কাজী ওয়াদুদ নওয়াজ।। ‘মীজানে’র শাব্দিক অর্থ হলো দাঁড়ি পাল্লা- ওজন করার যন্ত্রবিশেষ। যা সাধারনতঃ পণ্য ক্রয়-বিক্রয়ের কাজে ব্যবহার করা হয়।
আপাতঃ দৃষ্টিতে এটি খুব সাধারন মনে হলেও পবিত্র কোরানে এর গুরুত্ব অপরিসীম।পার্থিব জীবনে ব্যবসায়িক লেনদেনের ক্ষেত্রে ও পরকালে ইহকালের যাবতীয় কৃতকর্ম পরিমাপ ও হিসাব-নিকাশে কোরান এর ব্যবহারের উপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেছে। সমগ্র সৃষ্টি-জগত সংরক্ষন,প্রশাসন ও ভারসাম্য রক্ষায় কোরান একে শক্তিশালী বস্তুগত ও আধ্যাত্মিক হাতিয়ার রূপে গণ্য করে।
এই প্রবন্ধটিতে বিশ্ব-প্রকৃতিতে “ মীজানের” ব্যাপ্তি, প্রতিফলন ও গুরুত্ব সম্পর্কে কোরানের ধারনাগত অবস্থান তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে। আমরা এখানে এর সংগে সংশ্লিষ্ট কোরানের কয়েকটি আয়াত আলোচনার জন্য বেছে নিচ্ছি।
এই আয়াত গুলি হলোঃ সুরা আর- রহমানের ৭ থেকে ৯ নং আয়াত, সুরা আয-যুমারের ৫নং আয়াত, সুরা আল-মুলকের ৩ থেকে ৪ নং আয়াত, সুরা হা-মীম আস্-সাজদাহর ৫৩ নং আয়াত,সুরা আল্-আম্বিয়ার ৪৭ নং আয়াত , সুরা আল্-আ’রাফের ৮ থেকে ৯ নং আয়াত, সুরা আস্-সাজদার ৭ থেকে ৯ নং আয়াত ও সুরা ছোয়াদের ৭১ থেকে ৭২ নং আয়াত।
এ সমস্ত আয়াত গুলিতে স্রষ্টা ও সৃষ্টি-জগতের একচ্ছত্র অধিপতি হিসাবে আল্লাহর গুনাবলী ও নিদর্শন সমূহের ব্যাখ্যা করা হয়েছে।নিম্ন বর্ণিত ১-৮ ক্রমিক নং এর আয়াত গুলির বিষয় বস্তু পর্যালোচনা করলে বুঝা যায় কোরানে উল্লিখত ‘মীজানের’ ধারনাটি একটি বহূ-মাত্রিক ধারনা। সমগ্র বিশ্ব-জগত,মানু্ষ, মানুষের ইহকাল-পরকাল সব কিছুই এর আওতাধীন।
১। আসমান-তাকে তিনি সমুন্নত করে রেখেছেন এবং মহাশূন্যে তার ভারসাম্যের জন্য তিনি একটি মানদণ্ড স্থাপন করেছেন।যাতে করে তোমরা কখনো আল্লা পাকের নির্ধারিত এই মানদণ্ডের সীমা অতিক্রম না করো। (সুরা আর- রহমান : আয়াত ৭ – ৯)
২। তিনি আসমান ও যমীন সুপরিকল্পিত ভাবেই সৃষ্টি করেছেন, তিনি রাতকে দিনের ওপর ও দিনকে রাতের ওপর লেপ্টে দেন, তিনিই সূর্য্য ও চন্দ্রকে একটি নিয়মের অধীন করে রেখেছেন; এগুলো সবই একটি সুনির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত নিজ নিজ কক্ষপথে বিচরন করতে থাকবে;জেনে রেখো তিনি পরাক্রমশালী ও পরম ক্ষমাশীল। (সুরা আয-যুমার: আয়াত-৫)
