শুক্রবার, ১১ এপ্রিল ২০২৫ ।। ২৮ চৈত্র ১৪৩১ ।। ১৩ শাওয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
বাড়িতে বাবার লাশ রেখে এসএসসি পরীক্ষা দিল নাহিদ মানবতার জন্য আপনিও আসুন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে: শায়খ আহমাদুল্লাহ ইসরায়েলকে প্রতিহত করতে আন্তর্জাতিক উদ্যোগ দরকার: বিএনপি মাদরাসাছাত্রদের কর্মসংস্থানের বিষয়ে কাজ করছে এনসিপি : নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী মুসলিম রাষ্ট্রের ওপর এখন সশস্ত্র ল’ড়াই ফরজ: মুফতি তাকি উসমানি ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচি সফল করার আহ্বান শায়খে চরমোনাই’র নড়াইলে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা মামলায় আ. লীগের ৪৮ নেতাকর্মী কারাগারে বিনা খরচে আরও কর্মী নেবে জাপান, সমঝোতা স্মারক সই সাকা চৌধুরীর বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেওয়া সেই বিতর্কিত ব্যক্তি আটক জুলাইয়ের আকাঙ্ক্ষা নিয়ে আসছে নতুন রাজনৈতিক দল, নাম নির্ধারণ

যে চার ব্যক্তি কখনো আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারে না

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মাহমুদ উনাইজ: কিছু চারিত্রিক ত্রুটি মানুষকে নিকৃষ্ট করে দেয়। এমনকি তারা মহান আল্লাহর কাছে ঘৃণিত হয়ে ওঠে। ফলে তারা মহান আল্লাহর রহমত থেকে বঞ্চিত হয়। আজ আমরা আলোচনা করব রাসুল (সা.)-এর একটি বিশেষ হাদিসের আলোকে, যেখানে রাসুল (সা.) এমন চারটি চারিত্রিক ত্রুটি সম্পর্কে সতর্ক করেছেন, যেগুলোর কারণে মানুষ মহান আল্লাহর কাছে অপছন্দনীয় হয়ে ওঠে। রাসুল (সা.) বলেছেন, চার ব্যক্তিকে মহান মহিয়ান আল্লাহ তাআলা অপছন্দ করেন অধিক হারে শপথকারী বিক্রেতা, অহংকারী দরিদ্র, বৃদ্ধ ব্যভিচারী এবং অত্যাচারী শাসক। (নাসায়ি, হাদিস : ২৫৭৬)

অহংকারী দরিদ্র : অহংকার হচ্ছে সব পাপের মূল। একে আরবিতে বলা হয় উম্মুল আমরাজ, ‘সকল রোগের জননী’। বরং বলা যায়, এ জগতের প্রথম পাপই হচ্ছে অহংকার। অহংকার করে শয়তান অভিশপ্ত হয়েছিল। ধনী-গরিব, ছোট-বড়, উঁচু-নীচ সবার জন্যই অহংকার করা মারাত্মক অপরাধ। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমাদের মাবুদ এক। সুতরাং যারা আখিরাতে ঈমান রাখে না, তাদের অন্তরে অবিশ্বাস বদ্ধমূল হয়ে গেছে এবং তারা অহংকারে লিপ্ত। স্পষ্ট কথা, তারা যা গোপনে করে, তা আল্লাহ জানেন এবং যা প্রকাশ্যে করে, তা-ও। নিশ্চয়ই তিনি অহংকারীকে পছন্দ করেন না।’ (সুরা : নাহাল, আয়াত : ২২-২৩) কিন্তু দরিদ্র মানুষের অহংকার করা বড়ই আশ্চর্যের বিষয়। কেননা গরিব মানুষের মধ্যে অহংকারবোধ জাগ্রত হওয়ার কোনো কারণ থাকার কথা নয়। এ কারণে কোনো গরিব মানুষ যদি অহংকার করে বসে, তা মারাত্মক অপরাধ।

অত্যাচারী শাসক : অত্যাচার মানুষের ধ্বংস ডেকে আনে। এটি পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রে শুধু ফাটলই সৃষ্টি করে। গৃহকর্তা থেকে শুরু করে রাষ্ট্রপ্রধান, কারো জন্যই এটি হালাল নয়। রাসুল (সা.) হাদিসে কুদসিতে আল্লাহর কথা বর্ণনা করে বলেন, ‘হে আমার বান্দা, আমি নিজের ওপর জুলুম হারাম করেছি এবং তোমাদের জন্যও তা হারাম করেছি। অতএব তোমরা একে অন্যের ওপর জুলুম কোরো না।’ (মুসলিম, হাদিস : ৬৭৩৭)

বৃদ্ধাবস্থায় ব্যভিচার : বৃদ্ধাবস্থায় ব্যভিচার অত্যন্ত মারাত্মক অপরাধ। এর মানে এই নয় যে যৌবনকালে ব্যভিচার দোষনীয় নয়, বরং ব্যভিচার সর্বাবস্থায়ই মারাত্মক অপরাধ। সাধারণত বৃদ্ধরা ব্যভিচারে লিপ্ত হয় পরকীয়ার জেরে। তা গড়ে ওঠে সাধারণত প্রতিবেশী, অফিস কলিগ কিংবা পুরনো বন্ধুর সঙ্গে। রাসুলুল্লাহ (সা.) এ বিষয়ে উম্মতকে সতর্ক করেছেন। একদিন রাসুলুল্লাহ (সা.) তাঁর সাহাবিদের ব্যভিচার সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেন। তাঁরা বলেন, হারাম। আল্লাহ ও তাঁর রাসুল তা হারাম করেছেন। তিনি বলেন, কোনো ব্যক্তির ১০ জন নারীর সঙ্গে ব্যভিচারে লিপ্ত হওয়ার চেয়ে তার প্রতিবেশীর স্ত্রীর সঙ্গে ব্যভিচারে লিপ্ত হওয়া জঘন্য অপরাধ। (আদাবুল মুফরাদ, হাদিস : ১০২)

অধিক হারে শপথকারী বিক্রেতা : উপরোক্ত হাদিসে অধিক হারে শপথকারী বিক্রেতা বলে বোঝানো হয়েছে মিথ্যা শপথ করে যারা পণ্য বিক্রি করে থাকে। (তিরমিজি, হাদিস : ১২১১) যারা সৎ ব্যবসায়ী, তাদের মহান আল্লাহ কিয়ামতের দিন সর্বোচ্চ স্থান দান করবেন। কিন্তু যারা ব্যবসা-বাণিজ্যে অসৎ, তাদের জন্য অপেক্ষা করছে কঠিন শাস্তি।

একদিন রাসুল (সা.) লোকদের কেনাবেচায় জড়িত দেখে বলেন, হে ব্যবসায়ী সম্প্রদায়! তারা রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর ডাকে সাড়া দিল এবং নিজেদের ঘাড় ও চোখ উঠিয়ে তাঁর দিকে তাকাল। তিনি বললেন, কিয়ামতের দিন ব্যবসায়ীদের ফাসিক বা গুনাহগাররূপে ওঠানো হবে; কিন্তু যেসব ব্যবসায়ী আল্লাহ তাআলাকে ভয় করে, নির্ভুলভাবে কাজ করে এবং সততা ধারণ করে, তারা এর ব্যতিক্রম। (তিরমিজি, হাদিস : ১২১০) মহান আল্লাহ আমাদের হাদিসের ওপর আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

-কেএল


সম্পর্কিত খবর



সর্বশেষ সংবাদ