আবুল কাশেম অফিক: মাত্র এক কিলোমিটার রাস্তায় কাদার কারণে দুই উপজেলার বালাগঞ্জ-ওসমানীনগরের হাজারো মানুষ চরম দূর্ভোগ পোহাচ্ছেন।
জানা যায়, সিলেটের বালাগঞ্জ ও ওসমানীনগর উপজেলার দেওয়ান বাজার ও উছমানপুর ইউনিয়ন পরিষদের সংযোগস্থল তালতলা বাজার থেকে খালেরমুখ বাজার থেকে মোমিনপুর গ্রামের মধ্য দিয়ে যাতায়াতের রাস্তা স্থানীয় জনগনের সীমাহীন দুর্ভোগের কারন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
স্থানীয় মোমিনপুর, মীরপুর, তালতলা, বশিরপুর, দৌলতপুর, বনগাঁও, জামালপুর, আজিজপুর ও নলজুড়সহ প্রায় ১০টি গ্রামের হাজারো সাধারণ মানুষ ওই ১ কি:মি: রাস্তা ব্যবহার করে বালাগঞ্জ, ওসমানীনগর উপজেলাসহ সিলেটে যাতায়াত রক্ষা করে থাকেন।
এলাকাবাসী জানান, অনেকগুলো গ্রামের সেতুবন্ধন তৈরী করেছে এ রাস্তাটি। প্রতিদিন বিভিন্ন প্রয়োজনে হাজারো মানুষ চলাচল করেন এই রাস্তা দিয়ে, কিন্তু প্রায় ৩০বছর যাবত রাস্তাটির নাজেহাল অবস্থার মধ্যে পরে রয়েছে। ফলে যাতায়াতের জন্য কাদাজলের সাথে যুদ্ধ করে চলাচল করেতে হচ্ছে স্থানীয় জনসাধারণকে। রাস্তার এই বেহাল দশার জন্য সামাজিক বন্ধন, শিক্ষা, চিকিৎসা, ব্যবসা-বাণিজ্যের সহ নানামুখী প্রতিবন্ধকতায় মধ্যে পড়তে হচ্ছে এলাকার মানুষ।
দুই উপজেলার মধ্য দিয়ে রাস্তাটি অতিবাহিত হলেও বালাগঞ্জ উপজেলার অংশ অনেক আগেই পাকাকরণ হয়ে গেছে। কিন্তু ওসমানীনগর উপজেলার বাকী অংশ (এক কিলোমিটার) ইটসলিং কিংবা পাকাকরণ হয়নি। এলাকাবাসীরা বার বার এ বিষয়ে স্থানীয় জন-প্রতিনিধি সহ সংশ্লিষ্টদের অবগত করেও আশ্বাস ছাড়া আর কিছুই পাননি।
এছাড়াও ওই রাস্তা দিয়ে মোমিনপুর মহিলা মাদ্রাসা, সপ্তমৌজা তালতলা আজিজপুর মাদ্রাসা, মোমিনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আজিজপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, প্রাইম একাডেমী আজিজপুর বাজার, আজিজপুর উচ্চ বিদ্যালয়, নবগ্রাম হাজী মোঃ ছাইম উচ্চ বিদ্যালয়, মাদার বাজার এফইউ সিনিয়র আলিম মাদরাসাসহ স্থানীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও কোমলমতি শিক্ষার্থীরা চরম ভোগান্তির স্বীকার হচ্ছেন।
এ বিষয়ে মোমিনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আব্দুল কাইয়ূম জানান, ঝড় কিংবা বৃষ্টি হোক আমাদের ও কোমলমতি শিক্ষার্থীদের প্রতিদিনই এ সড়ক ব্যবহার করে বিদ্যালয়ে উপস্থিত থাকতে হয়। সামান্য বৃষ্টি হলেই রাস্তাটি কর্দমাক্ত এবং বিভিন্ন জায়গায় গর্তের সৃষ্টি হয়। কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
আজিজপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সামসুল ইসলাম বলে, প্রায়ই আমাদের ক্লাস কার্যক্রমে সময়মত অংশগ্রহন করতে পারিনা। কখনও ধুলা-বালি নাকে মুখে ঢুকে ইনফ্লু রোগ সৃষ্টি হয় এবং বর্ষাকালে রাস্তাটিতে মারাত্মকভাবে কাদাজলে পিচ্ছিল হয়ে চলাফেরা করা প্রায় অসম্ভব হয়ে দাড়ায়।
এব্যাপারে ওসমানীনগর উপজেলা যুবলীগের স্বাস্থ্য ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক, পল্লী চিকিৎসক এনামুল হক জানান, প্রায় ৩০বছর থেকেই রাস্তাটির একই অবস্থা। অসুস্থ হলে গ্রামের লোকজন সেবা গ্রহন করতে এইরাস্তা দিয়ে আসা যাওয়া করতে হয়। এলাকার বেশীর ভাগ মানুষ কৃষিজীবী ও মৎসজীবী এবং প্রতিনিয়ত কৃষিপণ্য নিয়ে এই রাস্তা দিয়ে বাজারজাত করতে হয়। ফলে প্রতিনিয়ত ব্যবসায়ীদের অনেক দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
সড়ক না হওয়ার সম্ভাবনা উল্লেখ করে উছমানপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মোঃ ময়নুল আজাদ ফারুক জানান, আমি আমার জায়গা থেকে অনেকবার উর্ধ্বতন কর্মকর্তার সাথে কথা বলেছি এখন পর্যন্ত কোন কাজ হয়নি। আদৌ এই সমস্যার সমাধান হবে কি-না আমার জানা নেই।
এব্যাপারে ওসমানীনগর উপজেলা প্রকৌশলী মো. নাজমুল করিম বলেন, আমি উপজেলায় নতুন যোগদান করেছি, এই রাস্তাটি অতিসত্বর পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
তবে এ বিষয়ে ওসমানীনগর উপজেলা চেয়ারম্যান ময়নুল হক চৌধুরী বলেন, আমি সড়কটি দেখেছি। এলাকাবাসী যদি রাস্তার আইডি নিয়ে আমার সাথে যোগাযোগ করেন আমি ইনশাআল্লাহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
রাস্তাটি শীঘ্রই পরিদর্শন করবেন জানিয়ে সিলেট ২ আসনের সাংসদ সদস্য মোকাব্বির খান বলেন, এলাকাবাসী সড়কের বিষয়টি নিয়ে আমার সাথে কথা বলেছেন, অবশ্যই বিষয়টি আমি গুরুত্ব সহকারে দেখছি। আমি অতিদ্রুত একজন প্রকৌশলী নিয়ে সড়কটি পরিদর্শন করে আসব। রাস্তাটির সমস্যা সমাধান হবে বলে আমি আশাবাদী।
-এএ