আওয়ার ইসলাম: জাতীয় নিরাপত্তার অজুহাতে মুসলিম নারীদের ধর্মীয় পোশাক বোরকা ও হিজাব স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধের প্রস্তাব অনুমোদন করেছে শ্রীলঙ্কা।
গতকাল মঙ্গলবার এমন পদক্ষেপ নেয়া হয় দেশটির মন্ত্রিসভায়।
আলজাজিরা জানায়, প্রস্তাবটি আইনে পরিণত হলে লঙ্কান মুসলিম নারীরা বোরকা ও হিজাব পড়তে পারবেন না। বিশেষ ধরনের এই ধর্মীয় পোশাক পরিধান নিষিদ্ধ হবে দেশটিতে। একে আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন হিসেবে দেখছে জাতিসংঘ।
শ্রীলংকার জননিরাপত্তামন্ত্রী শরৎ ওয়েরাসেকেরা ফেসবুক পোস্টে জানান, মন্ত্রিপরিষদের সাপ্তাহিক বৈঠকে প্রস্তাবটি উত্থাপন করেন তিনি। বৈঠকে সেটি অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
এ সময় বোরকাকে ধর্মীয় পোশাক নয়, একটি কাপড় হিসেবে দেখার কথা উল্লেখ করে ওয়েরাসেকেরা বলেন, মুসলিম নারীদের শরীর-মুখ ঢাকতে ব্যবহৃত বোরকা। জাতীয় নিরাপত্তার জন্য এটি নিষিদ্ধ করা হচ্ছে।
নিয়ম অনুযায়ী, অনুমোদিত প্রস্তাবটি পাঠানো হবে দেশটির অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ে। পরে এটি আইনে পরিণত করতে অনুমোদনের জন্য পার্লামেন্টে পাঠানো হবে।
বলা হচ্ছে, পার্লামেন্টে ক্ষমতাসীনদের একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় স্বাভাবিকভাবেই প্রস্তাবটি অনুমোদন পেয়ে যাবে। ফলে প্রকাশ্যে মুসলিম নারীদের বোরকা ও হিজাব পড়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হওয়ার বিষয়টি একবারেই নিশ্চিত।
এর আগে গত ১৩ মার্চ স্থায়ীভাবে বোরকা নিষিদ্ধের পাশাপাশি হাজারের বেশি মাদরাসা বন্ধের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছিলেন ওয়েরাসেকেরা। এ নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টির কোনো সুযোগ নেই বলেও সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন তিনি।
রয়টার্স জানায়, ২০১৯ সালে শ্রীলঙ্কায় সাময়িকভাবে বোরকা নিষিদ্ধ করা হয়। মুসলিমদের এই পোশাক এবার স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধ করা হচ্ছে। এতে সংখ্যালঘু মুসলিমদের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এ ছাড়া এক হাজারের বেশি মাদ্রাসা বন্ধে সরকারি পরিকল্পনার কথা জানিয়ে মন্ত্রী বলেছিলেন, জাতীয় শিক্ষানীতি ধ্বংসে কাজ করছে এসব মাদ্রাসা। ইচ্ছা মতো স্কুল খুলে শিক্ষার্থীদের যা খুশি তাই শেখানো যাবে না।
২০১৯ সালে গির্জা ও হোটেলে জঙ্গি হামলায় আড়াই শতাধিক মানুষ মারা যায় শ্রীলঙ্কায়। এর প্রেক্ষিতে মুসলিমদের বোরকা সাময়িক নিষিদ্ধ করা হয়। গত বছর করোনায় মারা যাওয়া মুসলিমদের লাশ আগুনে পোড়ানোর পদক্ষেপ নেয় দেশটি। এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনাও হয়।
-এটি