শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪ ।। ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
মসজিদে নববীর আদলে হবে আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদ: ধর্ম উপদেষ্টা খাগড়াছড়ি প্রেস ক্লাবের সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত নতুন নির্বাচন কমিশনকে বিগত কমিশন থেকে শিক্ষা নিতে হবে: মুফতী ফয়জুল করীম লালপুরে যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে জমি দখল ও বাড়ি ভাংচুরের অভিযোগ জনতার চেয়ারম্যান সৈয়দ তালহাকে সুনামগঞ্জ ৩ আসনে জমিয়তের প্রার্থী ঘোষণা কুরআন-হাদিসের ভিত্তিতেই হতে হবে সংস্কার: বায়তুল মোকাররমের খতিব ইসলামী সঙ্গীত সম্রাট আইনুদ্দীন আল আজাদ রহ.-এর বাবার ইন্তেকাল কুরআন-সুন্নাহর আইন ছাড়া দেশে শান্তি আসবে না : মাওলানা হাবিবুল্লাহ মিয়াজী শীত ও শৈত্যপ্রবাহ নিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস ফ্যাসিবাদ বারবার ফিরে আসবে, সতর্ক থাকতে হবে: গৃহায়ন ও গণপূর্ত উপদেষ্টা

মহাকালের সংগ্রামী নায়ক মাওলানা মুহিউদ্দীন খান রহিমাহুল্লাহ

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

ইসমাঈল হাবীব।।

ইসলামি সাহিত্যের অঙ্গন যখন একেবারে মরুশূন্য ছিল। ইসলামের শ্বাশত চেতনার কথা ঘুণেধরা সমাজে প্রচার প্রসারে ছিল না কোনো পদক্ষেপ।এমন মরুবিরান শূন্য সময়ে একজন দরদী মালী সিদ্ধহস্তে কলম তুলে নিলেন।তিনিই হলেন আমাদের মহাকালের ইসলামি সাহিত্যের প্রবাদপুরুষ মাওলানা মুহিউদ্দীন খান রহিমাহুল্লাহ। একই সাথে তিনি ছিলেন এই জাতির জীবনে অন্যতম অভিভাবক। দেশের উন্নত মহল থেকে শুরু আন্তর্জাতিক মহলজুড়ে তার সুনাম—সুখ্যাতি ছড়িয়ে ছিল। বাংলাদেশে ইসলামি ঘরনার সাহিত্যের সূচনা তাঁর হাত ধরেই সূচিত হয়েছিল।

মাসিক মদীনার সূচনা: ১৯৬১ সালের শুরুর কথা। ইসলামের সুরভিময় বাণী পৌঁছে দেওয়ার জন্য কোনো পত্রিকা ছিল না। অমিত সাহস বুকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য কোনো নওজোয়ান ছিল না। এমন মরুময় পরিবেশে একজন কলম সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়লেন। ‘মাসিক মদীনা’ নামে শুরু করলেন তাঁর কর্মের গতিধারা। সে সময়গুলো ছিল—অতিশয় বেদনায় মোড়ানো। মদীনার আযান এ দেশের ইসলামি চেতনার মানুষের কানে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে শুরু হয় পত্রিকার অগ্রযাত্রা।সে থেকে অদ্যবধি অর্ধশতাব্দীর বেশি সময় ধরে প্রকাশিত হচ্ছে মাসিক মদীনা। এই পত্রিকার প্রচারসংখ্যা এক সময় দেড় লাখের মতো ছিল বলেও জানা যায়। বাংলাদেশের পাঠকদের পাশাপাশি প্রবাসে বসবাসরত বাঙালিদের কাছেও এটি বেশ সমাদৃত ছিল।

রাজপথে সংগ্রামী কার্যক্রম: মাওলানা মুহীউদ্দীন খান রহিমাহুল্লাহ লেখালেখির পাশাপাশি ময়দানেও সরব ব্যক্তিত্ব ছিলেন। দুই হাজার পাঁচ সালে ভারত সরকার একতরফাভাবে সিলেটের জকিগঞ্জ সীমান্তে থেকে প্রায় ১০০ কি. মি. দূরে সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর সম্মিলিত উজানে টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনা করে। এ বাঁধ নির্মিত হলে নদীদ্বয়ের নাব্যতা হারিয়ে যাবে, বাংলাদেশের উত্তর—পূর্বাঞ্চলের কৃষি উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্থ হবে এবং পরিবেশের উপর মারাত্মক প্রভাব পড়বে। তাই এ বাঁধ নির্মাণের প্রতিবাদে মাওলানা মুহিউদ্দীন খান ‘ভারতীয় নদী আগ্রাসনের প্রতিরোধ জাতীয় কমিটি’র ব্যানারে টিপাইমুখ অভিমুখে ঐতিহাসিক লাংমার্চের ডাক দেন। এতে দেশের প্রায় ত্রিশটি সংগঠন যোগদান করে। লাখো লাখো জনতার সামনে তিনি বিশ্ববাসী উদ্দেশ্য টিপাইমুখ বাঁধের বিরূপ প্রতিক্রিয়ার কথা ব্যক্ত করেন যার ফলে সেটি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বেশ সাড়া ফেলে দেয়।

এ ছাড়া তাঁর জীবনে ইসলামের বিরুদ্ধে কোনো গভীর ষড়যন্ত্র মাথা চড়া দিয়ে উঠলে যখন কোনো আন্দোলন হতো, তখন সেই আন্দোলনের সাথে তাঁর সমর্থন থাকত। তিনিই ছিলেন ‘মুহিউদ্দীন খান’! তিনি চলে গেছেন। না ফেরার দেশে। আর ফিরবেন না কোনদিন। জীবনের সবটাজুড়ে ছিলেন একজন দরদী মানুষ। তিনি এসেছিলেন আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে বিশেষ নেয়ামত সরূপ। এখনো আমাদের সামনে তাঁর কর্মগুলো দেখা যায়—বইয়ের প্রচ্ছদে লেখা নাম ‘মুহিউদ্দীন খান’। নামের আগে পিছে আর কিছুই লেখা নেই। খুব ছোটবেলায় তাঁকে একবার দেখেছিলাম। কিস্তিটুপি জড়ানো একজন মুরুব্বি মঞ্চে বসে আছেন। পরে জেনেছি তিনিই ছিলেন আমাদের মুহিউদ্দীন খান রহিমাহুল্লাহ। আল্লাহ তাআলা ইতিহাসের কলম মুজাহিদকে জান্নাতের সবুজ যমীনে ঠাঁই করে দিন। আমিন।

-এএ


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