আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: রোহিঙ্গাদের অন্তত দুই প্রজন্ম বাংলাদেশে বেড়ে উঠেছে কোন রাষ্ট্রপরিচয় ছাড়া। নিজেদের শাসকদের অত্যাচার-নিপীড়নে দেশ ছেড়েছেন পূর্ব পুরুষরা।
রেখে এসেছেন বিপুল সম্পত্তি। অস্থায়ী আশ্রয় নিতে এসে কক্সবাজারের শিবিরে পার করেছেন যুগেরও বেশি সময়। ভাসানচরে এসে কারো কারো জীবনে স্বাচ্ছন্দ্য এসেছে ঠিকই। কিন্তু দেশ-পরিচয়হীন থাকার কষ্টটা কমেনি।
মাথার উপর ছাদ আছে ঠিকই। কিন্তু এই ঘর, এই আশ্রয় সাময়িক। সাড়ে চার বছরের শিশুটি বড় হয়ে জানবে তার কোন দেশ নেই। নিজস্ব পরিচয় বলতে শুধু নামটুকুই।
গত ডিসেম্বরে কক্সবাজারের উখিয়া ক্যাম্প থেকে ভাসানচরে আসেন এক রোহিঙ্গা। মিয়ানমারের সরকারি বাহিনীর হাতে লাঞ্চিত হয়েছেন, হারিয়েছেন কাছের স্বজন। সীমান্ত পার হয়ে প্রাণ বেঁচেছে। কিন্তু দেশে ফেলে রেখে এসেছেন দোতলা বাড়ি, ফসল ভরা ক্ষেত, আর মাছভরা পুকুর।
৯০ এর দশক থেকেই মিয়ানমারে নিপীড়নের শিকার রোহিঙ্গারা। ঐ সময়েই বাংলাদেশে আসেন দেশটির অগণিত নাগরিক। ক্যাম্পেই পেতেছেন সংসার। অনেকেরই জন্ম হয়েছে ঐ ক্যাম্পে। তারাও এখন বাবা মা হয়েছেন। কিন্তু সংশয়, নিজেদের নাগরিকহীন পরিচয়ের যন্ত্রণা বয়ে নিতে হতে পারে পরের প্রজন্মকেও।
এক রোহিঙ্গা নারী বলেন, 'অনেক খারাপ লাগে এসব ভেবে। এখানে কোন কাগজপত্র নেই, ছেলে-মেয়েরা পড়াশুনা কীভাবে করবে, বড় হয়ে তারা করবেই বা কী! বার্মার নাগরিকত্ব পাবে নাকি বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পাবে এসব নিয়ে চিন্তা করি।
বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার তথ্য বলছে, প্রতিবছর গড়ে ত্রিশ হাজার রোহিঙ্গা শিশুর জন্ম হচ্ছে বাংলাদেশে। তাদের কারোরই আপাতত কোন দেশ নেই।
-এটি