আওয়ার ইসলাম: টঙ্গীর তুরাগ তীরে শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) থেকে শুরু হচ্ছে তাবলিগ জামাতের বিশ্ব ইজতেমা। ইতিমধ্যে ময়দানের ৯০ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা। (১২ জানুয়ারি) রবিবার মোনাজাতের মাধ্যমে আলমী শূরার তাবলিগ জামাতের সাথীদের ইজতেমা শেষ হবে।
স্বেচ্ছাশ্রমের মহাযজ্ঞ চলছে তুরাগ তীরে। আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায় সারাদেশ থেকে আসা মাদরাসা ও স্কুল-কলেজের ছাত্র-শিক্ষকহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে ময়দানে প্যান্ডেল তৈরির কাজ করছেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ইজতেমা ময়দানের বিশাল সামিয়ানা টাঙ্গানো, রাস্তাঘাট মেরামত ও পয়ঃনিষ্কাশনের কাজ চলছে জোরেশোরে। এরই মধ্যে মাঠের ৯০ ভাগ প্রস্তুতিমূলক কাজ সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা। ১৬০ একর জমির ওপর প্রায় দুই বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে বিশাল চটের প্যান্ডেলের সামিয়ানার নিচে এই ইজতেমা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
এছাড়া রাস্তা মেরামত, মাইক টানানো, টয়লেট পরিষ্কার-পরিচ্ছন, ময়দানের আগাছা পরিষ্কারের কাজ করছেন আগত মুসল্লিরা। বিদেশি মেহমানদের থাকার জায়গা, বয়ানের মঞ্চ, তাশকিল কামরা এরই মধ্যে নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে।
এদিকে মাঠের পূর্ব ও পশ্চিম পাশে নতুন ১৪ টি খিত্তা যুক্ত করার মাধ্যমে এবারই প্রথম বাড়ানো হয়েছে ইজতেমা ময়দানের পরিধি। শব্দ যন্ত্র, আলোর ব্যবস্থাসহ বাকী রয়েছে বৈদ্যুতিক সংযোগের কাজ।
সেনাবাহিনীর সহায়তায় তুরাগ নদীতে তৈরি করা হচ্ছে ৬ টি ভাসমান সেতু। এখনো চলছে ইজতেমার মূল মঞ্চ নির্মাণের কাজ। সিসি ক্যামেরা ছাড়াও পুরো ময়দানকে ঘিরে ফেলা হবে নিরাপত্তার চাদরে। খিত্তায় খিত্তায় থাকবে সাদা পোশাকে পুলিশ।
প্রতি বছরের মতো এবারও বাড়তি পুলিশ, র্যাব, বিজিবি ও সাদা পোশাকের গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন মাঠের ভেতর ও বাইরে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবেন। ইজতেমা ময়দানে পাঁচ স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছে পুলিশ প্রশাসন। এবার ইজতেমায় দায়িত্ব পালন করবেন সাড়ে আট হাজার পুলিশ সদস্য।
সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে, তাদের ব্যবস্থাপনায় আটটি কন্ট্রোল রুম স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে ১৫টি তোরণ নির্মাণ করা হয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে ১৪টি এবং র্যাবের পক্ষ থেকে ১০টি ওয়াচ টাওয়ার নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়া মাঠে ব্লিচিং পাউডার ও মশক নিধনের পর্যাপ্ত ওষুধ ছিটানোর কাজ শুরু করা হয়েছে। এছাড়া ৭৫০টি বৈদ্যুতিক বাতি স্থাপন ও ধুলোবালি যাতে না ওঠে সেজন্য পানি ছিটানোর ব্যবস্থা থাকছে।
গাজীপুর মেট্টোপলিটন পুলিশ কমিশনার আনোয়ার হোসেনগণমাধ্যমকে বলেন, ‘আগত লাখ লাখ মুসল্লির নিরাপত্তায় এখানে পাঁচ স্তরের নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হবে। সিসিটিভি, আর্চওয়ে, মেটাল ডিটেক্টর থাকছে পুরো ময়দানজুড়ে। খিত্তায় খিত্তায় নিরাপত্তা চাদরে ঢেকে ফেলা হবে। সার্বিক নিরাপত্তায় এবার ইজতেমায় সাড়ে আট হাজার পুলিশ সদস্য কাজ করবে।’
ইজতেমা ময়দানের শীর্ষ মুরুব্বি ও শূরা সদস্যরা জানান, ময়দানের প্রস্তুতিকাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। শুক্রবারের আগেই কাজ সম্পন্ন হবে।
উল্লেখ্য, গত বছর ইজতেমাকে ঘিরে বিদ্যমান দুটি গ্রুপের মধ্যে বিরোধ দেখা দিলে দুই পর্বে ইজতেমা আয়োজন হয়। এবার আলমী শূরার সাথীদের ইজতেমা ১০, ১১ ও ১২ জানুয়ারি এবং ১৭, ১৮ ও ১৯ জানুয়ারি মাওলানা সা’দ কান্দলভীর অনুসারীরা ইজতেমা পরিচালনা করবেন।
আরএম/