শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪ ।। ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
মসজিদে নববীর আদলে হবে আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদ: ধর্ম উপদেষ্টা খাগড়াছড়ি প্রেস ক্লাবের সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত নতুন নির্বাচন কমিশনকে বিগত কমিশন থেকে শিক্ষা নিতে হবে: মুফতী ফয়জুল করীম লালপুরে যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে জমি দখল ও বাড়ি ভাংচুরের অভিযোগ জনতার চেয়ারম্যান সৈয়দ তালহাকে সুনামগঞ্জ ৩ আসনে জমিয়তের প্রার্থী ঘোষণা কুরআন-হাদিসের ভিত্তিতেই হতে হবে সংস্কার: বায়তুল মোকাররমের খতিব ইসলামী সঙ্গীত সম্রাট আইনুদ্দীন আল আজাদ রহ.-এর বাবার ইন্তেকাল কুরআন-সুন্নাহর আইন ছাড়া দেশে শান্তি আসবে না : মাওলানা হাবিবুল্লাহ মিয়াজী শীত ও শৈত্যপ্রবাহ নিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস ফ্যাসিবাদ বারবার ফিরে আসবে, সতর্ক থাকতে হবে: গৃহায়ন ও গণপূর্ত উপদেষ্টা

সে সময়টাতে বেশ কয়েকবার টাইফয়েড হয়েছিলো: ধারাবাহিক আত্মজীবনী ‘ইয়াদেঁ’ থেকে

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

[জামিয়া দারুল উলুম করাচির মুখপাত্র ‘ماہنامہ البلاغ মাহনামা আল-বালাগ’ এ ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত বিশ্বনন্দিত আলেম, স্কলার আল্লামা তাকি উসমানির আত্মজীবনী আওয়ার ইসলামে ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ হচ্ছে আলহামদুলিল্লাহ।

এ বিষয়ে আল্লামা তাকি উসমানি আনুষ্ঠানকিভাবে আওয়ার ইসলামকে ভাষান্তর করে প্রকাশের অনুমতি দিয়েছেন। গত ২ জানুয়ারি জামিয়া দারুল উলুম করাচির তাখাসসুস ফিল ইফতার শিক্ষার্থী, আওয়ার ইসলাম টোয়েন্টিফোর ডটকমের শুভাকাঙ্ক্ষি উমর ফারুক ইবরাহীমীর মাধ্যমে আল্লামা তাকি উসমানি ও পত্রিকা কর্তৃপক্ষের কাছে আত্মজীবনী ‘ইয়াদে’ অনুবাদের অনুমতি চাওয়া হলে তারা খুশি মনে রাজি হন এবং আওয়ার ইসলামকে ধন্যবাদ জানান বাংলাভাষায় ইসলামের প্রচার ও প্রসারের জন্য।

আল্লামা তাকি উসমানির নতুন ধারাবাহিক আত্মজীবনী “یادیں ইয়াদেঁ ” মাহনামা আল-বালাগে সফর ১৪৩৯ হিজরি, নভেম্বর ২০১৭ ইংরেজি মাস থেকে। আওয়ার ইসলামে লেখাটি প্রতি রোববার ও বুধবার প্রকাশ হবে ইনশাল্লাহ। আজ ছাপা হলো ২৮ তম কিস্তি। অনুবাদ করেছেন মুহাম্মদ উমর ফারুক ইবরাহীমী।]


পূর্ব প্রকাশের পর: পাকিস্তান স্বাধীনতা লাভের পর যা কিছু সরঞ্জামাদি পাকিস্তানের হিসসায় এসেছিলো, প্রথমত তা ন্যায্য অধিকার থেকে কম ছিলো। তাছাড়া পাকিস্তানের মালিকানা অনেক সরঞ্জাম ভারতেই রয়ে গিয়েছিল। সেগুলো ফিরে পেতে দীর্ঘদিন ধরে উভয় দেশের মধ্যে মামলা-মোকাদ্দামা চলল।

ফলে পাকিস্তানকে যতসামান্য সরঞ্জামাদি নিয়েই তার পথচলা শুরু করতে হয়েছিলো। সেসময়ে পাকিস্তানের রাজধানী ছিলো করাচী। মন্ত্রনালয়ের সেক্রেটারিয়েটরা জীর্ণশীর্ণ টিনের ঘরে বসে অফিস করতেন। পেপারওয়েটের বদলে তারা পাথর ব্যবহার করতেন এবং কাগজ সংযুক্তির কাজে পিনের বদলে গাছের কাঁটার সাহায্য নিতেন।

সেসময়ে পাকিস্তান সংসদের সংবিধান প্রণেতারা "بورڈ تعلیمات اسلامیہ" নামে একটি বোর্ড গঠন করে দিলেন। এবং তার অফিসের জন্য সংসদ সংলগ্ন একটি ঝুপড়ি নির্মাণ করে দেয়া হলো। বোর্ড সভাপতিত্বের জন্য হযরত আল্লামা সায়্যিদ সুলাইমান নদভী রহ. কে আহ্বান করা হয়েছিলো। হযরত আব্বাজানকেও কমিটির সদস্য নির্বাচন করা হয়েছে।