৩। তিনিই সাত আসমান বানিয়েছেন, পর্যায়ক্রমে একটার ওপর আরেকটা স্থাপন করেছেন; অসীম আল্লাহ পাকের এ নিপুণ সৃষ্টির কোথাও কোনো খুঁত আপনি দেখতে পাবেননা; আবার তাকিয়ে দেখুনতো, কোথাও কি আপনি কোনো ফাটল দেখতে পান? অতঃপর আপনার দৃষ্টি ফেরান আসমানের প্রতি, দেখুন আরেকবারও আপনার দৃষ্টি ফেরান দেখবেন আপনার দৃষ্টি ব্যর্থ ও ক্লান্ত হয়ে আপনার দিকেই ফিরে আসবে। (সুরা আল-মুলক: আয়াত-৩-৪)
৪। অচিরেই আমি আমার কুদরতের নিদর্শনসমূহ দিগন্ত বলয়ে প্রদর্শন করবো এবং তাদের তাদের নিজেদের মধ্যেও তা দেখিয়ে দেবো যতক্ষন পর্যন্ত তাদের কাছে এটা পরিষ্কার হয়ে যায় যে ইহাই সত্য;এ কথা কি যথেষ্ট নয়, আপনার প্রভু আপনার সব কিছু সম্পর্কে অবহিত? (সুরা হা-মীম আস্-সাজদাহ: আয়াত-৫৩)
৫। কেয়ামতের দিন আমি ন্যায় বিচারের জন্য একটি মানদণ্ড স্থাপন করবো, অতঃপর সেদিন কারো (কোনো মানব সন্তানের) ওপরই কোনো রকম অত্যাচার হবেনা; যদি একটি শস্য-দানা পরিমান কোনো আমলও তার কোথাও লুকিয়ে থাকে, হিসাবের পাল্লায় তা আমি যথার্থই এনে উপস্থিত করবো,হিসাব নেয়ার জন্য আমিই যথেষ্ট। (সুরা আল্-আম্বিয়াঃ আয়াত-৪৭)
৬। সেদিন পাপ-পূণ্যের পরিমাপ যথাযথ ভাবে করা হবে, সেদিন যাদের ওজনের পাল্লা ভারী হবে, তারাই সফল হবে। আর সেদিন যাদের পাল্লা হালকা হবে, তারা হলো এমন সব লোক, যারা নিজেরাই নিজেদের ক্ষতি করেছে , কারন এরা দুনিয়ার জীবনে আমার আয়াত সমূহ নিয়ে বাড়াবাড়ি করতো। (সুরা আল্-আ’রাফঃ আয়াত- ৮ থেকে ৯)
৭। তিনি যা কিছু সৃষ্টি করছেন সুন্দর ও নিখুঁত করেই সৃষ্টি করেছেন এবং তিনি মানুষ সৃষ্টির সূচনা করেছেন মাটি থেকে, অতঃপর তিনি তার বংশধরদের তুচ্ছ তরল একটি পদার্থের নির্যাস থেকে বনিয়েছেন। পরে তিনি তাকে ঠিকঠাক করলেন এবং তার মধ্যে তিনি তাঁর নিজের কাছ থেকে ‘রূহ্’ ফুঁকে দিলেন এবং তাকে কান, চোখ অন্তঃকরণ দান করলেন;তোমাদের খুব কম লোকই এজন্য আল্লাহ পাকের শোকর আদায় করো।[সুরা আস্-সাজদাঃ আয়াত-৭ থেকে ৯)
৮। মনে করুন যখন আপনার প্রভু ফেরেশতাদের বলেছিলেন, আমি মাটি থেকে মানুষ বানাতে যাচ্ছি। যখন আমি তাকে বানিয়ে সম্পূর্ণ সুঠাম করে নেবো এবং এতে আমার কাছ থেকে জীবনের সঞ্চার করবো, তখন তোমরা তার প্রতি সিজদাবনত হবে। সুরা ছোয়াদঃ আয়াত-৭১ থেকে ৭২
