আওয়ার ইসলাম: ভারতের জনসংখ্যা রেজিস্ট্রার তালিকা বা এনপিআর এ হিন্দু, খ্রিস্টানসহ বিভিন্ন ধর্মের উৎসবের তালিকায় দুর্গাপুজো থেকে শুরু করে বড়দিন, বুদ্ধ পূর্ণিমা, নানক জয়ন্তী, সরস্বতী জয়ন্তী থেকে ছটপূজা আছে। এছাড়া আছে গান্ধী জয়ন্তী, স্বাধীনতা দিবস বা ইংরেজি নববর্ষের উল্লেখও। কেবল নেই মুসলিমদের কোনো ধর্মীয় উৎসবের উল্লেখ।
জাতীয় জনসংখ্যা রেজিস্ট্রার বা এনপিআর-এর সদ্য প্রকাশিত ম্যানুয়ালে এই বিস্ময়কর ধর্মীয় বৈষম্যের বিষয়টি নজরে আসতেই শুরু হয়েছে ভারতে সমালোচনা।
অথচ ভারতে ধর্মীয় জনসংখ্যার ভিত্তিতে হিন্দুদের পরই মুসলমানদের অবস্থান। ৩৭ পাতার এনপিআর ম্যানুয়ালের ৩২ নম্বর পাতায় অ্যানেক্সার ৫-এ ভারতে গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় উৎসবের একটি তালিকা দেওয়া হয়েছে। সেখানে হিন্দু ছাড়াও বৌদ্ধ-খ্রিস্টান-শিখ ইত্যাদি বিভিন্ন ধর্মের উৎসবের সময়কাল উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু জনসংখ্যায় দ্বিতীয় স্থানে থাকা মুসলিমদের কোনো উৎসব বা স্মরণীয় দিন উল্লেখ নেই।
কলকাতা হাইকোর্টের সাবেক বিচারপতি সমরেশ ব্যানার্জি এ ব্যাপারে বলেন, এর মধ্যে ধর্মীয় বিভাজন বা বৈষম্য দেখতে পাচ্ছি।
২০২০ সালের এপ্রিল থেকে সারা ভারতে এনপিআর-এর জন্য তথ্য সংগ্রহের কাজ শুরু করতে চায় মোদি সরকার। সেই তথ্য সংগ্রহের সময় জন্ম তারিখ এবং স্থানের কথা জানাতে হবে সে দেশের বাসিন্দাদের। এবার ওই তালিকার ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে— অনেকেই নিজের জন্মের দিনক্ষণ সঠিক মতো বলতে পারেন না। সেজন্য বড় কোনো ঐতিহাসিক ঘটনা অথবা বিভিন্ন সম্প্রদায়ের উৎসব বা ধর্মীয় রীতির কথা মনে করিয়ে সম্ভাব্য জন্মতথ্য নথিবদ্ধ করার কথা বলা আছে ওই ম্যানুয়ালে।
এর আগে ২০১০ সালে প্রথম এনপিআর-এর মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ প্রক্রিয়া শুরু হয়। তখন কেন্দ্রে ক্ষমতায় ছিল কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউএপিএ সরকার। ওই সময় যে ম্যানুয়াল বানানো হয়েছিল, সেখানে মুসলমানদের কোনো উৎসব-রীতির উল্লেখ করা ছিল না।
২০১৪ সালে বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর, সেই কাজ শেষ করার উদ্যোগ নেয়। সেটা ২০১৫ সালোর কথা। পশ্চিমবঙ্গসহ বেশ কয়েকটি রাজ্যে এনপিআর-এর কাজ হয়েছে। আরেকবার ২০২০ সালের এপ্রিল মাসে শুরু হতে চলেছে এনপিআর কর্মসূচি।
আরএম/