আওয়ার ইসলাম: সম্প্রতি ইরাকে অনুষ্ঠিত ইরান-সৌদি গোপন বৈঠকের পর এ অঞ্চলে স্থিতিশীলতার আভাস পাচ্ছেন বিশ্লেষকরা। গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, বাগদাদে অনুষ্ঠিত দুই দেশের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের বৈঠকে মূলত দুই দেশের সম্পর্ক উন্নয়ন নিয়ে কথা হয়।
পাশাপাশি ইয়েমেন যুদ্ধে সৌদি মিত্রদের ভূমিকা এবং সৌদি স্থাপনায় হুতি বিদ্রোহীদের হামলার বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এছাড়া, আলোচনায় লেবাননের বিষয়টিও উঠে আসে। জানা গেছে, সৌদি আরবই ইরানের সঙ্গে সুসম্পর্ক প্রতিষ্ঠায় উদ্যোগী হয়েছে।
দোহায় সাবেক ইরানি রাষ্ট্রদূত আবদুল্লাহ সোহরাবি বলেছেন, সৌদি আরব অনেক ধরনের নিরাপত্তা এবং অর্থনৈতিক সমস্যা মোকাবিলা করছে। এ অবস্থায় দেশটি এ অঞ্চলে ইরান ছাড়া টিকতে পারবে না।
ইরানের মেহের নিউজ এজেন্সিকে সোমবার দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সোহরাবি জোর দিয়েই বলেন, ইরানকে বাদ দিয়ে এ অঞ্চলে সৌদির টিকে থাকা কোনোভাবেই সম্ভব নয়।
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ জাবেদ জারিফ যখন কাতার সফর করছেন, তখনই এ মন্তব্য করলেন সোহরাবি। এ সফর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এ অঞ্চলে এখন বিশেষ পরিস্থিতি বিরাজ করছে; এ সময়টাতে ইসলামি বিশ^, ফিলিস্তিন, আইএস-পরবর্তী পরিস্থিতিসহ বিভিন্ন অভিন্ন ইস্যুতে জ্যেষ্ঠ কূটনীতিকদের পারস্পরিক দেখা-সাক্ষাৎ ও আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে।
তিনি বলেন, সৌদিরা এ অঞ্চলে নিরাপত্তা এবং অর্থনীতির ক্ষেত্রে বেশ কিছু সমস্যার মুখোমুখি। একদিকে তারা বিশাল বাজেট ঘাটতিতে পড়েছে, অন্যদিকে ইয়েমেন যুদ্ধ নিয়ে তারা সমালোচনা এবং চাপের মুখে। আরব বিশে^ এবং এ অঞ্চলে তাদের আগের অবস্থান নেই। স্বাভাবিকভাবেই দেশটি ইরানের সঙ্গে আলোচনার চেষ্টা করছে। কারণ, ইরান ছাড়া তারা এ অঞ্চলে টিকে থাকতে পারবে না। এ সত্যটা তাদের মেনে নিতে হবে।
উল্লেখ্য, ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রোববার রাতে দোহায় কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাতে তারা দ্বিপক্ষীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা ও মতবিনিময় করেন। এর আগে কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ আব্দুর রহমান আল থানির সঙ্গেও একান্ত বৈঠক করেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
কাতারে ইরানের রাষ্ট্রদূত হামিদরেজা দেহকানি টুইটার বার্তায় এসব সাক্ষাতের খবর জানালেও আলোচনার বিষয়বস্তু সম্পর্কে কিছু বলেননি। তবে বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে, কাতারের সঙ্গে সৌদি মিত্রদের সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং সম্প্রতি ইরাকে অনুষ্ঠিত ইরান-সৌদি গোপন বৈঠকের বিষয়বস্তু এ আলোচনায় গুরুত্ব পেয়েছে।
সম্প্রতি ইরাকের প্রধানমন্ত্রী মুস্তাফা আল-কাজিমির উদ্যোগে ইরান ও সৌদি আরবের মধ্যে যে আলোচনা হয়েছে, তাতে আশাবাদী হয়ে উঠেছেন বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, এ আলোচনা সফল হলে দুই দেশের মধ্যে বৈরিতা অনেকাংশে দূর হবে এবং মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনা প্রশমন হবে। খবরে বলা হয়েছে, দুই দেশের মধ্যে এটি ছিল প্রারম্ভিক বৈঠক, এ ধারা চলমান থাকবে।
-এটি