ফরহাদ খান নাঈম ।।
আত্মহত্যা করা একটি কবিরা গুনাহ এবং যে ব্যক্তি আত্মহত্যা করতে চায়, তার ব্যাপারে শরীয়তে অত্যন্ত কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করা হয়েছে। তবে আত্মহত্যা করলে কোনো ব্যক্তি ইসলাম থেকে বের হয়ে যায় না।
আত্মহত্যার ব্যাপারে কোরআনে বর্ণিত হয়েছে- তোমরা নিজেদের হত্যা করো না, নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের প্রতি পরম দয়ালু এবং যে কেউ সীমা লঙ্ঘন করে অন্যায়ভাবে তা (আত্মহত্যা) করবে, তাকে অগ্নিতে দগ্ধ করবো; এটা আল্লাহর পক্ষে সহজ। ’ সূরা নিসা: ২৯-৩০
নবীজির সা. সুন্নাহ অধ্যায়ন করলে জানা যায়, আত্মহত্যাকারীর জানাজায় সাধারণ মানুষ অংশগ্রহণ করবে; তবে সমাজের অভিজাত শ্রেণীর ব্যক্তিবর্গ যেমন- কোনো আলেম, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, বিশিষ্ট সামাজিক ব্যক্তিত্ব উক্ত জানাজায় অংশগ্রহণ করবে না। এই নিষেধাজ্ঞার উদ্দেশ্য হচ্ছে আত্মহত্যাকে একটি ঘৃণ্য অপরাধ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা এবং অন্যদেরকে এ থেকে বিরত রাখা।
তবে প্রকাশ্যে সবার সঙ্গে আত্মহত্যাকারীর জানাজা সালাতে অংশগ্রহণ না করলেও ব্যক্তিগতভাবে তার জন্য দোয়া করা যায়।
জাবির ইবনু সামুরাহ রা. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট জনৈক ব্যক্তির লাশ উপস্থিত করা হলো। সে চ্যাপ্টা তীরের আঘাতে আত্মহত্যা করেছে। কিন্তু রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার জানাযার সালাত আদায় করেননি। মুসলিম: ৯৭৮
ইমাম নববী রহ. বলেন, উক্ত ব্যক্তির জানাজায় নবীজির সা. অংশগ্রহণ না করা আত্মহত্যাকারীর জানাজায় সাধারণভাবে অংশগ্রহণ না করার দলিল নয় বরং এর উদ্দেশ্য হচ্ছে আত্মহত্যাকে একটি ঘৃণ্য ও গুরুতর অপরাধ হিসেবে দেখানো। তাছাড়া উক্ত ব্যক্তির জানাজায় নবীজি সা. অংশগ্রহণ না করলেও সাহাবায়ে কেরামের রা. অংশগ্রহণে জানাজা সম্পন্ন হয়েছিলো। কারণ আত্মহত্যা করার মাধ্যমে কোনো ব্যক্তি কাফির হয়ে যায় না।
তাই আত্মহত্যাকারীর গোসল, দাফন-কাফন অন্যান্য মুসলমানের মতোই হবে, এবং জানাজা শেষে তাকে মুসলমানদের কবরস্থানে কবরস্থ করতে হবে। কেননা আত্মহত্যা করার দ্বারা সে কবীরা গুনাহে লিপ্ত হয়েছে; কিন্তু ইসলামের গণ্ডি থেকে বের হয়ে যায়নি। মাজমুউল ফতোয়া: ১৩/১২২।
-এটি