মুফতি নাজমুল হাসান
গত বৃহস্পতিবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের ভুলতা কর্ণগোপ এলাকায় সেজান জুসের কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে৷ এতে ৫৩ জনের লাশ উদ্ধার হয়েছে। তাদের মধ্যে মাত্র তিনজনের পরিচয় পাওয়া গেছে।
আগুনে লাশ পুড়ে কঙ্কাল হয়ে যাওয়ায় ৫০ জনের কোনো পরিচয় শনাক্ত হয়নি। এমতাবস্থায় ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে তাদের পরিচয় শনাক্ত করার উদ্যোগ নিয়েছে প্রশাসন। একের পর এক লাশ উদ্ধারের ঘটনায় স্তব্ধ হয়ে পড়েছে রূপগঞ্জ।
স্বজনহারাদের আহজারিতে আকাশ-বাতাস ভারী হয়ে উঠছে গোটা দেশের৷ কেউ অপেক্ষা করছে তার মায়ের পুড়ে যাওয়া দেহের হাড়গুলো খুঁজে পেতে, আর কেউ অপেক্ষা করছে তার বোনের শেষ স্মৃতিটুকু কুড়িয়ে নিতে৷
তবে ইসলামের দৃষ্টিতে আগুনে পুড়ে নির্মমভাবে মৃত্যুবরণকারীদের জন্য রয়েছে শাহাদাতের মর্যাদা৷ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘আল্লাহর পথে নিহত হওয়া ছাড়াও সাত ধরনের শাহাদাত রয়েছে।
১. প্লেগ-মহামারিতে যে মারা যায়, সে শহীদ। ২. পানিতে ডুবে যে মারা যায় যায়, সে শহীদ। ৩. শয্যাশায়ী অবস্থায় যে মারা যায়, সে শহীদ। ৪. পেটের পীড়ায় যে মারা যায়, সে শহীদ। ৫. আগুনে পুড়ে যে মারা যায়, সে শহীদ। ৬. ভূমি, ভবন বা দেয়াল ধসে যে মারা যায়, সে শহীদ। ৭. যে নারী গর্ভধারণে বা প্রসবজনিত কষ্টে মারা যায়, সে শহীদ।’ (আবু দাউদ: হাদিস নং ৩১১১; নাসাঈ: হাদিস নং ১৮৪৬)
শোকের এই সময়ে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উক্ত বাণীটি গোটা উম্মাহের জন্য বড়ই সান্তনা৷ তাছাড়া, পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন, ‘অবশ্যই আমি তোমাদের পরীক্ষা করব কিছুটা ভয়, ক্ষুধা, মাল ও প্রাণের ক্ষতি ও ফলফসল বিনষ্টের মাধ্যমে। তবে সুসংবাদ দাও ধৈর্যশীলদের। যখন তারা বিপদে পড়ে, তখন বলে, নিশ্চয়ই আমরা সবাই আল্লাহর জন্য এবং আমরা সবাই তাঁরই কাছে ফিরে যাব। তারা সেসব লোক, যাদের প্রতি আল্লাহর অফুরন্ত অনুগ্রহ ও রহমত রয়েছে এবং এসব লোকই হেদায়েতপ্রাপ্ত।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৫৫-১৫৭)
আমরা দুআ করি- আল্লাহ তা'আলা যেন শোকাহত পরিবারগুলোকে ধৈর্য ধারণ করার তৌফিক দান করেন৷
লেখক: নবীন আলেম, লেখক ও গবেষক৷
-এটি