আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: বরাবর, মাননীয় মুফতী সাহেব, প্রশ্ন: এক ব্যক্তি তার ঘর বাড়ি, জায়গা জমিসহ যাবতীয় সম্পদের চেয়ে বেশি ঋণী হয়ে গিয়েছে।
তাই সে ঋণ পরিশোধের জন্য তার এসব সম্পদ ব্যাংকে মর্টগেজ/বন্ধক রেখে এসব সম্পদের বাজার দর পরিমান টাকা ব্যাংক থেকে নিতে চাচ্ছে।
এ ক্ষেত্রে ব্যাংক তার সম্পদের দলিলপত্র এফিডেবিট করে তার সাথে বার বছরের চুক্তিতে যাবে অর্থাৎ বার বছরের মধ্যে ব্যক্তি ব্যাংক থেকে নেয়া টাকা পরিশোধ করলে ব্যাংক তার বাড়ি ঘরের দলিলপত্র ফেরত দিবে আর ফেরত দিতে না পারলে ব্যাংক তা বিক্রি করে দিবে এবং যাবতীয় সম্পদের মালিক ব্যাংক হয়ে যাবে।
তাছাড়া মর্টগেজে দলিল রেখে যে পরিমান টাকা ব্যাংক থেকে ঋণ নিবে এ টাকার জন্য প্রতি বছর ব্যাংককে ফি দিতে হবে। এছাড়া ব্যাংককে দলিল রেখে টাকা উত্তোলনের জন্য ব্যাংককে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও দেখাতে হয়। ঐ ব্যক্তির যেহেতু কোন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নেই তাই তিনি অপর একজন ব্যবসায়ীর সাথে এ মর্মে চুক্তি করলেন যে, তিনি ব্যাংক থেকে যে টাকা উত্তোলন করবেন তার অর্ধেক বা তিন ভাগের দু’ভাগ ব্যবসায়ী নিবে আর বাকিটা তিনি নিবেন।
এখন জানার বিষয় হলো, ক. ব্যাংক ও ব্যক্তির সাথে এ ধরণের চুক্তিতে যাওয়া শরিয়াহর দৃষ্টিতে বৈধ কি না? এ ক্ষেত্রে তিনি কি করতে পারেন?
খ. ব্যাংকে দলিল মর্টগেজ রেখে যে টাকা উত্তোলন করবে তা দিয়ে ঋণ পরিশোধের পর বাকি টাকা দিয়ে হালাল ব্যবসা বাণিজ্য করতে চাইলে জায়েজ হবে কি না?
গ. বার বছরের এ চুক্তিতে প্রতি বছর এ টাকার জন্য ব্যাংক তার কাছ থেকে যে ফি/চার্জ নিচ্ছে তা দেয়া বৈধ হবে কি না?
উপরোক্ত প্রশ্নগুলোর শরিয়াহ সমাধান দানে জনাব মুফতি সাহেবের সুমর্জি কামনা করছি।
নিবেদক
মাওলানা ইবরাহিম
লালমোহন, ভোলা
উত্তর: (ক,খ,গ) প্রশ্নে বর্ণিত চুক্তি কনভেনশনাল ব্যাংকের সাথে শরিয়াহর দৃষ্টিতে কোনভাবেই বৈধ নয়। কেননা প্রচলিত কনভেনশনাল ব্যাংকগুলোতে সম্পদের দলিল মর্টগেজ রেখে ঋণ নেয়া এবং এ ঋণের বিপরিতে ব্যাংককে বাৎসরিক ফির নামে যে অর্থ দেয়া হয় তা শরিয়তের দৃষ্টিতে কুরআনে বর্ণিত নিষিদ্ধ রিবা/সুদের অর্ন্তভূক্ত। এ ক্ষেত্রে আপনি অন্য কোন জায়েয চুক্তিতে আবদ্ধ হতে পারেন বা কোন ইসলামি ব্যাংকের সাথে শরিয়াহ কারবারে যুক্ত হতে পারেন। তবে এ ক্ষেত্রে শরিয়াহ পরিপালনের দিকটি অবশ্যই কোন বিজ্ঞ মুফতির তত্তাবধানে থেকে আঞ্জাম দিবেন। তাছাড়া এ চুক্তিতে সুদ ছাড়াও প্রতারণা ও মিথ্যার আশ্রয় নেয়া হচ্ছে। সুতরাং এ ধরণের চুক্তি শরীয়ত সম্মত নয়। بالصواب فقط والله أعلم
المراجع والمصادر:
(১) القرآن الكريم سورة بقرة :২৭৫.
قوله تعالى: الَّذِينَ يَأْكُلُونَ الرِّبَا لَا يَقُومُونَ إِلَّا كَمَا يَقُومُ الَّذِي يَتَخَبَّطُهُ الشَّيْطَانُ مِنَ الْمَسِّ ذَلِكَ بِأَنَّهُمْ قَالُوا إِنَّمَا الْبَيْعُ مِثْلُ الرِّبَا وَأَحَلَّ اللَّهُ الْبَيْعَ وَحَرَّمَ الرِّبَا فَمَنْ جَاءَهُ مَوْعِظَةٌ مِنْ رَبِّهِ فَانْتَهَى فَلَهُ مَا سَلَفَ وَأَمْرُهُ إِلَى اللَّهِ وَمَنْ عَادَ فَأُولَئِكَ أَصْحَابُ النَّارِ هُمْ فِيهَا خَالِدُونَ.
(২) صحيح مسلم، رقم الحديث: ৪১৭৭
عن جابر قال لعن رسول الله صلى الله عليه وسلم آكل الربا وموكله وكاتبه وشاهديه وقال هم سواء.
(৩) تفسير إبن كثير ১/৬৩৬
{يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لا تَأْكُلُوا أَمْوَالَكُمْ بَيْنَكُمْ بِالْبَاطِلِ}... نهى تبارك وتعالى عباده المؤمنين عن أن يأكلوا أموال بعضهم بعضابالباطل، أي: بأنواع المكاسب التي هي غير شرعية، كأنواع الربا والقمار، وما جرى مجرى ذلك من سائر صنوف الحيل،
(৪) صحيح المسلم رقم الحديث: ৩৮০৮
عن أبي هريرة قال نهى رسول الله صلى الله عليه و سلم عن بيع الحصاة وعن بيع الغرر ش ( بيع الغرر ) النهي عن بيع الغرر أصل عظيم من أصول كتاب البيوع ويدخل فيه مسائل كثيرة غير منحصرة كبيع الآبق والمعدوم والمجهول وما لا يقدر على تسليمه.
(৫) صحيح البخارى، رقم الحديث: ৫৭৪৩
عن أبي وائل عن عبد الله رضي الله عنه: عن النبي صلى الله عليه و سلم قال (إن الصدق يهدي إلى البر وإن البر يهدي إلى الجنة وإن الرجل ليصدق حتى يكون صديقا وإن الكذب يهدي إلى الفجور وإن الفجور يهدي إلى النار وإن الرجل ليكذب حتى يكتب عند الله كذابا)
উত্তর লিখনে- আবুল ফাতাহ কাসেমী, উস্তাদ, জামিয়া কারিমিয়া আরাবিয়া, রামপুরা, ঢাকা
-এটি