উপরিউক্ত আয়াত সমূহের মধ্যে ১-৪ ক্রমিকে বর্ণিত আয়াতে আল্লাহ বলেছেন সমগ্র সৃষ্টি-জগতে ও মানুষের মধ্যে ক্রিয়াশীল ভারসাম্যের কথা।অপর ৪টিতে বলেছেন মানুষের সৃষ্টি,তার যৌক্তিক মর্যাদা ও পরকালে তার সাফল্য- ব্যর্থতা নিরুপনে মীজানের ভূমিকার কথা।
সপ্ত-আসমান, সৌরজগত ও নক্ষত্রলোক, দিবা-রাত্রির আবর্তন – এসমস্ত কিছুই আল্লাহ্ সু-পরিকল্পিত, সুসমঞ্জস ও ভারসাম্য-পূর্ণ ভাবে প্রাকৃতিক নিয়মের যৌক্তিক ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত করেছেন।
এর কোথাও কোনও খুঁৎ নাই।আর ‘মীজান’ হলো আল্লার সৃষ্টি কৌশলের মূল ভিত্তি।ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র অণুজীব থেকে শুরু করে সীমাহীন নক্ষত্রলোক,জীবিত ও প্রাণহীন সকল বস্তুর ভারসাম্য একই সূত্রে গাঁথা।সূরা আর-রহমানে উল্লেখিত মহাশূণ্যে ভারসাম্য রক্ষায় প্রতিষ্ঠিত ‘মানদণ্ডে’র প্রকৃতি ও কার্য-কারিতা উদ্ঘাটনের দায়িত্বও আল্লাহ মানুষের উপর ন্যাস্ত করেছেন।
আর বিজ্ঞান হলো সেই সিংহ-দ্বার উন্মোচনের চাবি কাঠি। ম্যাক্রো,মাইক্রো ও ন্যানো পর্যায়ে আল্লার সকল সৃষ্টির মধ্যে এক সুমঞ্জস ঐক্য বিদ্যমান। হা-মীম আস্-সাজদাহর ৫৩ নং আয়াতে আল-কোরান সেই বার্তাই ঘোষনা করেছে।
এই আয়াতটিতে আল্লাহ্ মানুষের ভিতরে ও বিশ্ব-জগতের সুদূরতম দিগন্ত রেখায় অচিরেই তাঁর নিদর্শন সমূহ উন্মোচনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এর মাধ্যমে আসলে তিনি জ্ঞান চর্চা ও বিজ্ঞান সাধনার মাধ্যমে সৃষ্টি-রহস্য উদ্ঘাটনে মানব জাতির ভবিষ্যত সক্ষমতা ও সম্ভাবনারই ইঙ্গিত দিয়েছেন।
অবশ্য সময়ের বিচারে তা পৃথিবীর লক্ষ-লক্ষ বছর হলেও আল্লার কাছে তা মুহূর্ত মাত্র। আধুনিক বিজ্ঞানের অভূতপূর্ব অগ্রগতি আল্লার প্রতিশ্রুতি সত্য প্রমান করার দিকেই ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছে।কোরান জীবনকে আল্লার ভারসাম্য পূর্ণ, বস্তু ও আধ্যাত্মিকতার সমন্বিত নিদর্শন বলে ঘোষণা করে।
আর আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের দায়িত্ব মানুষের শরীর-বৃত্তীয় বিভিন্ন উপাদান ও শক্তি-প্রবাহের ভারসাম্যের স্বরূপ, কার্য-কারন সম্পর্ক ও গতি- প্রকৃতির রহস্য উদ্ঘাটন করা। আধুনিক চিকিৎসা-বিজ্ঞান সেই লক্ষ্যের দিকেই এগিয়ে যাচ্ছে।
