আবদুল হান্নান মানছুর
রামগড়, খাগড়াছড়ি>
পাহাড়াঞ্চল কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের অফিস স্টাফ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুর সংবাদ কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের মসজিদের মাইকে প্রচার করাতে ইমাম এমদাদুর রহমান (মামুন) কে লাঞ্চিতের অভিযোগ উঠেছে গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড.এস এম ফয়সালের বিরুদ্ধে।
খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার রামগড়ের ঐতিহ্যবাহী সুনাম ধন্য সরকারি প্রতিষ্ঠান পাহাড়াঞ্চল কৃষি গবেষণা কেন্দ্রটি,১৯২০সালের মহুকুমা শহরের শুরু থেকেই এই প্রতিষ্ঠান রামগড়কে আলোকিত করে রেখেছে।
ইতিমধ্যে রামগড় পাহাড়াঞ্চল কৃষি গবেষণায় সরকারি নিয়মকানুন কে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে সরকারি গাছ কর্তন সহ অফিশিয়াল বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ ওঠে গবেষণার দপ্তর প্রধান ড.এস এম ফয়সাল অশ্রুর বিরুদ্ধে এসব সহ নানান অনিয়মের কারণে তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর ড.বাবুল চন্দ্র সরকার এর নেতৃত্বে ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছিলো তার বিরুদ্ধে, এবং তদন্তে ঘটনার সত্যতাও মিলেছে বলে জানা গেছে, এবং দাপ্তরিক আইন অনুযায়ী তদন্তের কাজ এখনো চলমান রয়েছে।
ড.এস এম ফয়সাল অফিস স্টাফ সহ পদস্থ কর্মকর্তাদের জিম্মি করে তার ব্যক্তিগত ক্ষমতা দেখিয়ে অফিস চালাচ্ছেন বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কিছু স্টাফ, শ্রমিক এবং পদস্থ কর্মকর্তাদের অভিযোগ ড.এসএম ফয়সাল রামগড় পাহাড়াঞ্চল কৃষি গবেষণা কেন্দ্রে যোগদানের পর থেকেই বিভিন্ন কায়দায় শ্রমিক স্টাপ, এবং মসজিদের ইমান মোয়াজ্জেন কে হেনেস্থা করে চলেছেন বলে অভিযোগ তোলেন কর্মরতরা।
ইমামকে হেনস্থার বিষয়টি মসজিদের অস্থায়ী কমিটির সদস্যরা অবগত রয়েছেন বলেও নিশ্চিত হওয়া গেছে, কৃষি গবেষনার অধিনস্থ মসজিদের ইমাম মাওলানা ইমদাদুর রহমান মামুনের উপর বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন উপায়ে অকথ্য ভাষা প্রয়োগ ইমামতির বাইরেও বাসার চাকরের মতো ব্যবহার দিয়ে বিভিন্ন কাজ করিয়ে নিয়েও ইমদাদুরকে অপমান অপদস্থের চরমে রেখেছে এ কর্মকর্তা।
মাওলানা ইমদাদুর রহমান মামুন গনমাধ্যমে দেওয়া এক লিখিত প্রেস ব্রিফিং এ জানান,গত কয়েক মাস পূর্বে কৃষি গবেষনায় কর্মরত বৈজ্ঞানিক সহকারী মোহাম্মদ করিম মন্ডল মারা যাওয়ার পর স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন শেষ বিদায়ের বন্ধুর সদস্যদের মাধ্যমে গোসল ও জানাজার বন্দবস্ত করার পর তার লাশ গ্রামের বাড়ি পাঠানোর ব্যাবস্থা করে দেওয়ার কারণে গবেষণার দপ্তর প্রধান ড.এস এম ফয়সাল আমাকে অর্কথ্য ভাষায় গালি গালাজ করেন।
