শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪ ।। ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
মসজিদে নববীর আদলে হবে আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদ: ধর্ম উপদেষ্টা খাগড়াছড়ি প্রেস ক্লাবের সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত নতুন নির্বাচন কমিশনকে বিগত কমিশন থেকে শিক্ষা নিতে হবে: মুফতী ফয়জুল করীম লালপুরে যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে জমি দখল ও বাড়ি ভাংচুরের অভিযোগ জনতার চেয়ারম্যান সৈয়দ তালহাকে সুনামগঞ্জ ৩ আসনে জমিয়তের প্রার্থী ঘোষণা কুরআন-হাদিসের ভিত্তিতেই হতে হবে সংস্কার: বায়তুল মোকাররমের খতিব ইসলামী সঙ্গীত সম্রাট আইনুদ্দীন আল আজাদ রহ.-এর বাবার ইন্তেকাল কুরআন-সুন্নাহর আইন ছাড়া দেশে শান্তি আসবে না : মাওলানা হাবিবুল্লাহ মিয়াজী শীত ও শৈত্যপ্রবাহ নিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস ফ্যাসিবাদ বারবার ফিরে আসবে, সতর্ক থাকতে হবে: গৃহায়ন ও গণপূর্ত উপদেষ্টা

বাবা: ক্ষয়হীন এক অধ্যায়

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আবু হানিফ

বাবা হারানোর শোক কত গভীরতর হতে পারে- এখন আমি হর হামেশাই টের পাই। অনুভব করি। কিন্তু কিছুই করার থাকে না।এ শোক যে লাঘব হয় না!

পৃথিবীতে সন্তানের বেঁচে থাকার জন্য আল্লাহর সবচেয়ে বড় রহম ও দয়া হলো তার বাবা।সমস্ত বহির্জগতের মুহূর্তস্থায়ী এক নিদারুণ আঘাতে ভূতলের ধূলিকণা যখন উড়ে উড়ে সপ্তমাসমানে মৃত্যুর শামিয়ানা টানায় বাবা তখনও কোন একটি অজানা স্বপ্নের বাস্তবতার বিভোর আশায়-বুদ্ধির অন্ধকার মাড়িয়ে ক্ষুদ্র গলির বাঁকাচোরা উঁচু-নিচু মেঠোপথ পেরিয়ে সরল সমতল প্রশস্ত রাজপথের ন্যায়; বটবৃক্ষের মতো ছায়া দিয়ে যায়। বাবা আদর্শ। বাবা শাশ্বত।চির অম্লান।ক্ষয়হীন।লয়হীন। বাবার তুলনা বাবা নিজেই।

বাবা, তুমি ঊষা, তুমি আলো
তুমি মায়ামন্ত্রে দূরকরা আঁধার কালো!

আজ বাবা নেই। তিনি না ফেরার দেশে চলে গেছেন। তাঁর সাথে আর দেখা হবে না। আমার ডাকে তিনি আর কখনোই সাড়া দিবেন না। ভাবতেই অবাক লাগে।আমার কাছে দুঃস্বপ্নের মতোই মনে হয়। তবুও ভাবতে হয়। তবুও বিশ্বাস করতে হয়। বিশ্বাস বুদ্ধিকেও লংঘন করে । আশা স্বপ্নকেও হার মানায়!

বাবা চলে যাওয়ার পর দেখেছি বহুত বাস্তবতা এবং নিষ্ঠুরতার দর কষাকষি। দেখেছি অনেক কলুষতা এবং ভয় দানবের সর্বগ্রাসী ভয়ংকর চেহারা। কিন্তু তখন মাথার উপর কোন ছায়া ছিল না।অকাল বৈশাখীর ঝড়েও ছিলনা কোন দুর্গম আশ্রয়। শূন্য বিয়াবানেও বন্যার ঢল উজানে টান ধরেছে। তখন শুধুই অবুঝ শিশুর ন্যায় তাকিয়েছিলাম পথের পানে- "বাবা আসবে বলে"। কিন্তু বাবা আসেনি!

যুগান্তরের সূর্য যখন উদয় গগনে উঠে
তোমার প্রেমের স্মৃতিগুলো বাবা তার পেছনেই ছোটে
ক্ষীণ আকাশে ধূসর সান্ধ্য ছেয়ে ছেয়ে যবে লুটে
দুকুল জুড়িয়া চরণ স্মরিয়া
অশ্রুর জলে স্রোত বহিয়া
বুক ভরিয়া তোলে
বিষাদেরা জেগে উঠে
ফুলবনে নেহি শ্বসি উঠে!

এই দহন জ্বালা কি কোনো দিন প্রশমিত হবে? ঘুচবে কি কোনদিন অসহায়ত্বের এই তিমির? বাবার মমতা এবং নিঃস্বার্থ ভালোবাসা কি কখনো ফিরে আসবে? আসবে কি-

শোক তরঙ্গে ছল ছল করিয়া জোয়ার বহিয়া
পাষাণ টুটিয়া জড়তা মুছিয়া
বন্যার ঢল উজানে বহিয়া
মোমের মতন গলিয়া গলিয়া
সূর্যের তাপে নিঃশেষ হবে ধীরে ধীরে?

এখন কেউ কোন অভিযোগের কথা বলে না। অভিমান করে না। কোন আনাড়ি কাজে বাধা দেয় না। অন্যায়ে শাসায় না। অপরাধে ফুঁসে না।বিজয়ে বাহবা দেয় না। ভালোতে উদ্বুদ্ধ করে না। সফলতায় খুশি প্রকাশ করে না। ব্যর্থতায় সাহস যোগায় না। কোন কাঠিন্যে বলে না- 'তুই থাম! আমি দেখছি। খোদার উপর ভরসা রাখ! সব ঠিক হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ'!

আজ বাবা নেই! রয়ে গেছে বাবার স্মৃতিগুলো। যুগের সাক্ষী হয়ে। ইতিহাসের কালি হয়ে। সত্যের বাতি হয়ে।বাবা নেই। তবে বাবার শিক্ষাগুলো এখনো রয়ে গেছে।নসীহতগুলো রয়ে গেছে। এখনো কানে বাজে সেই বজ্রধ্বনি-'নিজে ভালো হলে জগত ভালো'!

বাবা! আজ তুমি আমার পাশে নেই! তাই আর কারো কাছে বলি না আমার অসহায়ত্বের কথা। কাউকে বুঝতে দিইনা আমার আত্মার দহন পীড়ন!কেউ যে বুঝবে না আমার হৃদয়ের আকুতি।কেউ যে শুনবে না আমার আত্মার মিনতি!
আমি সেই দিনের অপেক্ষায় আছি- যেদিন তুমি আসবে! আমার সাথে কথা বলবে। আমার সব অভিযোগ শুনবে-হয়তো তখন নগরের সমুদয় প্রদীপ নিভে যাবে! গৃহদ্বার রুদ্ধ হয়ে যাবে!দৈবাৎ দু-একটা শৃগালের আনাগোনা শুরু হয়ে যাবে!

হে আরশের মালিক!
তুমি আমার বাবাকে ভালো রেখ ওপারে।
এপারে যেমন তিনি আমাকে রেখেছেন!

-এটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