আওয়ার ইসলাম: তুরস্কের পূর্বাঞ্চলসহ প্রতিবেশী দেশ সিরিয়া, লেবানন ও ইরানে একযোগে আঘাত হানা ৬ দশমিক ৮ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পে ৩১ জনের বেশি তুর্কি নিহত এবং আহত হয়েছেন আরো এক হাজার মানুষ।
গণমাধ্যমের খবরে জানা যায়, স্থানীয় সময় শক্রবার রাত ৮টা ৫৫ মিনিটের ওই ভূমিকম্পে নিহত এক তুর্কির লাশ অন্যদের সঙ্গে নিজ কাঁধে বহন করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট রজব তায়্যিব এরদোগান।
তুর্ক প্রেসের বরাতে আরো জানা যায়, ভূমিকম্পে নিহতদের লাশ দাফনে অংশ নিয়েছেন প্রেসিডেন্ট এরদোগান। এমনকি কয়েকজনের সঙ্গে লাশের বাক্সও কাঁধে নেন তিনি। মানবিক এরদোয়ানের এমন একাধিক ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ দেশটির গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।
সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ভূমিকম্পের পরপরই এরদোয়ানের নির্দেশে চার শতাধিক উদ্ধারকর্মী ভূমিকম্পে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এলাজিগ প্রদেশের সিভরাইস শহরে উদ্ধার কাজ শুরু করে। সেখান থেকে এ পর্যন্ত ৩১ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ভূমিকম্পে ওই প্রদেশে এক হাজারেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন, তাদের মধ্যে অনেককে স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
এ ঘটনায় হতাহতদের প্রতি শোক ও সমবেদনা জানানোর পাশাপাশি সিভরাইসে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্তদের খোঁজখবর নেন প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান। পরে মৃতদের জানাজা ও দাফন-কাফনে অংশ নেন এবং নিজের কাঁধে বহন করে একজনের লাশ কবরস্থান পর্যন্ত নিয়ে যান তিনি।
তুর্কি গণমাধ্যমে এরদোগানের এ দৃষ্টান্তের ভূয়সী প্রসংশা করে বলা হয, পবিত্র কুরআনের হাফেজ এ রাষ্ট্রনায়ক প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরেও তার মানবিকতা এতটুকু হ্রাস পায়নি, বরং বেড়েছেই বলা চলে। বিভিন্ন সময় ধর্মীয় অনুষ্ঠানে ব্যাপকভাবে অংশ নেয়া ছাড়াও ফাতেহা পাঠ, কুরআন তেলাওয়াত, কবর জেয়ারত এবং নাতিকে কুরআনের পাঠদান করেছেন। তার ধর্মীয় এসব কাজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়ে আসছে।
তুরস্কের দুর্যোগ ও জরুরি ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ (এএফএডি) জানিয়েছে, ভৌগোলিক কারণে এ দেশে প্রায়ই ভূমিকম্প আঘাত হানে। শুক্রবারের ভূমিকম্পের পরপরই অন্তত ৬০ বার পরাঘাত (আফটারশক) অনুভূত হয়। এতে স্থানীয় বাসিন্দারা আতঙ্কে বাড়িঘর ছেড়ে রাস্তায় নেমে আসেন। এর আগে দেশটিতে ১৯৯৯ সালে সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছিল, তাতে পশ্চিমাঞ্চলীয় ইজমিত শহরে প্রায় ১৭ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়।
-এটি