ইয়াহইয়া বিন আবুবকর: দীর্ঘ যুদ্ধের পর আফগানিস্তানের দ্বিতীয় বৃহত্তম বাঁধটি এবার তালেবান সেনাদের নিয়ন্ত্রণে। কান্দাহার প্রদেশে কয়েক মাস ধরে ভয়াবহ লড়াইয়ের পর সেখানের বেশকিছু অঞ্চলসহ দেশটির গুরুত্বপূর্ণ বৃহৎ এ বাঁধটি নিয়ন্ত্রণে নিতে সক্ষম হয় বলে স্থানীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছে।
গতকাল (৬ মে) বৃহস্পতিবার স্থানীয় কর্মকর্তারা ‘এ এফ পিকে’ জানিয়েছে, দহলা বাঁধটি এখন তালেবানের নিয়ন্ত্রণাধীন। প্রদেশটির রাজধানীতে বৃহৎ এ বাঁধ থেকে পান করার পানি সরবরাহ করা হত ও বাঁধ থেকে খাল কেটে প্রদেশের কৃষি জমিন সিঞ্চন করা হতো।
তালেবান মুখপাত্র ক্বারী ইউসুফ নিশ্চিত করে বলেন, ‘আমরা কান্দাহারের আরগান্ডাবের দহলা বাঁধটি দখল করেছি।’
পাশের অঞ্চলের গভর্নর হাজী গালব উদ্দিন বলেন, ‘দাহলা বাঁধটি তালেবানদের নিয়ন্ত্রণে।’ তিনি আরো বলেন, ‘আক্রমনের সময় আমাদের সুরক্ষা বাহিনী সাহায্য চেয়েছিলো, কিন্তু তারা যথাযথ সাহায্য না পাওয়ায় আমরা বাঁধটি হারিয়েছি। প্রদেশটির পানের পানি সরবরাহ এবং ফসলের ফলন এ বাঁধটির উপরই নির্ভর করে বলে বাঁধটির গুরুত্ব অনেক। ফলে তা দখল নিয়ে অনেক আগে থেকেই সংঘর্ষ চলে আসছিলো।
চলতি সপ্তাহে প্রতিবেশী হেলমান্দ প্রদেশে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর বেশ কয়েকটি অঞ্চল তাদের নিয়ন্ত্রণে আসার পর এই বাঁধটি তালেবান সেনাদের নিয়ন্ত্রণে আসে। কান্দাহারে প্রায় সাতটি জেলায় পান করার পানি ও জমিতে সেচের পানি সরবরাহ করতে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র প্রায় ৭০ বছর আগে দাহলা নামক বাঁধ তৈরি করেছিলো। বাঁধটি এতদিন জোটবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে ছিলো, পরে তারা সরকারী বাহিনীর কাছে সঁপে দেয়।
২০১৯ সালে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক বাঁধের সম্প্রসারণ ও উন্নয়ন প্রকল্পের অংশ হিসাবে ৩৫০ মিলিয়ন অনুদানের অনুমোদন দিয়েছে। প্রতিবেশী হেলমান্দে সরকারি বাহিনী ও তালেবানদের মাঝে সংঘর্ষ শুরু হলে কয়েক হাজার মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে অন্যত্র চলে যায়। তবে তালেবানদের আক্রমনে বেসামরিক কোনো মানুষ হতাহত হয়েছে বলে খবর পাওয়া যায়নি।
সরকারী বাহীনির সাথে প্রচণ্ড যুদ্ধ শুরু হলে মার্কিন বাহিনী আফগান বাহিনীকে তাদের প্রত্যাহার শুরু হওয়া সত্ত্বেও বিমান সহায়তা প্রদান করছে বলে জানিয়েছে আলকুদস ও আল ওয়াতন টড কম।
গত বছর তালেবানদের সাথে সংঘটিত চুক্তির আওতায় আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র ১ মে সমস্ত বাহিনী প্রত্যাহার করার কথা ছিল, তবে ওয়াশিংটন এই পদক্ষেপটি ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত স্থগিত করেছে। যা তালেবানদের ক্ষুব্ধ করেছে। চুক্তি না মানায় বিদেশী সেনাদের বিরুদ্ধে যে কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার অধিকার তাদের আছে বলে তারা হুমকি দিয়েছেন তারা। ফলে বিদেশী সেনাদের নিরাপদে প্রত্যাহারের জন্য অতিরিক্ত নিরাপত্তা দিতে বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে।
এমন এক সময় বিদেশী সেনা প্রত্যাহার শুরু হয়েছে যখন তালেবান ও গনি সরকারের মাঝে একটি শান্তি চুক্তি হওয়ার সকল প্রচেষ্টা ব্যর্থ হচ্ছে। সুত্র: আল ওয়াতন ও আলকুদস
এমডব্লিউ/