আশিক আল-হুসাইনী।।
শয়তান মানুষকে আলস্য ও উদাসীনতার বিষাক্ত অষুধ সেবন করিয়ে রেখেছে। সকলের চোখে এই পট্টি বেঁধে দিয়েছে- ❝আমোদ ফুর্তি যা করার এখনই করে নাও, শেষ বয়সে তাওবা করে নিও, কারণ আল্লাহ তাআলা বড় ক্ষমাশীল, বড় দয়ালু, সব গুনাহ ক্ষমা করে দিবেন।❞
অবশ্যই আল্লাহ তাআলা বড় ক্ষমাশীল ও দয়ালু তবে তাদের জন্যে যারা পূর্ব কৃতকর্মের ব্যাপারে অনুতপ্ত। আর সর্বদা তারা এ ভাবনায় তাড়িত থাকে যে- ভবিষ্যতের ব্যাপারে তো দৃঢ় সিদ্ধান্ত হয়ে গেলো, আগামীতে কিছুতেই আর কোনো গুনাহ হবে না। কিন্তু অতীতে কৃত গুনাহ ও অপরাধের কী হবে?
তো কেবল তাদের জন্যেই আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ❝অতীতের কৃত গুনাহ আল্লাহ তাআলা মাফ করে দিবেন।❞
অতীতের গুনাহ মাফ করে দেওয়ার অঙ্গিকার করেছেন কিন্তু ভবিষ্যতে গুনাহ করার কোথাও তো অনুমতি দেননি। বর্তমান মানুষের মাথায় এই বাতিল ও বিভ্রান্তি জেঁকে বসেছে যে, আল্লাহ তাআলা ক্ষমা করে দিবেন এই ভরসায় গুনাহ ত্যাগ করি না। যা সম্পূর্ণ ভুল।
মনে রাখবেন! তাওবা হলো মলমের মতো আর গুনাহ হলো আগুনের মতো। মলম তো এজন্যই যে, ঘটনাক্রমে যদি দেহের কোনো অঙ্গ আগুনে ঝলসে যায় তাহলে তৎক্ষনাৎ মালিশ করে দেওয়া হবে। মলম এজন্য নয় যে, মলম আছে এই ভরসা করে ইচ্ছাকৃতভাবে আগুনে অঙ্গ প্রতঙ্গ ঝলসাবে।
তাওবার ভরসায় জেনে বুঝে গুনাহে ডুবে থাকা ব্যক্তি ঈমান হারানো প্রবল আশংকা রয়েছে। তাই তাওবার ভরসায় গুনাহ করতে থাকা চরম ধৃষ্টতা ও চূড়ান্ত মূঢ়তা।
যে ব্যক্তি কোনো পাপ ও অপরাধ ত্যাগ করতে চায় তার জন্য এই এক তদবিরই যথেষ্ট যে, যখনই কোনো গুনাহ হয়ে যাবে তখনই তা থেকে তাওবা করে নিবে। মৃত্যুর দুয়ারে দাঁড়িয়ে আর তাওবা করার কোনো সুযোগ নেই। তখন শুধুই আপসোস আর আক্ষেপ করতে হবে।
তবে তাওবা ঠিক ঐ পদ্ধতিতেই হতে হবে যে পদ্ধতি মহান আল্লাহ তাআলা ও রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মাধ্যমে আমরা পেয়েছি। হাদীসের ভাষ্য অনুযায়ী সে পদ্ধতি হচ্ছে- প্রথমে অজু করুন, তারপর দু’রাকাআত নফল নামাজ পড়ুন। আর মন-দিল দিয়ে আল্লাহর কাছে দোয়া করুন। পূর্বের কৃতকর্মের উপর লজ্জিত হয়ে ভবিষ্যতে এমন কাজ না করার প্রতিজ্ঞা গ্রহণ করুন।
আমরা সবাই এখনই তাওবা করি। অতীতের কৃতকর্মের উপর লাঞ্চিত ও অনুতপ্ত হয়ে রবের কাছে ভবিষ্যত জীবনে গুনাহে লিপ্ত না হওয়ার দৃঢ় সংকল্প করি।
লেখক: অধ্যায়ণরত; জামিয়াতু ইবরাহীম মাহমুদনগর, সাইনবোর্ড, ঢাকা।
-এএ