আল্লাহ মানুষকে জ্ঞান,বুদ্ধি, বিবেক দিয়েছেন তাঁর নিদর্শন সমূহ উপলব্ধি করে তাঁর প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করার জন্য, কিন্তু মানুষ তার অপব্যবহার করছে। তাকে অনুধাবন করতে হবে যে, ‘মীজান’ বা ভারসাম্য পূর্ণ আল্লার সৃষ্টি-কৌশলের মধ্যেই নিহিত আছে বস্তু ও আধ্যাত্মিক জগতের ঐক্য ও সংহতি। একটি থেকে আরেকটিকে বিচ্ছিন্ন করার প্রচেষ্টা সম্পূর্ণ ভুল। স্থান-কাল-পাত্র দ্বারা সীমাবদ্ধ পঞ্চেন্দ্রিয় ভিত্তিক বিজ্ঞান সাধনার মাধ্যমে কখনোই এই সত্য উপলব্ধি করা যাবেনা।
এর জন্য প্রয়োজন প্রকৃতি-বিজ্ঞান ও আধ্যাত্মিক চিন্তাধারার সমন্বয় সাধন। বস্তুবাদী দার্শনিক ও বিজ্ঞানী যাঁরা এই সত্যটিকে অস্বীকার করেন ও স্রষ্টার অস্তিত্বকে নিষ্প্রয়োজনীয় বলে মনে করেন, তিনি যে স্তরের বিজ্ঞানীই হোন না কেন আল্-কোরান তাদের প্রতি সাবধান বাণী উচ্চারন করে তার নিজের সীমাবদ্ধতা, জন্ম ও বিকাশের ইতিহাসের দিকে দৃয্টিপাত করার আদেশ দিয়েছে।
আল্লাহ্ আদমকে মাটি থেকে তৈরী করলেন এবং তার মধ্যে রূহ্ ফুৎকার করিয়া প্রাণের সঞ্চার করলেন। কোরানের বক্তব্য অনুসারে এই রূহ্ হলো “ আল্লার হুকুম”। মানুষের জন্ম,বিকাশ,মৃত্যু সহ সৃষ্টি জগতের সকল কিছুই “আল্লার এই হুকুম” দ্বারা নিয়ন্ত্রিত।জড়-জগৎ, প্রাণী-জগৎ, সৌরলোক, নক্ষত্রলোক, ছায়াপথ,নীহারিকালোক সহ সমগ্র সৃষ্টি-জগতের চালিকা-শক্তি হলো এই আল্লার হুকুম-যা নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে প্রতিক্ষণ, প্রতি মুহূর্তে ম্যাক্রো,মাইক্রো ও ন্যানো পর্যায়ে কার্যকরী।
মানুষের দেহের গঠন কাঠামো ও তার দেহের অভ্যন্তরে ক্রিয়াশীল বিভিন্ন ভৌত-রাসায়নিক উপাদান সমূহের মধ্যেও একটা সামঞ্জস্য ও ভারসাম্য বিদ্যমান। মানুষের দেহে কোষ-বিভাজন,পূণর্গঠন, ও দেহ-কোষের জন্ম-মৃত্যুর মধ্যেও একটা ভারসাম্য আছে।
সমস্ত দেহ কোষের মৌলিক গঠন কাঠামো এক হলেও প্রত্যংগ ভেদে তাদের ক্রিয়া-প্রতিক্রয়া ও দায়িত্ব ভিন্ন ভিন্ন। এর কারন হলো বিভিন্ন সেলের নিউক্লিয়াসের RNA, DNA তে Genetic Information ভিন্নতা। আর এই Genetic Information কে প্রাণী জগতে ক্রিয়াশীল ‘আল্লার হুকুমে’র বাস্তব নিদর্শন হিসাবে ধরলে বোধ হয় ভুল হবেনা।
আমরা যদি মহাবিশ্বের দিকে তাকাই সেখানেও আল্লার হুকুমকে কার্যকরী দেখতে পাই। নীহারিকা লোক ও ছায়াপথে লক্ষ কোটি তারকার জন্ম-মৃত্যু, গঠনও পুনর্গঠণের মাধ্যমেই এই হুকুম কার্যকরী আছে। কোটি কোটি গ্রহ-নক্ষত্র লক্ষ-কোটি আলোকবর্ষ ধরে মহাশূন্যে বিচরন করছে, কোথাও কোনো বিশৃংখলা নাই।সুশৃংখল ভাবে আল্লার নির্ধারিত স্ব-স্ব কক্ষপথে তারা আবর্তিত হচ্ছে। অথচ প্রত্যেকের গতির মধ্যে একটা ভারসাম্য আছে। ক্ষুদ্র অণুজীব থেকে তারকালোক সহ সমগ্র বিশ্ব-জগত ‘মীজান’ বা ভারসাম্যের উপর দাড়িয়ে আছে।