এই বোর্ডের কাজ ছিলো, প্রণীত সংবিধানে ইসলামী শিক্ষাকে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য নীতিমালা প্রণয়ন করা। সে সূত্রে আব্বাজান রহ কে 'জ্যাকব লাইনে’ ভাড়ায় একটি কোয়ার্টার দেয়া হয়েছিলো।

ওদিকে সেসময়ে আমাদের সবার বড়বোন মরহুমা নাঈমা খাতুন সাহেবা স্বীয় স্বামী ও সন্তানাদিসহ হিন্দুস্তান থেকে করাচী চলে এসেছিলেন। সুতরাং আব্বাজান রহ প্রায় একবছর অবধি ‘কিংস কোর্ট’ থাকার পর সেই ফ্ল্যাটটি সাময়িকভাবে বড় আপাকে দিয়ে তিনি জ্যাকব লাইনের কোয়ার্টারে চলে এলেন।

জ্যাকব লাইনের সেই মাদরাসাটি হযরত মাওলানা ইহতিশামুল হক থানবী রহ. প্রতিষ্ঠা করেছিলেন এবং যেখানে আমার বড়ভাই পূর্বে থেকেই পড়ে আসছিলেন। এখন সেটা আমাদের নতুন বাসা থেকে কাছে হয়ে গেলো। এবং আমাকে এতটুকু বড় বলে স্বীকৃতি দেয়া হল যে, আমি এখন জ্যাকব লাইনের মাদরাসায় পড়াশোনার উপযুক্ত।

কিন্তু হযরত আব্বাজান রহ সম্ভবত আমার শারীরিক দূর্বলতা ও অসুস্থতার প্রতি লক্ষ্য রেখে অন্যান্য চার ভায়ের মতো আমাকে হিফয পড়াননি। সরাসরি উর্দু, ফার্সির বুনিয়াদি কিতাব শুরু করিয়ে দিয়েছেন। যার সূচনা ছিল ‘হামদে বারী’ দিয়ে। ‘হামদে বারী’ মাওলানা মরহুম আব্দুস সামী' বে-দিল রহ. এর রচিত কিতাব।

যাতে বিভিন্ন শব্দের অর্থ মাসনবির শে'রের মাধ্যমে ( দুই অংশের কবিতায়) বিশ্লেষণ করা হয়েছে। যদিও মাওলানা আব্দুস সামী' সাহেব রহ. বেরলভি মতাদর্শের ছিলেন কিন্তু তার এই কিতাব শিশুদেরকে শব্দার্থ মুখস্থ করানোর জন্য উপকারী বলে মনে করা হতো। এজন্য উলামায়ে দেওবন্দ এই কিতাব থেকে উপকৃত হবার ক্ষেত্রে মাসলাককে প্রতিবন্ধক মনে করেননি এবং কিতাবটি প্রায় সকল মাদরাসার পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করে নেয়া হয়েছিলো।

আমি সেটি এবং ফার্সি গর্দানের কিতাব ‘রিসালাহ নাদের’ হযরত মাওলানা নূর আহমাদ সাহেব রহ. এর কাছে জ্যাকব লাইনের মাদরাসায় পড়তে শুরু করলাম। ‘লিসালাহ নাদের’ এর লেখক ছিলেন আমাদের দাদা হযরত মাওলানা মুহাম্মদ ইয়াসিন রহ.। কিন্তু আমার বয়স স্বল্পতার দরুন এই পড়াশোনা নিয়মতান্ত্রিকভাবে ছিলোনা।

ইচ্ছে হলে সবক পড়তাম, নাইলে ছুটি কাটাতাম। কোন সবক এক উস্তায থেকে পড়ে নিতাম, কোন সবক অন্য উস্তায থেকে। হযরত মাওলানা ইহতিশামুল হক সাহেব থানবী রহ এর সন্তানদের মধ্যে মাওলানা ইহতিরামুল হক সাহেব আমার চেয়ে বয়সে কিছু বড় ছিলেন। এবং জনাব ই'তিসামুল হক সাহেব হাফিযাহুল্লাহ আমার প্রায় সমবয়সী।

আমার অনিয়মতান্ত্রিক পড়াশোনার বাইরের সময়গুলো বেশিরভাগ তাদের সাথেই কেটে যেতো। আবার কখনো হযরত মাওলানা ইহতিশামুল হক সাহেব থানবী রহ. এর বাসায় অনুষ্ঠিত মজলিসে বসতাম। এই অনিয়মতান্ত্রিক পড়াশোনার কারণ এটাও একটি ছিলো যে, সে সময়ে আমার বেশ কয়েকবার টাইফয়েড হয়েছিলো। যার কারণে মাসের পর মাস আমার বিছানায় কেটে যেতো।

চলবে ইনশাআল্লাহ....

আল্লামা তাকি উসমানির ধারাবাহিক আত্মজীবনী ইয়াদেঁ এর সকল পর্ব

-এটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