আন্তর্জাতিক ডেস্ক: জার্মানির লেভারকুজেনে একটি রাসায়নিক কারখানায় বিস্ফোরণের পর আগুন লেগেছিল গত মঙ্গলবার। সেই আগুন নিয়ন্ত্রণে আসলেও আতঙ্ক কাটেনি। শহরটিতে এখনো ঘরবন্দি সাধারণ মানুষ। বেড়েছে মৃত এবং অসুস্থদের সংখ্যা। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, বিস্ফোরণের পর বিষাক্ত গ্যাস ছড়িয়ে পড়েছে এলাকাটিতে।
জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়েচে ভেলের খবর অনুসারে, মঙ্গলবার লেভাকুজেনের ওই রাসায়নিক কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের পর প্রাথমিকভাবে তিনজনের মৃত্যুর খবর দেয়া হয়েছিল। কিন্তু বৃহস্পতিবার পর্যন্ত তাতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে সাতজনে। আহত হয়েছেন আরও অনেকে।
বিশেষজ্ঞদের ধারণা, আগুন লাগার পর ধোঁয়ার যে কুণ্ডলী তৈরি হয়েছিল, তার সঙ্গে ক্ষতিকর গ্যাস এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে। অ্যামোনিয়াযুক্ত সেই গ্যাসে আক্রান্ত হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন স্থানীয়রা। অনেকেরই শ্বাসকষ্ট শুরু হয়েছে।
ওই কারখানার এক কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা ডিপিএ’কে জানিয়েছেন, বিস্ফোরণের পর যে গ্যাস ছড়িয়ে পড়েছে, তা মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর। এর প্রভাবে মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়তেই পারে।
বিপদ বুঝে লেভারকুজেনের বাসিন্দাদের আপাতত ঘরে থাকার নির্দেশ দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। অতি জরুরি দরকার ছাড়া ঘরের বাইরে না যেতে অনুরোধ জানানো হয়েছে সবাইকে। এমনকি, এই মুহূর্তে বাগান থেকে কিছু তুলে খেতেও নিষেধ করা হয়েছে। কারণ, গ্যাসের প্রভাবে ফসল বিষাক্ত হয়ে গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
কারখানা কর্তৃপক্ষের দাবি, স্টোররুমে কয়েকটি রাসায়নিকের ড্রামে প্রথমে আগুন লাগে, পরে তা সবখানে ছড়িয়ে পড়ে। আগুন লাগার পরপরই কালো ধোঁয়ায় ভরে যায় গোটা এলাকা। এরপর থেকে গ্যাসের গন্ধে ভরে রয়েছে জায়গাটি।
কয়েক দশক আগে ভারতের ভোপালে এধরনের একটি রাসায়নিক কারখানায় আগুন লেগেছিল। ওই ঘটনায় বহু মানুষের মৃত্যু হয়, পঙ্গু হয়ে যান অনেকে। এত বছর পরেও সেখানে বিকলাঙ্গ শিশুদের জন্ম হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, বিস্ফোরণের পর অনেকদিন পার হলেও বিষাক্ত গ্যাস থেকে গেছে ওই এলাকায়, তার প্রভাবেই বিকলাঙ্গ শিশুদের জন্ম হচ্ছে।
ভোপাল গ্যাস দুর্ঘটনার তদন্তকারী এক কর্মকর্তা ডয়েচে ভেলেকে জানিয়েছেন, একবার এ ধরনের বিষাক্ত গ্যাস বাইরে বেরিয়ে এলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে বহু বছর লেগে যায়। তবে জার্মানিতে যে ধরনের গ্যাস ছড়িয়েছে, তা অতটা বিষাক্ত নয় বলে মত বিশেষজ্ঞদের।
এনটি