মুহাম্মাদ আশরাফুল আলম
আল্লাহ রাব্বুল আলামিন মানুষকে সৃষ্টি করেছেন তাঁর গোলামি করার জন্য। এজন্য বাতলে দিয়েছেন গোলামির পথ ও পন্থা, নির্দেশ দিয়েছেন বিভিন্ন আমলের। এ সকল আমলের মধ্যে অধিক পরিমাণে করতে বলেছেন তাঁর যিকির। অন্যান্য আমলের ক্ষেত্রে যেমনটি বলেননি। ইরশাদ করেছেন- (الأحزاب: ৪১) يَاأَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اذْكُرُوا اللَّهَ ذِكْرًا كَثِيرًا হে ঈমানদাররা তোমরা অধিক পরিমাণে আল্লাহর যিকির কর। -সূরা আহযাব (৩৩) : ৪১ এছাড়া অন্যান্য আয়াতেও সফলতার নিশ্চয়তা দিয়েছেন বেশি বেশি যিকিরের উপর।
(الأنفال: ৪৫) وَاذْكُرُوا اللَّهَ كَثِيرًا لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ
তোমরা অনেক বেশি যিকির কর, সফলকাম হতে পারবে। -সূরা আনফাল (৮) : ৪৫ হুবহু একই নির্দেশ ও প্রতিদানের কথা বলেছেন সূরা জুম‘আয় (৬২) আয়াত : ১০
যিকিরের বিষয়ে বিস্তারিত আর কিছু না বলে আমরা সবচেয়ে সহজ ও সবচেয়ে দামি যিকিরের কথা বলছি। এমন একটি যিকিরের কথা বলব যা সকলেরই জানা। ইচ্ছা করলেই আমল করতে পারি।
যেমনটি হাদিসের মধ্যে এসেছে। হযরত জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ রা. বর্ণনা করেন, আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, সর্বশ্রেষ্ঠ যিকির হলো (لا إله إلا الله) ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’, আর সর্বোত্তম দোয়া হলো ‘আলহামদুলিল্লাহ’। মুস্তাদরাকে হাকেম, হাদিস নং-1834
অন্য এক হাদিসে বিশুদ্ধ সূত্রে বর্ণিত। হযরত আবু সাঈদ খুদরি রা. বর্ণনা করেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
মুসা আলাইহিস সালাম একবার আল্লাহর নিকট আবেদন করলেন, হে আল্লাহ! আপনি আমাকে এমন একটি দোয়া শিক্ষা দিন যার মাধ্যমে আমি আপনার যিকির করব এবং আপনার নিকট প্রার্থনা করব। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বললেন, হে মুসা তুমি বল (لا إله إلا الله) ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’। মুসা আলাইহিস সালাম বললেন, হে আল্লাহ! আপনার সকল বান্দাই তো এই যিকির করে। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বললেন, তুমি বল (لا إله إلا الله) ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’। মুসা আলাইহিস সালাম বললেন, ‘হে আল্লাহ! আপনি ছাড়া কোন ইলাহ নেই।’ কিন্তু আমি চাইছি আমাকে বিশেষ একটি দোয়া শিক্ষা দিবেন যা কেবল আমার জন্য হবে। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বললেন, হে মুসা! আমি ছাড়া সাত আসমান, সাত যমিন ও তার মাঝে যা রয়েছে সবকিছু যদি এক পাল্লায় থাকে আর (لا إله إلا الله) ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ অপর পাল্লায় থাকে তাহলে (لا إله إلا الله) ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’র পাল্লা ভারি হবে। মুস্তাদরাকে হাকেম, হাদিস নং ১৯৩৬।
আমরা ইচ্ছা করলে সর্বদা এ আমলটি করতে পারি। চলতে ফিরতে উঠতে বসতে। কাজের ফাকে ফাকে, অযু অবস্থায় বা অযু ছাড়া। সর্বাবস্থায়ই মুখে জারি রাখতে পারি এ মহান কালিমা। হতে পারি আল্লাহর প্রিয় বান্দাদের একজন।
লেখক: মুহাদ্দিস, জামিয়া ইসলামিয়া ইবরাহিমিয়া (মেরাজনগর মাদরাসা), কদমতলি, ঢাকা
-এটি