আওয়ার ইসলাম: তিনি কোনো দলের এজেন্ট বা প্রোডাক্ট নন বলে জানিয়েছেন জনপ্রিয় ইসলামী বক্তা মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারী। ধর্ম প্রতিমন্ত্রী কর্তৃক ‘জামায়াত ট্যাগ’ দেওয়া প্রসঙ্গে গতকাল বুধবার রাতে নিজের ফেসবুক পেজে দেওয়া পোস্টে তিনি একথা জানান।
আজহারী বলেন, ‘আমি কোনো দলের এজেন্ট বা প্রোডাক্ট নই। ভিন্নমতকে দমনের এই অপকৌশল পুরো জাতির ভাগ্যে ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।’
গত মঙ্গলবার জামালপুরে মসজিদ নির্মাণ পরিদর্শনকালে আজহারীকে ‘জামায়াতের প্রোডাক্ট’ মন্তব্য করেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মো. আবদুল্লাহ। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, বিভিন্ন ওয়াজ-মাহফিলে আজহারীসহ কিছু ধর্মীয় বক্তা অত্যন্ত সূক্ষ্মভাবে জামায়াতের প্রচারণা চালাচ্ছেন।
এই প্রসঙ্গে দেওয়া আজহারীর ফেসবুক পোস্টটি পাঠকের জন্য হুবহু তুলে দেওয়া হলো-
‘আমি কোনো দলের এজেন্ট বা প্রোডাক্ট নই। আর কোন রাজনৈতিক দলের অর্থায়নে আমার শিক্ষাজীবনও কাটেনি। মিথ্যাচার যেন এদেশে মহামারিতে রুপ নিয়েছে। আর সেটা যখন প্রকাশ্যে, গণমাধ্যমে, দেশের কোন উচ্চপদস্থ দায়িত্বশীলের মুখ থেকে প্রকাশ পায়, তখন আফসোস আর হেদায়েতের দোয়া ছাড়া আর কিছুই করার থাকে না।
নিজের চিন্তা আর মতের বিরুদ্ধে গেলেই এদেশে একটা স্বস্তা ট্যাগ লাগিয়ে দেওয়া হয়। আর সেটা হলো “জামাত শিবির”। এবার আপনি মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হোন অথবা মনেপ্রাণে একজন প্রকৃত দেশপ্রেমিক হোন। দ্যাট ডাজেন্ট মেটার। ভিন্নমতকে দমনের এই অপকৌশল পুরো জাতির ভাগ্যে ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।
একজন দা’ঈ ইলাল্লাহর কোনো দল নাই। তিনি সকল দলের, সকল মানুষের। তাদেরকে দলীয়করণ না করে ব্যাপকভাবে দ্বীনের খেদমতের সুযোগ করে দেওয়া উচিত। দেশের সব দলের মানুষ যেন তাদের দ্বারা আলোকিত হতে পারে সেটার পরিবেশ থাকা উচিত।
আমি সরকার বিরোধী নই। আমি অন্যায় বিরোধী। তাই কোনো অন্যায় দেখলে সে ব্যাপারে কথা বলা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। এবার সে অন্যায় যেই করুক না কেন, যে দলই হোক না কেন।
ব্যক্তিগতভাবে এদেশের রাজনীতিতে আমার কোনো ইন্টারেস্ট নেই। স্যোশাল অ্যাক্টিভিটি ও দা’ওয়াহ অ্যাক্টিভিটি এ দুটি কাজই হলো আমার আগ্রহের মূল কেন্দ্রবিন্দু।
আমার মিশন হলো এদেশে ইসলামের মধ্যমপন্থার সৌন্দর্য্যকে প্রমোট করা। যেটাকে আরবীতে বলে আল-ওয়াসাতিয়্যাহ। জীবনযাপনে ভারসাম্য, চিন্তায় ভারসাম্য, কাজে ভারসাম্য এবং আচরণে ভারসাম্যপূর্ণ মুসলিম তৈরি করা।
ভিন্ন মতের ব্যাপারে আমি বরাবরের মতোই শ্রদ্ধাশীল। সকল মুসলমানকে আপন ভাইয়ের মতো শ্রদ্ধা করি ও ভালোবাসি। তাদের নাজাতের জন্যে মন ভরে দোয়া করি। কারও পিছু লেগে থাকা, কাদা ছোড়াছোড়ি করা এবং কোন মুসলিম ভাইয়ের ব্যাপারে অন্তরে হিংসা পুষে রাখা পছন্দ করি না। কারণ ইসলাম আমাকে এটা শিখায়নি। আর প্রিয় নবীর আদর্শও এমনটি নয়।
আমি চাই বিভিন্ন ঘরনার আলেমরা সহনশীলতার ও পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধের চর্চা করুক। তাদের উদারতার প্রভাব পরুক দেশের সকল শ্রেণির মানুষের মাঝে। সংকীর্ণতা আর হীনমন্যতা পরিহার করে দ্বীনের সকল দ্বায়ীরা কুরআন সুন্নাহর সুধা বিলাতে থাকুক পুরো দেশ জুড়ে, পুরো পৃথিবী জুড়ে।’
আরএম/