মুযযাম্মিল হক উমায়ের: একবার হযরত বাহলুল রাহিমাহুল্লাহু তাআলার সাথে বাদশাহ হারুনুর রশীদের সাক্ষাত হয়৷ হারুনুর রশীদ তাঁকে উদ্দেশ্য করে বলেন, অনেকদিন যাবত আপনার সাথে সাক্ষাত করার আমার কামনা-বাসনা ছিলো৷ হযরত বাহলুল রাহিমাহুল্লাহু তাআলা বলেন, আপনার সাথে দেখা করার তো আগ্রহ আমার মনে কখনো উদয় হয়নি৷
বাদশাহ তার কাছে কিছু নসিহত শোনার আবদার করেন৷ তিনি বাদশাহকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘আমি কী নসিহত করবো৷ তবে এইযে অট্টালিকাগুলো দেখছেন৷ এইযে মহল্লাগুলো৷ সেখানে নামিদামী যারা বসবাস করতো, তাদের বর্তমান ঠিকানা হলো ঐযে দেখা যায় কবরস্থান সেখানে৷ এর চেয়ে বড় কোন আর নসিহত হতে পারে না৷ তাদের চলে যাওয়া জীবন নিয়ে চিন্তা করলে অন্যকোন নসিহতের প্রয়োজন পড়ে না’৷
তারপর বাদশাহকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘হে আমীরুল মুমিনীন! আপনি ভেবেছেন আপনার অবস্থা কেমন ভয়াবহ হবে, যখন আপনাকে বিচার দিনে উলঙ্গ অবস্থায়, নগ্ন পায়ে, পিপাসার্ত অবস্থায় আল্লাহ তাআলার সামনে দাঁড়াতে হবে৷ ছোট থেকে ছোট বিষয়েও আপনাকে আল্লাহ তাআলার কাছে জবাব দিতে হবে৷ লোকজন চেয়ে চেয়ে আপনাকে দেখবে আর হাসতে থাকবে’৷
এই নসিহত শুনে বাদশাহ কাঁধতে শুরু করে দেন৷ কাঁধতে কাঁধতে হেঁচকি দিতে শুরু করেন৷ ধুকধুক করে কান্না করতে থাকেন৷
হযরত বাহলুল রাহিমাহুল্লাহু তাআলা মুস্তাজাবুদ্দাওয়াহ বুযুর্গ ছিলেন৷ বাদশাহ একবার তার কাছে কিছু হাদিয়া প্রেরণ করেন৷ তিনি সেগুলো ফিরিয়ে দেন৷ এবং বলে দেন, আপনি এগুলো যাদের কাছ থেকে নিয়েছেন, তাদেরকে ফিরিয়ে দেন যেনো হাশরের দিন এই ব্যাপারে আপনার জবাবদিহী করতে না হয়৷ আর সেদিন আপনার কাছে পাওনাদারকে সন্তুষ্ট করার মতো কোন পাথেয়ও থাকবে না৷
বাদশাহ হারুনুর রশীদ এই কথা শুনে কাঁধতে শুরু করেন৷ বাদশাহ হারুনুর রশীদ নিজেও বড় আলেম ছিলেন৷ হাদীস বিশারদ ছিলেন৷ সুবিচারক বাদশাহ ছিলেন৷ সূত্র: আকওয়ালে সালফ
-এটি