।
৫.অন্তরে প্রশান্তি জাগ্রত রাখা এবং আল্লাহর ফয়সালা ও নির্ধারিত তাকদিরকে মেনে নেওয়া।
৬.আল্লাহর গোলামিকে শক্তভাবে আঁকড়ে ধরা।
৭.আল্লাহর ইবাদতে গভীর মনোযোগের মাধ্যমে আত্মার সজীবতা আনায়ন করা।৮.আল্লাহর অনুগ্রহরাজি নিয়ে চিন্তা গবেষণা করা।
এভাবে সর্বদা আল্লাহর সাথে সম্পর্ক রাখতে পারলে নফস বা আত্মা আমাদেরকে বিপথগামী করতে পারবে না। ইনশা আল্লাহ
লেখক: শিক্ষার্থী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।