৫নং ক্রমিকে বর্নিত কেয়ামতের দিন ‘আল্লাহর প্রতিষ্ঠিত মানদণ্ড’ কিসের হিসাব নিবে? তা হবে মূলতঃ আল্লাহর প্রতিনিধি হিসাবে সৃষ্টি-জগতে ভারসাম্য বা ইনসাফ প্রতিষ্ঠার হিসাব। আল্লার দাস হিসাবে তার উপর অর্পিত আল্লাহর হক আদায়ের পাশাপশি আল্লাহর প্রতিনিধি হিসাবে সৃষ্টি-জগতের হক আদায়ের হিসাব। শুধু আল্লাহর হক আদায় করলেই মানুষের জন্য তা যথেষ্ট হবেনা। সৃষ্টি-জগতের হক আদায়ের হিসাবও তাকে দিতে হবে।
কোরানের দৃষ্টিতে ফেরেশতাদের প্রতি আদমকে সিজদা করার আল্লাহর হুকুমও ইনসাফের উপর প্রতিষ্ঠিত। আল্লাহর প্রতিনিধি হিসাবে পৃথিবীতে আল্লাহর সমস্ত সৃষ্টির প্রতি ইনসাফ করার গুরু দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেওয়ার জন্য এসম্মান অবশ্যই আদম জাতির প্রাপ্য। আদমকে সাজদা না করে শয়তান দুইটি গুরুতর অপরাধ করেছে।প্রথমটি হলো আল্লাহর হুকুম অমান্য করার ঔদ্ধত্য দেখিয়েছে। আর অন্যটি হলো আল্লাহর প্রতিনিধি হিসাবে আদমের হক আদায়ে ব্যর্থ হয়েছে।
পাপ-পূণ্যের পরীক্ষায় অসফল ব্যক্তিরা পৃথিবীর জীবনে আল্লাহর আয়াত বা নিদর্শন অস্বীকারের মাধ্যনে আল্লাহর হক ভংগ করে। এখানে আয়াত বলতে শুধু মাত্র কোরানের আয়াতকেই বুঝায়না; বিশ্ব-প্রকৃতিতে পরিস্ফুটিত আল্লাহর নিদর্শন সমূহকেও বুঝায়।
আল্লাহর হক ও আল্লাহর প্রতিনিধি হিসাবে আদমের উপর সৃষ্টি জগতের হক এদুয়ের মধ্যে এক সূক্ষ্ম ভারসাম্য বিদ্যমান।
আল্লাহর হক ভংগের অপরাধ তিনি ক্ষমাশীল,রাহমানুর রহিম নামের ইজ্জতের খাতিরে ক্ষমা করলেও করতে পারেন কিন্তু সৃষ্টি জগতের হক ভংগের অপরাধ ক্ষমা করার প্রতিশ্রুতি আল্লাহ পাক-কালামের কোথাও দেননি। এ থেকেই প্রতীয়মান হয় সৃষ্টি জগতের হককে কোরান কত গুরুত্ব দিয়েছে!
কোরান একদিকে বিশ্ব-প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষার তাগিদ দিয়েছে, অন্যদিকে মানুষের ব্যক্তি, পরিবার ,সমাজ ও রাষ্ট্রীয় জীবনে ভারসাম্য বা ইনসাফ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বিভিন্ন বিধি –বিধানও জারী করেছে। সার্বিক বিচারে তাই ‘মীজান’ হলো সমগ্র সৃষ্টি-জগতে ‘আল্লাহর হকুম’ বাস্তবায়নের কৌশল।
-এটি