মুযযাম্মিল হক উমায়ের।।
যরত রবী বিন খায়শাম রহ তিনি একজন তাবিয়ী ছিলেন৷ লোকজনের উদ্দেশ্যে তিনি বলতেন, হে ভাইয়েরা! তোমরা নিজের নফসের উপদেশ প্রদানকারী হও৷ অন্যথায় তোমরা ধ্বঃস হয়ে যাবে৷
হযরতের প্যারালাইসিসের সমস্যা ছিলো৷ লোকেরা চিকৎসা করা বললে তিনি উত্তর করেন, ‘আমি জানি চিকৎসা করা প্রয়োজন৷ কিন্তু এও জানি যে কিছুক্ষণ পর না অসুস্থ বাকী থাকবে না চিকিৎসক বাকী থাকবে৷ অর্থাৎ মৃত্যু চলে আসবে৷ সুতরাং চিকিৎসা করে লাভ কী?
তিনি গোপনে ইবাদত করতেন৷ শুধু ঘরের লোকজন জানতো৷ বাইরের কেউ হযরতের ইবাদত সম্পর্কে জানতে পারতো না৷ একবার কুরআনুল কারীম তিলাওয়াত অবস্থায় একলোক হযরতের কাছে চলে আসে৷ তিনি সাথে সাথেই কুরআনুল কারীমকে জামার আস্তিনে লুকিয়ে ফেলেন৷
তিনি বলতেন, যে আমলে আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি লক্ষ্য থাকে না সেই আমল বিনষ্ট হয়ে যায়৷ উক্ত আমলে কষ্ট ছাড়া কোন কিছু অর্জিত হয় না৷
লোকজনের সাথে ওঠাবসা করার কারণে যখন নিজের মধ্যে পরকালের ব্যাপারে উদাসীনতা অনুভব করতেন, তখন তিনি কবরস্থানে চলে যেতেন৷ এবং সারা রাত ইবাদতে কাটাতেন৷ সকাল বেলায় মনে হতো তিনি কবর থেকে বের হয়ে আসছেন৷
তিনি মাজুর অবস্থায় দুই ব্যক্তির কাঁধে ভর করে মসজিদে জামাতের সাথে নামায আদায় করার জন্যে কষ্ট করে প্রত্যেহ যেতেন৷ লোকেরা বলতো, হযরত! এখন তো আপনার বেলায় মাসআলার শীতলতা আছে৷ এহেন অবস্থায় কষ্ট করে মসজিদে না আসলেও পারেন৷ উত্তরে বলেন, যখন মুআজ্জিন হায়্যা আলাস সালাহ বলে ডাক দেন, সেই ডাক শুনে যদি আমি মসজিদে না যাই, তখন আল্লাহ তাআলার কাছে কী জবাব দিবো? এইভেবে তখন আর ঘরে বসে থাকতে পারি না৷ অস্থির হয়ে মসজিদে চলে আসি৷
তিনি নিজের ঘর নিজেই ঝাড়ু দিতেন৷ পরিবারের কেউ এই কাজ করার সুযোগ পেতো না৷ তিনি বলতেন, আমি এইরকম সাদাসিদে জীর্ণ অবস্থায় জীবন অতিবাহিত করতে পছন্দ করি৷
তিনি বলতেন, আমরা এমন এমন মহান মানুষদেরকে পেয়েছি৷ তাঁদের জীবন পরিচালনা দেখছি, যাদের বিপরিতে আমাদেরকে চোর মনে হয়৷
তিনি হযরত মুআবিয়া রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহুর খেলাফতের সময় ৬৭ হিজরীতে ইন্তিকাল করেন৷ আল্লাহ তাআলাকে তাঁকে জান্নাতে সর্বোচ্চ মাকাম দান করুন৷ আমীন৷ সূত্র: আকওয়ালে সালফ
-এটি