শুক্রবার, ১১ এপ্রিল ২০২৫ ।। ২৮ চৈত্র ১৪৩১ ।। ১৩ শাওয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
বাড়িতে বাবার লাশ রেখে এসএসসি পরীক্ষা দিল নাহিদ মানবতার জন্য আপনিও আসুন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে: শায়খ আহমাদুল্লাহ ইসরায়েলকে প্রতিহত করতে আন্তর্জাতিক উদ্যোগ দরকার: বিএনপি মাদরাসাছাত্রদের কর্মসংস্থানের বিষয়ে কাজ করছে এনসিপি : নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী মুসলিম রাষ্ট্রের ওপর এখন সশস্ত্র ল’ড়াই ফরজ: মুফতি তাকি উসমানি ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচি সফল করার আহ্বান শায়খে চরমোনাই’র নড়াইলে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা মামলায় আ. লীগের ৪৮ নেতাকর্মী কারাগারে বিনা খরচে আরও কর্মী নেবে জাপান, সমঝোতা স্মারক সই সাকা চৌধুরীর বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেওয়া সেই বিতর্কিত ব্যক্তি আটক জুলাইয়ের আকাঙ্ক্ষা নিয়ে আসছে নতুন রাজনৈতিক দল, নাম নির্ধারণ

সৎকারে আসেনি শ্মশান কমিটির সদস্যরাও, হিন্দু প্রতিবেশীর মুখাগ্নি করলেন মুসলিম যুবক

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: কুষ্টিয়ায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করা সত্তর বছর বয়সী প্রফুল্ল কর্মকারের সৎকারে আসেনি কেউ। শ্মশান কমিটির সদস্যদের তার মৃত্যুর বিষয়টি জানালেও কেউ তাতে সাড়া দেয়নি। সারা রাত লাশ নিয়ে শ্মশানে কাটে প্রফুল্ল কর্মকারের স্ত্রী কল্পনা কর্মকারের

তবে, হিন্দু সম্প্রদায়ের কেউ মরদেহটির সৎকারে এগিয়ে না এলেও পরের দিন সকাল ১১টার দিকে স্থানীয় কয়েকজন মুসলিম যুবক মরদেহটি মুখাগ্নি করে শ্মশানের পাশে সমাহিত করেন।

জানা গেছে, মিরপুর পৌরসভার ৫ নং ওয়ার্ডের হরিতলা এলাকার বাসিন্দা প্রফুল্ল কর্মকার। সত্তর বছর বয়সী প্রফুল্ল কর্মকার গত শনিবার রাতে করোনা আক্রান্ত হয়ে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। তার স্ত্রী কল্পনা কর্মকার মরদেহটি নিজ বাড়িতে নিতে চাইলেও বাড়ির অন্যরা করোনা আক্রান্ত থাকার কারণে নিতে পারেননি।

পরে শনিবার রাতেই মরদেহটি এ্যাম্বুলেন্সে করে মিরপুর উপজেলার পৌর শ্মশানে নেওয়া হয়। মধ্যরাতে শ্মশানে কল্পনা কর্মকার ছাড়া আর কেউ ছিলেন না। শ্মশানের গেটে তালা ঝুলছিল এবং বৃষ্টিও হচ্ছিল। অ্যাম্বুলেন্স থেকে দু’জন কর্মচারী শ্মশানের এক পাশে মরদেহটি নামিয়ে আবার ফিরে যান। এসময় কল্পনা কর্মকার শ্মশান কমিটির সদস্যদের তার স্বামীর মৃত্যুর বিষয়টি জানান, কিন্তু কেউ তাতে সাড়া দেয়নি। প্রফুল্ল কর্মকারের মৃত্যুর পর স্ত্রী কল্পনা তার পরিবারকে জানিয়েছিলেন। কিন্তু, দুই ছেলে, ছেলে বউ ও নাতি করোনায় আক্রান্ত। তাই তারা শ্মশানে আসতে পারেনি।

গভীর রাতে সবাই ফেরত গেলেও মরদেহটি ফেলে যেতে পারেননি প্রফুল্লের স্ত্রী কল্পনা রানী কর্মকার। রাতে বৃষ্টির গতি বাড়লে তিনি নিজেই মরদেহ সরিয়ে শ্মশানের পাশে গোপালপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বারান্দায় আশ্রয় নেন। সেখানে একাই পার করে দেন পুরো রাত। সকাল পর্যন্ত অপেক্ষার পরও মরদেহ সৎকারে শ্মশান কমিটি বা নিজ আত্মীয়-স্বজনের কেউ আসেনি।

মিরপুর পৌরসভার কাউন্সিলর জাহিদুল ইসলাম জানান, প্রফুল্ল কর্মকারের পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা করোনায় আক্রান্ত। তাই তারা মরদেহ সৎকারে আসতে পারেনি। তবে, হিন্দু সম্প্রদায়ের কেউ মরদেহটির সৎকারে এগিয়ে আসেনি। পরে, রবিবার সকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বিষয়টি জানালে সমাহিত করার ব্যবস্থা করতে বলেন। পরে সকাল ১১টার দিকে স্থানীয় কয়েকজন মুসলিম যুবক মরদেহটি মুখাগ্নি করে শ্মশানের পাশে সমাহিত করেন।

মিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লিংকন বিশ্বাস জানান, বিষয়টি জানার পরপরই পৌর মেয়র ও স্থানীয় কাউন্সিলরকে অবহিত করা হয়। তারা স্থানীয়দের দিয়ে সমাহিত করার কাজ সম্পন্ন করেছেন।

প্রফুল্ল কর্মকারের বড় ছেলে আনন্দ কর্মকার জানান, তারা সবাই করোনায় আক্রান্ত। তাই শ্মশানে যেতে পারেনি। তার মা সারা রাত বাবার মরদেহের সঙ্গে ছিলেন।

বিষয়টি জানতে শ্মশান কমিটির সভাপতি আনন্দ দেবনাথের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে  বলেন, ‘ওই পরিবারের সবাই করোনায় আক্রান্ত। এমনকি মৃতের স্ত্রীও করোনায় আক্রান্ত। এজন্য আমার কেউ সেখানে যেতে পারিনি। তবে, সকালে তার ছেলে আমার কাছ থেকে শ্মশানের চাবি নিয়ে গেছে। এরপর আর কিছু আমি জানি না।’

এনটি


সম্পর্কিত খবর



সর্বশেষ সংবাদ