কেন আমি করিম মন্ডলকে গোসল করালাম, কেন এম্বুলেন্স ঠিক করলাম? বৈজ্ঞানিক সহকারী করিম মন্ডলের স্ত্রী এবং ছোট সন্তানদের প্রতিও ড.এস এম ফয়সাল সাহেব অমানবিক আচরণ করেছেন, তার মৃত্যুর পর তার স্ত্রী সন্তানকে সরকারি কোয়ার্টারে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিলেন তিনি, এমনকি তিনি তার অধীনে কর্মরত হই স্টাফকে শেষ বারের মত দেখতেও অফিস থেকে বাহিরে আসেনি, পরে রামগড় হাসপাতাল থেকেই তার লাশ গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহ পাঠানো হয়।
মাওলানা এমদাদুর রহমান( মামুন )আরো বলেন, ২সেপ্টেম্বর (বৃহস্পতিবার) পাহাড়াঞ্চল কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের অফিস স্টাফ মুজিবুর রহমান ইন্তেকাল করেন, তিনি দীর্ঘদিন কৃষি গবেষনায় চাকরীকালে এলাকার মানুষের মতই চলাফেরা করেছিলেন, এবং তার ৩ মেয়ের জামাতার বাড়িই রামগড়ে।
আমি তার ইন্তেকালের বিষয়টি মসজিদের মাইকে”র মাধ্যমে প্রকাশ করলে সকাল ৭টার সময় কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও মসজিদ কমিটির সভাপতি ড.এস এম ফয়সাল আমাকে মসজিদ থেকে ডেকে নিয়ে বৈজ্ঞানিক সহকারী হাসান, গাড়ির ড্রাইভার মোস্তাফা, ক্যাশিয়ার সেলিম এর উপস্থিতিতে বিভিন্ন খারাপ ভাষায় গালিমন্দ করেন, আমি কেন তার অনুমতি ছাড়া মুজিবুরের মৃত্যুর খবর মাইকে বললাম, আমি এবিষয়ে তার কাছে সরি বলে মাফ পযর্ন্ত চেয়েছি, তবুও তিনি আমার সাথে খারাপ আচারণ করেই যাচ্ছেন, তিনি আমার মুখের দাঁড়ি নিয়েও কটাক্ষ করেন।যে ভাষায় তিনি আমাকে গালি গালাজ করেছেন তা ভাষায় প্রকাশ করার মত না, এত বড় অফিসারের মুখে এসব ভাষা মানায় না ড.এসএম ফয়লাস মসজিদের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে যোগদানের পর থেকেই আমাকে অপমান অপদস্ত করে আসছে, বার বার হুমকি দিচ্ছে আমাকে মসজিদ থেকে চাকুরীচ্যুত করবে। অফিসের সবাইকে তিনি সব সময় ভয় আতঙ্কে রাখেন,অফিসের কোন লোকের কাছে কোন বিষয়ে সহযোগিতা পাওয়া যায় না, সবাই ফয়সাল সাহেবের ভয়ে মুখ বন্ধ রাখেন।
এবিষয়ে জানতে চাইলে ক্যাশিয়ার মোঃ সেলিম, বৈজ্ঞানিক সহকারী স্বপন হাসান, চাকুরী জনিত কারণে কোন বক্তব্য দিতে রাজি হননি।
ইমাম লাঞ্ছিত হওয়ার বিষয়টি নিয়ে খাগড়াছড়ি কওমী মাদ্রাসা ও ওলামা ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক, মুফতি রবিউল ইসলাম শামীম ও শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক, মাওলানা মহিউদ্দিন বিন সুরুজের নিকট মন্তব্য জানতে চাইলে তারা বলেন বিষয় নিয়ে সংগঠনের সভাপতি, অন্যান্য দায়িত্বশীল ও রামগড় উপজেলা শাখার দায়িত্বশীলদের সাথে আলোচনা চলছে আলোচনার ভিত্তিতে পদক্ষেপ নেয়া হবে।
এ বিষয়ে সংগঠনটির যুগ্ম সম্পাদক, মাওলানা শহিদ উল্লাহ বলেন, আমরা রামগড়ের স্থানীয় বাসিন্দা আমরা কখনো চাইনা আমাদের আশপাশে কখনো কোন আলেম লাঞ্ছিত হোক, আমরা বিষয়ে প্রশাসনের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নিকট অনতিবিলম্বে বিচার চাই, যদি অনতিবিলম্বে কোন পদক্ষেপ না নেয় আমরা আলোচনা সাপেক্ষ্যে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দিবো, ইনশাআল্লাহ।
-এটি