আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে শাহজাহান বিলাস (৪৮) নামের এক হাজতিকে নির্যাতনের ঘটনায় ৩ কারারক্ষীকে বরখাস্ত করা হয়েছে। নির্যাতনের শিকার বন্দী শাহজাহান ভারতের পশ্চিম ত্রিপুরা রাজ্যের দুর্গাপুর গ্রামের আবদু মিয়ার ছেলে।
বিষয়টি তদন্তে কারা অধিদফতরের নির্দেশে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার শফিকুল ইসলাম খানকে প্রধান করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অপর ২ সদস্য হলেন- ব্রাহ্মণবাড়িয়া কারাগারের জেল সুপার ইকবাল হোসেন ও ফেনী জেলা কারাগারের জেলার শাহাদত হোসেন মিঠু। এ ছাড়া আগামী ৭ কার্য দিবসের মধ্যে কমিটিকে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগার সূত্রে জানা যায়, হাজতি শাহজাহান বিলাস ডাকাতি ও হত্যা মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি। ২৬ বছর ধরে তিনি কুমিল্লা কারাগারে বন্দী রয়েছেন। গত ১৫ এপ্রিল তার ওয়ার্ডে তল্লাশি চালায় কারা রক্ষীরা। এ সময় ১২ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট, গাঁজা, নগদ ৬ শ’ টাকাসহ কারারক্ষীদের হাতে তিনি ধরা পড়েন। পরে ১২ মে তাকে কারাভ্যন্তরে কেস টেবিলের সামনে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন সিনিয়র জেল সুপার শাহজাহান আহমেদ।
ভাইরাল হওয়া ভিডিওটিতে দেখা যায়, জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে বিলাসের দুই হাত পিঠমোড়া করে বেঁধে মাটিতে ফেলে মারধর করছেন কয়েকজন কারারক্ষী। বন্দী নির্যাতনের বিষয়টি তদন্তে গত ১ জুলাই কারা অধিদফতরের নির্দেশে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র সুপার শফিকুল ইসলাম খানকে প্রধান করে বিষয়টি তদন্তে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
এদিকে নির্যাতনের ভিডিওটি ভাইরাল করার অভিযোগে গত বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) কুমিল্লা কারাগারের প্রধান কারারক্ষী মোহাম্মদ শরীফুল ইসলাম, কারারক্ষী অনন্ত চন্দ্র দাস ও চয়ন দাসকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বরখাস্ত হওয়ার পরদিন শুক্রবার কারারক্ষী অনন্ত চন্দ্র দাস কারাগারের ব্যারাকে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন বলে কারাগার সূত্রে জানা গেছে। তবে বর্তমানে তিনি সুস্থ আছেন।
নির্যাতনের বিষয়ে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র সুপার শাহজাহান আহমেদ বলেন, বিলাসের ওয়ার্ডে তল্লাশি চালিয়ে ইয়াবা, গাঁজা, সিগারেট ও নগদ টাকা জব্দ করা হয়। পরে তাকে কেস টেবিলে ডেকে এনে মাদক ধ্বংস ও জব্দ করা টাকা সরকারের কোষাগারে জমা দেয়া হয়। এ নিয়ে বিলাস আমাদের ওপর ক্ষুব্ধ ছিল। এ জন্য তাকে কেস টেবিলে এনে লঘু শাস্তি দেয়া হয়।
কিন্তু এ সময় তাকে মারধরের ঘটনায় তাৎক্ষণিভাবে দু’জন কারারক্ষীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা রেকর্ড করা হয়। তদন্ত কমিটির প্রধান চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র সুপার শফিকুল ইসলাম খান জানান, কারা অধিদফতরের নির্দেশে এ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
-কেএল